Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | আসছে পহেলা বৈশাখ : বাড়তে শুরু করেছে ইলিশের দাম

আসছে পহেলা বৈশাখ : বাড়তে শুরু করেছে ইলিশের দাম

image-48836

নিউজ ডেক্স : আর মাত্র আট দিন বাকি পহেলা বৈশাখের। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরের মতো এবারও বাড়তে শুরু করেছে ইলিশের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি ইলিশে ৫০০ টাকা বা তারও বেশি দাম নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। সামনে দাম আরো বাড়বে বলেও জানায় বিক্রেতারা।

রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুব কমসংখ্যক দোকানে ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে। কারওয়ান বাজার কিচেন মার্কেটের ভেতর মাছের বাজারে ৫০টিরও বেশি দোকান রয়েছে। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মাত্র চার-পাঁচটি দোকানে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। মাছ বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সবাই বিক্রি করবে আরো দু-একদিন পর থেকে। এখন ইলিশ কিনে সবাই ফ্রিজিং করে রাখছে। বৈশাখ যত কাছে আসবে ততই চাহিদা বাড়বে, দামও বাড়বে বলে জানায় বিক্রেতারা। বাজারে কম পরিমাণ ইলিশ ছেড়ে চাহিদা বৃদ্ধি করে বেশি দাম আদায় করার অভিযোগ বেশ পুরনো।

ভোরে মাছ বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, ইলিশের উপস্থিতি ও বিক্রি দুটোই বেড়েছে। ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের প্রতিটি ইলিশের দাম চাওয়া হচ্ছে এক হাজার ৬০০ থেকে দুই হাজার টাকা। এই ওজনের ইলিশ কিছুদিন আগে এক হাজার থেকে এক হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

৯০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ দুই হাজার থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা চাওয়া হচ্ছে। ৮০০ গ্রামের কেজি এক হাজার ৬০০ টাকা এবং ৭০০ গ্রামের প্রতি কেজি এক হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। এক কেজি ১০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের বড় ইলিশও কিছু বাজারে দেখা গেছে। দাম চাইছে প্রতি কেজি দুই হাজার ৮০০ থেকে তিন হাজার টাকা। আর দুই কেজি বা তার কাছাকাছি ওজনের ইলিশের প্রতি কেজির দাম চাওয়া হচ্ছে ছয় হাজার ৫০০ টাকা।

খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশির ভাগ ইলিশই ফ্রিজিং করে রাখা। যেগুলো গত সিজন থেকেই সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এখনো পুরোদমে মৌসুমি ইলিশ বাজারে আসতে শুরু করেনি। যা আসছে, সেটাও কম পরিমাণে। খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতা আনিছুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এ সময় ইলিশের চাহিদা বাড়বেই। মানুষ পছন্দ করে বৈশাখে ইলিশ খেতে। যে কারণে চাহিদাও বাড়ে, দামও বাড়ে।’

জানা গেছে, রাজধানীতে ইলিশ মূলত তিন ধাপ পেরিয়ে ক্রেতার হাতে পৌঁছে। প্রথম দফায় আড়ত মালিকদের কাছ থেকে মাচা মালিকরা কিনে নেয়। তারা আবার পাইকারদের কাছে এবং এরপর খুচরায় বিক্রি হয়ে থাকে। এ হাতবদলে ইলিশের দামে ২০০-৩০০ টাকা যোগ হয়। হাতিরপুল কাঁচাবাজারে ইলিশ কিনতে আসা মোহসীন হোসেন বলেন, ‘পরে তো দামের কারণে ইলিশ কেনাই সম্ভব হবে না। তাই একটু আগেভাগেই কিনতে এসেছি। বাচ্চারা বৈশাখে ইলিশ খেতে চায়।’

অনেক ক্রেতাই বাজারে ইলিশ কিনতে গিয়ে শঙ্কায় থাকে যেন দেশি ইলিশের পরিবর্তে বার্মিজ ইলিশ না কিনে ফেলে। তবে ব্যবসায়ীরা দাবি করে, বাজারে এখন বার্মিজ ইলিশ ঢুকতে পারে না। কোনো কোনো বিক্রেতা তো স্লোগানই দিচ্ছে ‘বার্মিজ খাইয়া টইক্কেন না, দেশি লইয়্যা যান।’

জানতে চাইলে সোহেল মিয়া নামের এক বিক্রেতা বলেন, ‘বার্মিজ ইলিশের স্বাদ দেশি ইলিশের মতো নয়। তাই মানুষ খেতে চায় না।’ এ ধরনের স্লোগান দিলে ক্রেতা বেশি আকৃষ্ট হয় বলে জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আড়তদার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কিছু বার্মিজ ইলিশ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, এটা মিথ্যা নয়। এগুলো কিছু ব্যবসায়ী দেশি বলে বেশি দামে বাজারে চালিয়ে দেয়। এটা আসলে গ্রাহক ঠাকানো কাজ।’ রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তথ্য মতে, গত এক মাসের ব্যবধানে নিয়মিত দামের চেয়ে ২৩.৮ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে ইলিশের দাম।

এদিকে ইলিশের পাশাপাশি রাজধানীতে কিছুদিন ধরে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১৪৫ টাকায়। টিসিবি বলছে, গত এক মাসে প্রায় ১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!