নিউজ ডেক্স : রাশিয়ার কাছ থেকে তেল ও গম কিনতে ভারতের কাছে বাংলাদেশ ‘বুদ্ধি’ চেয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। সোমবার (৩০ মে) দুপুরে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ভারতের আসাম রাজ্যের রাজধানী গুয়াহাটিতে নদীবিষয়ক এক সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পর দেশে ফিরেছেন ড. মোমেন। সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে তাঁর আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ইউক্রেন-রাশিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়া আমাদের কাছে তেল বিক্রি করার প্রস্তাব দিয়েছে। তারা আমাদের কাছে গমও বিক্রি করতে চায়। কিন্তু আমরা তো ওই নিষেধাজ্ঞার ভয়ে (রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা)… ভারতের কাছে জানতে চেয়েছি তোমরা কীভাবে করেছ। তোমরা তো নিচ্ছ। সেটা তারা বলেছে। জ্বালানির ক্ষেত্রে যে সমস্যা, সেটা তো আমাদের জন্য সত্যিকারের একটি সমস্যা। এ নিয়ে আমরা ভয়ে আছি। তাই আমরা তাদের কাছে বুদ্ধি চাই। বিশেষ করে তারা সেটা (রাশিয়ার কাছ থেকে তেল ও গম কেনা) কীভাবে করছে। ’
ড. মোমেন আরও বলেন, ‘এ নিয়ে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। তারা কীভাবে পরিস্থিতি (রাশিয়ার কাছ থেকে তেল ও গম কেনা) সামাল দিয়েছে। তারা বড় দেশ, তারা ম্যানেজ করতে পারে। তারা কোনো পদক্ষেপ নিলে কেউ তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় না। আমরা তো দরিদ্র, ছোটখাটো দেশ, আমাদের ওপর মাতব্বরি একটু বেশি।’
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, ‘এই অঞ্চলে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে আঞ্চলিক সংহতির জন্য শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম গড়ার জন্য ভারতের কাছে প্রস্তাব দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আসামের লোক যেন বাংলাদেশে আসার জন্য সেখানের বাংলাদেশ মিশন থেকে ভিসা পায়, সেজন্য প্রস্তাব রেখেছি। তারা সেই প্রস্তাবে রাজি হয়েছে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেছেন—রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে থাকলেই ভালো। এটা আমরা পছন্দ করিনি। আমরা তাঁকে বলেছি—বাংলাদেশের চেয়ে রাখাইনে ভালো পরিবেশ তৈরি করুন। তাহলেই ভালো হবে। আমরা ভারতকে বলেছি, রোহিঙ্গাদের পছন্দ না হলে, বাংলাদেশে কেন, মিয়ানমারে পাঠান। আমাদের এখানে কেন পাঠাচ্ছেন। ’
শিলংভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও থিঙ্কট্যাঙ্ক এশিয়ান কনফ্লুয়েন্স ২৮-২৯ মে নদীবিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে যোগ দেন বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ ছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সঙ্গেও বৈঠক করেন। আসাম থেকে ২৯ মে ঢাকায় ফেরেন ড. মোমেন।