নিউজ ডেক্স : ওয়ানডেতে যেমন তেমন, সাদা পোশাক পরলেই বাংলাদেশি ক্রিকেটারা যেন বদলে যায়। হঠাৎ হঠাৎ দু-একটা সাফল্য আসে; যা নিতান্তই সামান্য। সিলেটের অভিষেক টেস্টেও আসল রূপ বেরিয়ে পড়ল টাইগারদের। শক্তির দিক দিয়ে পিছিয়ে থাকা জিম্বাবুয়ের কাছে ১৫১ রানের বড় ব্যবধানে পরাজিত হলো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। বাংলাদেশের কাছে সর্বশেষ চার টেস্টেই হেরেছে জিম্বাবুয়ে। তাদের সেই লজ্জা এবার নিবারণ হলো।
বিশাল টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে আজ মঙ্গলবার ম্যাচের চতুর্থ দিনে ধারাবাহিকভাবে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। দিনের প্রথম ঘণ্টাতেই সিকান্দার রাজার স্পিনে এলবিডাব্লিউ হয়ে যান লিটন দাস (২৩)। ভাঙে ৫৬ রানের ওপেনিং জুটি। তিন নম্বরে নামা মুমিনুল হক দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ। মাত্র ৯ রান করে জার্ভিসের বলে বোল্ড হয়ে যান ‘টেস্ট স্পেশালিস্ট’ খ্যাত এই ব্যাটসম্যান। একপ্রান্ত আগলে ভালোই খেলছিলেন ইমরুল কায়েস। কিন্তু ব্যক্তিগত ৪৩ রানে তিনি সেই সিকান্দার রাজার বলে বোল্ড হয়ে যান। ৮৩ রানে শীর্ষ তিন ব্যাটসম্যান হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ।
এরপর নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট পড়তে থাকে। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এই ইনিংসেও ব্যর্থ। ১৬ রান করে সিকান্দার রাজার শিকার হন তিনি। সুযোগ পেয়েও কিছু করে দেখাতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত (১৩)। সিকান্দার রাজার তৃতীয় শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন এই তরুণ ব্যাটসম্যান। ১১১ রানেই ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
সিলেট টেস্টের কোনো ইনিংসেই দলকে নির্ভরতা দিতে পারলেন না ‘মি. ডিপেন্ডেবল’ খ্যাত মুশফিকুর রহিম। প্রথম ইনিংসে ৩১ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে দল যখন হারের মুখে আছে, মুশি তখন ব্যক্তিগত ১৩ রানে মাভুতার বলে উইলিয়াম মাসাকাদজার তালুবন্দি হলেন। মেহেদী মিরাজও (৭) মুশির পথ অনুসরণ করে মাভুতার বলে ক্যাচ তুলে দিলেন পতন হলো ৭ম উইকেটের।
তাইজুল ইসলাম আর নাজমুল ইসলাম অপু দুজনেই ‘ডাক’ মেরেছেন। তাদের উইকেটে পেয়েছেন যথাক্রমে উইলিয়াম মাসাকাদজা এবং মাভুতা। ৩৮ রান করা আরিফুল হককে চাকাভার গ্লাভসবন্দি করে বাংলাদেশের কফিনে শেষ পেরেকটা ঠুকে দেন ৪ উইকেট নেওয়া মাভুতা। ১৬৯ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ১৫১ রানের বড় জয় নিয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল জিম্বাবুয়ে।
এর আগে গতকাল সোমবার বিনা উইকেটে ২৬ রান তুলে তৃতীয় দিন শেষ করেছিল বাংলাদেশ। তাইজুল-মিরাজ-অপুদের ঘূর্ণিতে ১৮১ রানে জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয়। সর্বোচ্চ ৪৮ রান করেন অধিনায়ক মাসাকাদজা। ম্যাচে দ্বিতীয়বারের মতো পাঁচ উইকেট নেন তাইজুল। এতে বাংলাদেশের চতুর্থ বোলার হিসেবে টেস্টে নূন্যতম ১০ উইকেট পাওয়া হয়ে যায় তার। ৩ উইকেট নেন মিরাজ এবং দুটি নেন নাজমুল অপু। বাংলাদেশের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ৩২১ রানের।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ২৮২ রানে অল-আউট হয় জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের হয়ে ৬ উইকেট নেন তাইজুল। কিন্ত নিজেদের প্রথম ইনিংসে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দেয় স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা। দ্বিতীয় দিনে দেড় সেশনেই অল-আউট হয় মাত্র ১৪১ রানে। অভিষিক্ত আরিফুল হক ৭ নম্বরে নেমে সর্বোচ্চ ৪১* রান করেন। প্রথম ইনিংসেই জিম্বাবুয়ের লিড ছিল ১৩৯ রানের।