নিউজ ডেক্স : সিকিউরিটি চেকিংয়ে বেল্ট খোলার নিয়ম মনে করিয়ে দিতেই জামা-প্যান্ট খুলে ফেলেছেন ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের একজন সিনিয়র কেবিন ক্রু! বুধবার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে প্রি-বোর্ডিং চেকিং গেটে এমন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শীরা হতবাক হয়ে যান। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, ঘটনাটি নিছক ভুল বোঝাবুঝি।
জানা গেছে, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের সিনিয়র কেবিন ক্রু মো. শাহফিকুর রহমানকে বেল্ট খুলতে বলা হয়। তখন উত্তেজিত হয়ে তিনি জামা-প্যান্ট খুলে ফেলেন। এ সময় নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন তিনি। পরে তাকে বিমানবন্দরের এভিয়েশন সিকিউরিটির সদস্যদের হেফাজতে নেওয়া হয়। শেষমেষ মুচলেকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নেয় ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বুধবার নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কেবিন ক্রুদের প্রশিক্ষণের জন্য বিমানবন্দরে নিয়ে আসে ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ। ১৯ জন কেবিন ক্রু (অভজার্ভার) প্রথমে যথাযথ নিরাপত্তা তল্লাশি ছাড়াই প্রি-বোর্ডিং চেকিং গেট অতিক্রম করেন। নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের ডেকে পুনরায় তল্লাশির মাধ্যমে ভেতরে প্রবেশের অনুরোধ জানান। তবে কেবিন ক্রু (অভজার্ভার) সদস্যরা বিমানবন্দরে প্রবেশের কোনও অনুমোদিত কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। পরবর্তী সময়ে নিরাপত্তাকর্মীরা বিমানবন্দরের পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তা অবহিত করেন। একইসঙ্গে তাদের ওই স্থান থেকে সরিয়ে দেন।
বুধবার সকাল ১১টার দিকে বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে প্রি-বোর্ডিং চেকিং গেটে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের সিনিয়র কেবিন ক্রু মো. শাহফিকুর রহমানকে (আইডি-১৭০০) আর্চওয়ের মাধ্যমে প্রবেশের অনুরোধ জানান দায়িত্বরত আনসার সদস্য। নিয়মমাফিক মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ, কোট, ঘড়ি, জুতা খুলে এক্স-রে মেশিনে স্ক্রিনিংয়ের জন্য ট্রেতে রাখেন তিনি। তাকে কোমরের বেল্ট খুলে ট্রেতে রাখতে বলা হয়। তখনই উত্তেজিত হয়ে শাহফিকুর রহমান জামা ও প্যান্ট খুলে ফেলেন! এতে হতবাক হয়ে যান নিরাপত্তাকর্মী ও যাত্রীরা। পরবর্তী সময়ে তাকে এভিয়েশন সিকিউরিটির (এভসেক) সদস্যরা ভেতরে প্রবেশ করতে না দিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে নেন। মো. শাহফিকুর রহমান এভসেক সদস্যদের সঙ্গে অসদাচরণ করতে থাকেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের সিনিয়র কেবিন ক্রু মো. শাহফিকুর রহমানকে এভসেক কন্ট্রোল রুমে আনা হয়।
এ প্রসঙ্গে শাহজালাল বিমানবন্দরের এভিয়েশন সিকিউরিটির একজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, কোনও অনুমতি ছাড়াই শিক্ষানবীশ ক্রুদের তল্লাশি ছাড়াই বিমানবন্দরে প্রবেশ করিয়েছে ইউএস-বাংলা। তাদের মধ্যে একজন তল্লাশির সময় অসদাচারণ করেছে। ইউএস-বাংলার ফ্লাইট অপারেশনের পরিচালক মুচলেকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেছেন। তিনি আশ্বস্ত করেছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ওই কেবিন ক্রু’র প্যান্টের ভেতর আরেকটি থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট ছিল। আর্চওয়েতে বেল্ট খোলার পরও ধাতব বস্তু থাকার শব্দ হচ্ছিল। তখন আনসার সদস্যদের তিনি জানান, থ্রি কোয়ার্টার প্যান্টের বাটনের কারণে শব্দ হতে পারে। তখন আনসার সদস্যরা তাকে প্যান্ট খুলে থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট দেখাতে বলেন। এ কারণেই তিনি প্যান্ট খুলে দেখিয়েছেন।