নিউজ ডেক্স : সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর ও অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছর করার সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদয় স্থায়ী কমিটি। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও বলেছে কমিটি।
বুধবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বৈঠকে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে শিক্ষক নিয়োগ পদ্ধতি বাতিল করে আগের মতো স্থানীয়ভাবে ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
দীর্ঘদিন ধরে সরকারি চাকরিতে প্রবেশে বয়সসীমা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছে চাকরীপ্রত্যাশী লাখো শিক্ষার্থী। এই দাবিতে দেশব্যাপী নানা কর্মসূচিও পালন করে আসছে তারা
যদিও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে সরকারের কোনও উদ্যোগ নেই। প্রধানমন্ত্রীও এর আগে সংসদের প্রশ্নোত্তরে চাকরির বয়সসীমা বাড়ানোর দাবি নাকচ করে দিয়েছেন।
জানা গেছে, সরকারি চাকরিতে প্রবেশ ও অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে বেশকিছু যুক্তিকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলো তাদের জনগণকে মানবসম্পদে রূপান্তরের ক্ষেত্রে বয়সের কোনো সীমারেখা নির্দিষ্ট করেনি। প্রতিবেশী দেশগুলোতে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা আমাদের দেশের তুলনায় অনেক বেশি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৪০, শ্রীলংকায় ৪৫, ইন্দোনেশিয়ায় ৩৫, ইতালিতে ৩৫, ফ্রান্সে ৪০ এবং অনেক দেশে অবসরের আগের দিন পর্যন্ত। আর বাংলাদেশে অবসরের বয়সসীমা ৫৭ থেকে বাড়িয়ে ৫৯ করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে আরও দুই বছর বেশি। কিন্তু প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো হয়নি।
এদিকে এনটিআরসিএর মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ হলে দীর্ঘসূত্রিতা ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। সে কারণে এ পদ্ধতি বাতিল করার সুপারিশ করা হয়। কমিটি নিবন্ধনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মৌখিক পরীক্ষা বাতিল করার সুপারিশও করে।
এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে উপজেলার আকার, ইউনিয়ন সংখ্যা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বিবেচনা করে স্কুল কলেজ সরকারিকরণের পরামর্শ দেওয়া হয়।
বৈঠকে জানানো হয়, বর্তমানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দফতরে ‘বিশেষ অনুরোধে’ ৪ জন সচিব, ৩৬ জন অতিরিক্ত সচিব, ১১১ জন যুগ্ম সচিব এবং ২০০ জন উপসচিব তিন বছরের বেশি সময় ধরে একই কর্মস্থলে রয়েছেন।
কমিটির সভাপতি এইচ এন আশিকুর রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, র আ ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী, মো. আব্দুল্লাহ ও খোরশেদ আরা হক বৈঠকে অংশ নেন।