Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | ‘মুসলমানদের রক্তে রণক্ষেত্র হয় মুসলিম দেশ, লাভবান কারা?’

‘মুসলমানদের রক্তে রণক্ষেত্র হয় মুসলিম দেশ, লাভবান কারা?’

pm-in-ifb_39038_1486645805

নিউজ ডেক্স : মুসলিম দেশের সংঘাতে রক্ত যায় মুসলমানদের, রণক্ষেত্র হয় মুসলিমদেশ আর এতে কারা লাভবান হয়, ভেবে দেখার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় ইমাম সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি। খবর বাসস।

জাতীয় ইমাম সম্মেলন ও শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের সনদ ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন।

সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ উচ্ছেদ করে দেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওলামা-মাশায়েখসহ ইসলামী চিন্তাবিদদের সরকারের জঙ্গিবাদ বিরোধী কর্মকান্ড জোরদারে সহযোগিতার আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আজকের দিনে বড়ো একটি সমস্যা মাদকাশক্তি এবং অপরটি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ। এদের হাত থেকে আমাদের শিশুদের, যুব সমাজ তথা দেশবাসীকে রক্ষা করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুসলিম অধ্যুষিত যেই দেশগুলি -সেখানেই মারামারি, সেখানেই কাটাকাটি, সেখানেই আজকে খুন-খারাপি হচ্ছে। সেখানেই অস্ত্রের ব্যবহার হচ্ছে। কিন্তু এই অস্ত্রটা তৈরি করে কারা। আর লাভবান কারা হয়। রণক্ষেত্র বানাচ্ছে আমাদের মুসলমানদের জায়গাগুলো, রক্ত যাচ্ছে মুসলমানদের। আর এই অস্ত্র তৈরি করে, অস্ত্র বিক্রী করে কারা লাভবান হচ্ছে। সেটাই আপনারা একটু চিন্তা করে দেখবেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি সব সময় এর বিরুদ্ধে কথা বলি, প্রতিবাদ করি, কিন্তু দুর্ভাগ্য যে- আমাদেরই কিছু লোক ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করেও এসব জঙ্গিবাদি-সন্ত্রাসবাদি কর্মকান্ড করে বলেই আমাদের পবিত্র ধর্মটা আজকে মানুষের কাছে হেয় হচ্ছে।

ওলামা সমাজের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের কথা মানুষ শুনবে, আপনাদের কথা মানুষ নেবে। আমি আহবান করেছিলাম- জনগণ এ ব্যাপারে সাড়া দিয়েছেন এবং বেশকিছু কাজও করেছেন। আমি চাই এটা আরো ব্যাপকভাবে প্রচার করা। আমরা চাই আপনারা যদি মানুষকে ভালভাবে বোঝান তাহলেই আমরা এই দেশ থেকে এই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ চিরতরে দূর করতে পারব এবং সে বিশ্বাস আমার আছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের আইন-শৃংখলা রক্ষকারী বাহিনী কাজ করছেন। গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছেন। কিন্তু, সব থেকে বড়ো শক্তি মানুষের শক্তি। মানুষের ভেতর যদি সচেতনতা থাকে। মানুষ যদি এটার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় তাহলে এই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দেশ থেকে চিরতরে দূর হবে।’

শেখ হাসিনা জঙ্গিবাদকে বৈশ্বিক সমস্যা আখ্যায়িত করে বলেন, ‘আমরা সমগ্র বিশ্বকে দেখাতে চাই বাংলাদেশই পারবে শান্তি প্রতিষ্ঠা করে সত্যিকার ইসলাম ধর্মের মূল মর্মবাণী মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে। মানুষ যেন সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারে তা নিশ্চিত করতে। আর সেটা বাংলাদেশই করতে পারবে।’

আলেম ওলামাদের তত্ত্বাবধানে এশটি অর্থনৈতিক জোন করার চিন্তা-ভাবনা সরকারের রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে যাতে আয় বাড়ানো যায় এজন্য শুধুমাত্র আলেম-ওলামাগণের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে এমন একটি অর্থনৈতিক জোন তৈরি করার চিন্তা-ভাবনা চলছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে দুস্থ এবং আর্থিক দুর্দশাগ্রস্ত ইমাম-মুয়াজ্জিনদের আর্থিক সুবিধা প্রদান করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ট্রাস্টের সদস্যভুক্ত ইমামদের সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করা হচ্ছে।

হালাল খাদ্য ও পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধানের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন অনুমোদনপ্রাপ্ত একজন করে আলেম নিয়োগদানের বিষয়টি বিবেচনায় আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতে আলেম ওলামাদের কর্মক্ষেত্র সম্প্রসারিত হবে। বিদেশে বাংলাদেশের হালাল দ্রব্যের চাহিদা এবং গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে।

ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তৃতা দেন- পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. বজলুল হক হারুন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল জলিল, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক শামিম মো. আফজাল এবং ইমাম ও ওলামায়ে কেরামগণের পক্ষে মাওলানা ওবায়দুল্লাহ এরশাদ।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ২০১৫-১৬ এই দুই বছরের ৬ জন শ্রেষ্ঠ ইমাম এবং ২০১৪-১৫ সালের ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত দেশব্যাপী শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার ও সনদপত্র বিতরণ করেন।

সূত্র- যুগান্তর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!