ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন প্রকল্পে ব্র্যাক কর্মকর্তাদের দূর্নীতি

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন প্রকল্পে ব্র্যাক কর্মকর্তাদের দূর্নীতি

durniter-ovojug_6195
কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া : কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ও বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিশ্বমানের দেশীয় এনজিও সংস্থা ব্র্যাকের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ, দূর্নীতি, অনিয়ম ও কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এনজিও সংস্থা ব্র্যাক বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোতে শেড নির্মাণ, গভীর নলকূপ স্থাপন, টয়লেট স্থাপন, গোসল খানা, ওয়াশরুম নির্মাণসহ বিভিন্ন প্রকার বাঁশ-গাছ সরবরাহ কাজে অনিয়ম ও বেপরোয়া দূর্নীতির মাধ্যমে প্রকল্পের কাজ চালাচ্ছে। এমন অভিযোগ স্থানীয় সচেতন মহল ও ক্যাম্পে নিয়োজিত প্রশাসনের।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে এসব কাজের ঠিকাদারদের সাথে যোগসাজসের মাধ্যমে কাজে নয়-ছয় করে কমিশন বাণিজ্য করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ব্র্যাকের দূর্ণীতি পরায়ন কর্মকর্তারা।
অভিযোগ উঠেছে, ব্র্যাকের উখিয়ার এরিয়া ম্যানেজার ফরহান, কুতুপালং ব্র্যাক অফিস-১ এর ম্যানেজার মনিরুল ইসলাম, কুতুপালং ব্র্যাক অফিস-২ এর ম্যানেজার আব্দুর রউফ, সহকারী ম্যানেজার হুমায়ুন, এরিয়া ম্যানেজারের সহকারী গফুর উদ্দিন পরষ্পর যোগসাজসে কয়েকজন লাইসেন্স বিহীন ঠিকাদারের সাথে আতাঁত করে কোটি কোটি টাকার কাজ বিনা টেন্ডারে পাইয়ে দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা অবৈধ পন্থায় নিজেদের পকেটস্থ করছে। অথচ রোহিঙ্গাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা উখিয়ার বৈধ ঠিকাদাররা লাইসেন্স নিয়ে কাজ করার জন্য বার বার চেষ্টা করে ও ব্যর্থ হচ্ছে। নিয়মতান্ত্রিক ভাবে ব্র্যাক অফিসে কাজ চাইতে গিয়ে নানা হুমকি ও নাজেহালের শিকার হয়েছে অনেকে। এমনকি দূর্নীতিবাজ এসব কর্মকর্তারা স্থানীয় ঠিকাদার ও ব্যবসায়ীদের মামলার হুমকিও দিচ্ছে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা।
উখিয়ায় দীর্ঘদিন চাকুরী করার সুবাধে ব্র্যাকের অসাধু কর্তারা প্রতিটি গোসল খানা থেকে ২ হাজার টাকা, প্রতি টয়লেট থেকে ২ হাজার টাকা করে কমিশন নিচ্ছে। এছাড়াও দেড় লাখ টাকার একটি শেড নির্মাণ কাজ থেকে ১০ হাজার টাকার বেশি কমিশন আদায় করছে বলে ঠিকাদার মো: বশির আহমদ, জাহাঙ্গীর আলম, মো: সেলিম, মো: হাশেম জানান।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, ব্র্যাকের অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ঠিকাদার আজিজুর রহমান আরজু, মোঃ হেলাল ও আব্দুল হক রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজের নামে ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতি করে রাতারাতি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। এই ঠিকাদারেরা কাজের কোন নিয়ননীতির তোয়াকা না করে যেনতেন ভাবে কাজ করে চিহ্নিত কর্মকর্তাদের সহায়তায় বিলের টাকা সহজে উত্তোলন করে নিচ্ছে।
এদিকে আর্ন্তজাতিক সাহায্য সংস্থা থেকে রোহিঙ্গাদের সেবার নামে কোটি কোটি মার্কিন ডলারের প্রকল্পের নামে এনজিও সংস্থা ব্র্যাকের কতিপয় অসাধু কর্তারা ফায়দা লুটছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্র্যাকের কর্মকর্তাদের অনিয়ম দূর্ণীতি চরম পর্যায়ে পৌঁছলেও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোন তদারকি নেই।
সচেতন মহলের দাবী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ব্র্যাকের কাজের গুণগত মান নিয়ে শুরু থেকে নানা প্রশ্ন উঠলেও তা ঠেকানো যাচ্ছে না। এসব কাজে স্থানীয় প্রশাসনের দেখ ভাল না থাকায় তারা ইচ্ছামত কাজ করে পার পেয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে জানার জন্য ব্র্যাকের এরিয়া ম্যানেজার ফরহানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে উখিয়া উপজেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক ও ঠিকাদার বশির আহমদ অভিযোগ করে বলেন, ব্র্যাকের চলমান কাজের গুণগত মান খুবই খারাপ হচ্ছে এবং বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, শুরু থেকে ব্র্যাকের টিউবওয়েল ও ল্যাট্রিন নির্মাণসহ বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়। অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর আরআরসি কমিশনারের সাথে কথা বলে একটি নির্দিষ্ট ফরমেট করে দেয়া হয়। তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি এনজিও ব্র্যাক রোহিঙ্গাদের প্রতিটি আশ্রয় শেডে দা, চুরিসহ কিছু ধারালো সরঞ্জাম বিতরণের খবর পাওয়া গেলে জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় এ কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!