নিউজ ডেক্স : চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ১৩৯ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে হচ্ছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। ইতোমধ্যে সমীক্ষাও শুরু হয়েছে। পিপিপির (পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ) মাধ্যমে প্রস্তাবিত প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করবে জাইকা।
এর আগে মহাসড়কটি চার লেন করার একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছিল। তবে বর্তমানে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ওই প্রকল্প আর বাস্তবায়নের সম্ভাবনা দেখছেন না সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কটি অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক। পর্যটন নগরী কক্সবাজার ছাড়াও পার্বত্য জেলা বান্দরবানসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৮ উপজেলার বাসিন্দারা সড়কটি ব্যবহার করে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে। ১৯৯৫ সালের আগে মহাসড়কটির উন্নয়ন করা হয়। এরপর থেকে মাঝেমধ্যে মেরামত করা হলেও দীর্ঘ সময়ে সড়কটি সম্প্রসারণ করা হয়নি। বর্তমানে কক্সবাজারের মহেশখালীতে এলএনজি টার্মিনাল, মহেশখালী পাওয়ার হাব, মাতারবাড়ি পাওয়ার হাব, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরসহ বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। অন্যদিকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থানের কারণে কক্সবাজারের সাথে বিদেশি কূটনীতিক, দাতা সংস্থা ও পর্যটকদের যাতায়াত বেড়েছে কয়েক গুণ। সব মিলিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার বাস, ট্রাক, ট্রলি ব্যবহার হচ্ছে মহাসড়কটি। যে কারণে মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে যানজট লেগে থাকে।
২০১৮ সালের মাঝামাঝি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কয়েক মাস আগে ১৩৯ কিলোমিটার চার লেন সড়ক করার জন্য ১২ হাজার ৮শ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়। তবে বর্তমানে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় চার লেনের প্রকল্পটি আর বাস্তবায়নের সম্ভাবনা দেখছেন না সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা।
তবে, তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু (শাহ আমানত সেতু) প্রকল্পের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে বহদ্দারহাট থেকে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার ৬ লেন করার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে এবং শাহ আমানত সেতুর মইজ্যারটেক থেকে শিকলবাহা ক্রসিং পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়ক চার লেনের কাজ শেষ হয়েছে।
এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের বিষয়ে দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ গতকাল বলেন, এর আগে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ককে চার লেন করার জন্য দোহাজারী সড়ক বিভাগ থেকে ১২ হাজার ৮শ কোটি টাকার একটি ডিপিপি মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এর মধ্যে সরকার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এক্সপ্রেসওয়ে করার জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে চার লেন প্রকল্পটি আর বাস্তবায়নের সম্ভাবনা নেই।
তিনি বলেন, বুয়েট বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সামশুল হককে প্রকল্পটির কনসালটেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাঁর নেতৃত্বে বুয়েটের একদল প্রকৌশলী প্রকল্পের সমীক্ষা শুরু করেছেন। তারা ইতোমধ্যে কয়েকবার প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনও করেছেন।
প্রকৌশলী সুমন সিংহ বলেন, প্রকল্পটি হবে জিটুজি (সরকার টু সরকার) পর্যায়ের অর্থায়নে। প্রাথমিকভাবে জাপানি সাহায্য সংস্থা জাইকার ঋণ সহায়তায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। এটি হবে টোল রোড। ১৩৯ কিলোমিটার এই এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচটি স্থানে আলাদা প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নয়ন করা হবে। বিশেষ করে পটিয়া বাইপাস, দোহাজারী, কেরানিহাট, লোহাগাড়া ও চকরিয়া অংশে উন্নয়ন করা হবে। এখানেও জাইকা অর্থায়ন করবে।
প্রস্তাবিত এক্সপ্রেসওয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি উড়াল সেতু হবে নাকি মূল সড়কের পাশেই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হবে তার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সমীক্ষা প্রতিবেদনের পর। এরপর এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের ডিজাইন প্রণয়ন করা হবে।
সূত্র : দৈনিক আজাদী