Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | মেট্রোরেলের স্বপ্নে একজন হাছান মাহমুদ

মেট্রোরেলের স্বপ্নে একজন হাছান মাহমুদ

নিউজ ডেক্স : তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামকে অনেক ভালোবাসেন। আমি যখনি সুযোগ পেয়েছি তখনি ঢাকার মতো চট্টগ্রামেও মেট্রোরেল করার জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যাকে অনুরোধ করেছি। মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেবের উপস্থিতিতেও অনুরোধ করেছিলাম। তিনিও আমার সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে অনুরোধ করেছিলেন। তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিছু না বললেও আজ মনে হলো তিনি আমাদের ওই দিনের অনুরোধ নোটিশ করেছিলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামে মেট্রোরেলের ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন। এখন আর বিষয়টিতে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং সংস্থা এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। কোন রুট ধরে কোন পথে কীভাবে মেট্রোরেল যাবে তার বিস্তারিত সমীক্ষা তারা করবে। এক্ষেত্রে বিমানবন্দর এবং শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হবে। চট্টগ্রামে মেট্রোরেল সময়ের ব্যাপার মাত্র।

তথ্যমন্ত্রী জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরই প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের জলজট নিরসন, স্যুয়ারেজ প্রকল্প, বেশ কয়েকটি ফ্লাইওভারসহ অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়নে ইতিপূর্বে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করেছেন, যার অধিকাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে ও হচ্ছে। চট্টগ্রামবাসী এর মধ্যে এসব প্রকল্পের সুফল পাচ্ছে। আজকের (গতকাল) বৈঠকে মেট্রোরেল প্রকল্প চট্টগ্রামের প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গভীর আন্তরিকতার প্রকাশ এবং নতুন বছরে চট্টগ্রামের জন্য নেত্রীর উপহার।

তিনি বলেন, বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামকে সর্বাত্মকভাবে একটি আধুনিক ও উন্নত নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সচেষ্ট রয়েছেন। চট্টগ্রামকে বিশ্বমানের শহরে রূপান্তরে তিনি ইতিমধ্যে সব সেবা সংস্থাকে দিয়ে সুদূরপ্রসারী ও টেকসই অবকাঠামো গড়ে তোলার ওপর জোর দিচ্ছেন। এখন আমরা চট্টগ্রামবাসীর দায়িত্ব হচ্ছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতা ও সদিচ্ছাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে কাজে লাগানো। মেট্রোরেল ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রামে আর যানজট সমস্যা থাকবে না। ফলে বন্দর নগরী হিসেবে গাড়ির অত্যধিক চাপ নগরবাসীর স্বাভাবিক জীবনযাপনে আর বাধা হতে পারবে না। ছয় হাজার কোটি টাকার জলজট নিরসন প্রকল্প চলমান রয়েছে। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে নগরী দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে। ওয়াসার চার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নগরীর ময়লা-আবর্জনা নিষ্কাষণে ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। চট্টগ্রামের প্রাণ কর্ণফুলী নদী ও হালদা নদী দূষণ থেকে মুক্তি পাবে।

হাছান মাহমুদ বলেন, ইতিপূর্বের সরকারগুলোর মতো শেখ হাসিনার সরকার চট্টগ্রামকে নিয়ে কোনো মৌখিক আশ্বাসে সীমাবদ্ধ থাকেনি। আমি চট্টগ্রামের একজন নাগরিক হিসেবে এবং সরকারের একটি অংশ হিসেবে এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। আমি মনে করি, এ অঞ্চলের দলমত নির্বিশেষে সব মানুষেরই প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতাকে সাধুবাদ জানানো উচিত।

জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর একনেক সভার কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল চালুর ব্যাপারে অনুরোধ জানান তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। এ সময় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও উপস্থিত ছিলেন। তথ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, চট্টগ্রাম শহরের জনসংখ্যা এখন ৬৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। নির্বিঘ্ন যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এখনই যদি মেট্রোরেলের উদ্যোগ নেয়া না হয় তাহলে ভবিষ্যতে মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে। তথ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম শহরে মেট্রোরেল সার্ভিস চালুর ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন উপস্থিত সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও। তিনিও প্রধানমন্ত্রীকে এ বিষয়ে তার আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেন।

তথ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবনা এবং সেতু মন্ত্রীর আগ্রহে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল (এমআরটি) চালুর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের (ফিজিবিলিটি স্টাডি) কাজ ২০১৯ সালে শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সেতু মন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মেট্রোরেলের সাথে জড়িতদের চট্টগ্রামের জন্য অবিলম্বে মেট্রোরেলের ফিজিবিলিটি স্টাডি শুরু করতে নির্দেশ দেন। একনেকের ওই সভায় সেতু মন্ত্রী চট্টগ্রামে মেট্রোরেল (এমআরটি) চালুর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের বিষয়ে সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছিলেন। -আজাদী প্রতিবেদন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!