Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | বিশ্বব্যাংক ৮ হাজার কোটি টাকা বাড়তি ঋণ দেবে

বিশ্বব্যাংক ৮ হাজার কোটি টাকা বাড়তি ঋণ দেবে

abul-mal-1-md20170116192527

নিউজ ডেক্স : আগামী তিন বছর আগের চেয়ে এক বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ৮ হাজার কোটি টাকা বেশি ঋণসহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংকের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান আইডা (ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন)। আগামী

জুলাই থেকে পরবর্তী তিন বছরের জন্য ৩ বিলিয়ন ডলার অর্থসহায়তা পাবে সরকার।

সোমবার বিকেলে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক অনানুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এর আগে বেলা ১১টায় বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর কিমিয়াও ফ্যানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

অর্থমন্ত্রী জানান, চুরি হওয়া রিজার্ভের অবশিষ্ট টাকার সম্পূর্ণ সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, কিছু টাকা ফেরত পেয়েছি, বাকি টাকার বিষয়ে ফিলিপাইনের পূর্ণাঙ্গ সিদ্ধান্ত পাওয়ার পরই তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।

ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক গ্রুপের আইডা ফান্ডের মেয়াদ ২০১৭ সালের জুনে শেষ হচ্ছে। আইডা থেকে পরবর্তী তিন বছরে ঋণ নেয়ার বিষয়েই বিশ্বব্যাংক গ্রুপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা বলেছেন, আইডার মাধ্যমে আগামী তিন বছরের জন্য বাংলাদেশকে অতিরিক্ত ১ বিলিয়ন ডলার বাড়তি ঋণসহায়তা দেয়া হবে। ফলে ২ বিলিয়ন ডলারের পরিবর্তে ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণসহায়তা পাবে বাংলাদেশ।

মুহিত জানান, আইডার চলতি মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অবশিষ্ট পাঁচ মাসের জন্য আমরা বর্ধিত সুদে ৫০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়েছিলাম। কিন্তু খাতগুলো সুনির্দিষ্ট না থাকায় বিশ্বব্যাংক বলেছে এটা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, এর পরিবর্তে বিশ্বব্যাংক নিজেই একটা প্রস্তাব দিয়েছে আমাদের। তারা এলজিইডি খাতে ৩০০ মিলিয়ন ডলার আর হাউজিং খাতে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের পাশাপাশি ব্যাংকিং খাত সংস্কার ইস্যুতেও ঋণসহায়তা দিতে চায়। এজন্য যৌথভাবে রোডম্যাপ তৈরি করা হচ্ছে। যদি এটা এই সময়ে সম্ভব না হয় তাহলে আইডার আগামী প্রান্তিকে যুক্ত হবে।

উল্লেখ্য, আইডা হচ্ছে বিশ্বব্যাংকের গরিব রাষ্ট্রগুলোর জন্য ঋণ প্রকল্প। আইডার মাধ্যমে স্বল্প সুদে ঋণ দেয় তারা। রাষ্ট্রগুলোর পক্ষ থেকে প্রতি তিন বছর পরপর আইডা থেকে টাকা নেয়ার বিষয়ে চুক্তি হয়।

রিজার্ভ চুরির বাকি টাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত পেলেই প্রতিবেদন
ড. ফরাস উদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশের বিষয়ে এর আগে অর্থমন্ত্রী বেশ কয়েকবার সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। এর মাঝে ফিলিপিন্স কর্তৃপক্ষও প্রতিবেদনটি চেয়ে পাঠায়। কিন্তু বিষয়টি গোপনীয় বলে তা ফিলিপিন্স কর্তৃপক্ষকে দিতে অস্বীকার করে সরকার।

ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক জানতে চান তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশের সময় হয়েছে কি না। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘না এখনও হয়নি। ফিলিপিন্সের সঙ্গে কিছু বিষয়ে সমাধান হলে প্রতিবেদন প্রকাশ করবো।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘নিজের দায় এড়িয়ে কেউ এই প্রতিবেদন থেকে সুবিধা পাক, সেটা আমি চাই না। রিজাল ব্যাংক চুরির টাকা নিয়ে বাহাদুরি করছে। তারা এটা করতে পারে না। টাকার মালিককে টাকা ফেরত দিতেই হবে। রিজাল ব্যাংকের এটিচুড গ্রহণযোগ্য নয়। বিষয়টির সমাধান হোক, তারপর প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।’

এদিকে বাংলাদেশের রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া ৮১ মিলিয়ন ডলার ফিলিপিন্সের যে ব্যাংক থেকে জালিয়াতদের হাতে গেছে সেই রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংক (আরসিবিসি) বলছে, এ ঘটনায় তাদের কোনো দায় নেই।

গত ৪ ফেব্রুয়ারি সুইফট মেসেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশের এক বিলিয়ন ডলার সরিয়ে ফেলার চেষ্টা হয়। এর মধ্যে পাঁচটি মেসেজে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার যায় ফিলিপিন্সের কমার্শিয়াল ব্যাংকে। আরেক মেসেজে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হয় ২০ লাখ ডলার।

শ্রীলঙ্কায় পাঠানো ওই অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া অর্থ শেষ পর্যন্ত আটকানো গেলেও ফিলিপিন্সের ব্যাংকে যাওয়া অর্থের বেশিরভাগই স্থানীয় মুদ্রায় বদলে জুয়ার টেবিল ঘুরে চলে যায় নাগালের বাইরে।

সাম্প্রতিককালের অন্যতম বৃহৎ সাইবার চুরির এই ঘটনা বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারে ঘটনার এক মাস পর, ফিলিপিন্সের একটি পত্রিকার খবরের মাধ্যমে। বিষয়টি চেপে রাখায় সমালোচনার মুখে গভর্নর ড. আতিউর রহমান পদ ছাড়তে বাধ্য হন। পরিবর্তন আসে ব্যাংকটির উচ্চপর্যায়ে।

রিজার্ভ চুরির বিষয়ে ফিলিপিন্সের সিনেট কমিটির তদন্তের মাধ্যমে কিম অং নামের এক ক্যাসিনো ব্যবসায়ী দেড় কোটি ডলার সে দেশের সরকারের হাতে ফেরত দেন। আদালতের প্রক্রিয়া শেষে ওই অর্থ বাংলাদেশের হাতে আসে। বাকি অর্থ এখনও ফেরত পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!