Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | কক্সবাজার সৈকত পর্যটকে টইটম্বুর

কক্সবাজার সৈকত পর্যটকে টইটম্বুর

নিউজ ডেক্স : সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতিমা বিসর্জন, সাপ্তাহিক ও ঈদে মিলাদুন্নবীর (সা.) টানা ছুটি উপলক্ষে কক্সবাজারে লাখো পর্যটকের ঢল নেমেছে। কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠেছে কক্সবাজার সৈকত।

বুধবার (৫ অক্টোবর) প্রতিমা বিসর্জনের পরেরদিন থেকেই পড়েছে সাপ্তাহিক ছুটি। রোববার (১০ অক্টোবর) পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। পূজা, সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটি মিলিয়ে অবসর কাটাতে কক্সবাজারে ভিড় করেছেন পর্যটকরা। বুধবার সকাল থেকে পর্যটকের ঢল নামে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে। কলাতলী, সুগন্ধা ও লাবণী পয়েন্ট, হিমছড়ি, ইনানীসহ সব পর্যটক স্পট পর্যটকে সরগরম হয়ে উঠেছে।

ভিড় রয়েছে শহর ও পর্যটন এলাকার বিভিন্ন সড়ক-উপসড়কেও। রিজার্ভ ছাড়া যাত্রী না তোলায় রীতিমতো দেখা দিয়েছে যানবাহন সংকট। গণপরিবহনগুলো পর্যটকদের রিজার্ভ ভাড়া ধরতে গিয়ে স্থানীয়দের এড়িয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। টানা এ কয়েকদিনের ছুটিতে কয়েকশ কোটি ব্যবসার আশা করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

কক্সবাজার হোটেল ও গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির তথ্যমতে, কক্সবাজারের প্রায় সাড়ে চার শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও কটেজ রয়েছে, যেখানে লক্ষাধিক পর্যটক অবস্থান করতে পারেন। অক্টোবরের শুরু থেকে পর্যটক আগমন ভালো দেখা দিয়েছে। সব হোটেল প্রায় বুকিং। যেহেতু পর্যটন মৌসুম শুরু হয়েছে, তাই এ ভিড় শুভ লক্ষ্মণ বলছেন তারা।

কক্সবাজার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির নেতা রাসেদুল ইসলাম ডালিম বলেন, বুধবার সকাল থেকে পর্যটকের সমাগম চোখে পড়ে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সেটি আরও বেড়েছে। আশা করি এই চাপ আগামী আরও কয়েকদিন থাকবে।

ট্যুর অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রেজাউল করিম জানান, টানা কয়েকদিনের ছুটিতে লাখো পর্যটকের সমাগম হয়েছে। তবে এটা প্রতিবছরই হয়। এবার প্রতিমা বিসর্জনের বন্ধ ও অন্যান্য ছুটি একসঙ্গে হওয়ায় মানুষ বেশি এসেছে।

ঢাকার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে বেড়াতে আসা ইব্রাহিম ও মৌরিন দম্পতি বলেন, ‘বিয়ের পর প্রথম কক্সবাজারে এসেছি। বিশাল সাগরের ঢেউ। অবারিত প্রকৃতি আল্লাহর নিয়ামত। দেখলেই মনটা ভারমুক্ত হয়।’

পাঁচতারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইসের পরিচালক আবদুল কাদের মিশু জানান, দুর্গাপূজা ও সাপ্তাহিক ছুটিতে কক্সবাজারে অনেক ভিআইপিসহ পর্যটকরা এসেছেন। তারকামানের হোটেলগুলোর বেশিরভাগ কক্ষ আগে থেকেই বুকিং ছিল।

হোটেল-গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, চলতি মাস থেকে আগামী মার্চ পর্যন্ত ছুটি ছাড়াও প্রচুর পর্যটক আসবেন। এ বিশ্বাস আমাদের রয়েছে। সেভাবেই আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।

কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, টানা কয়েকদিনের ছুটিতে লাখো পর্যটকের উপস্থিতির কথা মাথায় রেখে পৌরসভার পক্ষ থেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে কাজ করছে পৌর কর্তৃপক্ষ।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, বিপুল পর্যটকের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ সবসময় প্রস্তুত রয়েছে। প্রতিটি পয়েন্টে পোশাকে ও সাদা পোশাকে কাজ করছে পুলিশ। পর্যটকদের সুবিধার জন্য সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট হেল্প ডেক্স বসানো হয়েছে। কেউ যেন হয়রানির শিকার না হন সেই চেষ্টা আমাদের রয়েছে।

দুর্গোৎসবের শেষ দিন থেকে লোকসমাগম বেড়েছে বলে জানান, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম। তিনি বলেন, পর্যটনসহ পুরো শহরে তিন স্তরে নিরাপত্তা জোরদার রয়েছে। যানজট নিরসনে সৈকতের কলাতলী থেকে আশপাশের সড়কগুলোতে কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশ।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. আবু সুফিয়ান বলেন, প্রতিমা বিসর্জন এবং সাপ্তাহিক ছুটিসহ পাঁচদিনের ছুটিতে বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকত কক্সবাজারে লাখো মানুষের ঢল নেমেছে। তিনি বলেন, পর্যটকরা কক্সবাজারের মেহমান, রাজস্বের লক্ষ্মী।

জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, পর্যটক হয়রানি বন্ধে হোটেল-মোটেল ও রেস্তোরাঁয় মূল্য তালিকা টাঙানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে রয়েছে। সবধরনের নিরাপত্তা জোরদারে পুলিশের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারাও কাজ করছেন। এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার খবর আসেনি। -জাগো নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!