ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | নয়ন বন্ড একদিনে তৈরি হয়নি, তাকে তৈরি করা হয়েছে : হাইকোর্ট

নয়ন বন্ড একদিনে তৈরি হয়নি, তাকে তৈরি করা হয়েছে : হাইকোর্ট

2019070412415915d1d9fb77283a

নিউজ ডেক্স : বরগুনার সন্ত্রাসী নয়ন বন্ড একদিনে তৈরি হয়নি। নেপথ্যে কেউ না কেউ তাকে লালন-পালন করে সন্ত্রাসী বানিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। বরগুনায় শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড প্রভাবের উদাহরণ টেনে হাইকোর্ট এই মন্তব্য করেন।

রিফাত হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেফতারের অগ্রগতির বিষয়টি রাষ্ট্রপক্ষ থেকে উপস্থাপন করার পর বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন। এর আগে বৃহস্পতিবার এই রিফাত হত্যা মামলার ঘটনায় আটক সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন হাইকোর্টে জমা দেন বরগুনার ডিসি ও এসপি।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, রিফাত হত্যার সঙ্গে জড়িত এজাহারভুক্ত এখন পর্যন্ত ৫ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার আছেন ৪ জন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আসামি ধরতে অভিযান চালানোর সময় পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালালে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি করতে বাধ্য হয়। পরে গোলাগুলি থেমে গেলে পুলিশ সেখান থেকে নয়ন বন্ডের মরদেহ শনাক্ত করে। এ পর্যায়ে হাইকোর্ট উপরোক্ত মন্তব্য করেন।

এর আগে গত ২৭ জুন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ রিফাত হত্যা মামলার আসামিরা যাতে দেশত্যাগ না করতে পারে, সে জন্য সীমান্তে রেড এলার্ট জারি করার নির্দেশ দেয়া হয়। ওই দিন প্রকাশ্যে রিফাত হত্যার ঘটনা বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হলে হাইকোর্ট ওই আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত সেদিন বলেলেন, এ বিষয়ে আমরা কোনো রুল ইস্যু করবো না। তবে মামলাটি আমাদের নজরদারিতে থাকবে। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে অগ্রগতি জানাতে বলেন হাইকোর্ট সে অনুযায়ী আজ ওই প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুনি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বরগুনার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের প্রতিবেদন আদালতে তুলে ধরে বলেন, এই মামলার এজাহার নামীয় ১২ আসামির মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এজাহারের বাইরেও সন্দেহজনক কয়েকজনকে গ্রেফতার করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ মামলার মূল আসামি যিনি নয়ন বন্ড নামে পরিচিত, তিনি বন্দুকযদ্ধে মারা গেছেন।

এ পর্যায়ে আদালত বলেন, সে কীভাবে মারা গেল? ডেপুনি অ্যাটর্নি জেনারেল বাশার বলেন, পুলিশের কাছে গোপন সংবাদ ছিল- রিফাত হত্যা মামলার আসামিরা লুকিয়ে আছে। পুলিশ তাদের ধরতে যায়। তখন তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আত্মরক্ষায় পাল্টা গুলি ছোড়ে। এক পর্যায়ে গুলিতে একজন মারা যায়। পরে এলাকাবাসী তাকে নয়ন বন্ড বলে চিহ্নিত করে। এ ঘটনায় হত্যা ও অস্ত্র মামলা করা হয়েছে।

আদালত বলেন, আমরা বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড পছন্দ করি না। একই সঙ্গে, আদালত রিফাত হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেফতারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন। আদালত বলেন, এই মামলার আসামি গ্রেফতার ও সার্বিক কার্যক্রম আমরা তদারকিতে রাখবো।

পরে স্থানীয় লোকজন রিফাত শরীফকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই দিন বিকেলে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়।

রিফাতের বাবা আব্দুল আলিম দুলাল শরীফ মোট ১২ জনকে আসামি করে বৃহস্পতিবার সকালে বরগুনা সদর থানায় ওই মামলা দায়ের করেন। এ মামলার এজাহারভুক্ত ২ নম্বর আসামি রিফাত ফরাজী (২৩), ৪ নম্বর আসামি চন্দন (২১), ৯ নম্বর আসামি মো. হাসান (১৯), ১১ নম্বর আসামি মো. অলিউল্লাহ অলি (২২) ও ১২ নম্বর আসামি টিকটক হৃদয়কে (২১) গ্রেফতার করা হয়েছে।

এছাড়া ভিডিও ফুটেজ ও অন্যান্য তথ্যের ভিত্ততে সন্দেহভাজন মো. নাজমুল হাসান (১৯), তানভীর (২২), মো. সাগর (১৯), কামরুল হাসান সাইমুন (২১) ও রাফিউল ইসলাম রাব্বিকে গ্রেফতার করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!