ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | ১৫ থানায় হচ্ছে আহ্বায়ক কমিটি

১৫ থানায় হচ্ছে আহ্বায়ক কমিটি

নিউজ ডেক্স : নগর বিএনপি’র আওতাধীন ১৫ থানার মাত্র পাঁচটিতে পূর্ণাঙ্গ সাংগঠনিক কমিটি আছে। অবশিষ্ট থানাগুলোতে ২০১৯ সালে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিলেও কেন্দ্রীয় নির্দেশে স্থগিত করা হয়েছিল পুনর্গঠন প্রক্রিয়া। পরের বছর নগর বিএনপি’র পূর্ণাঙ্গ কমিটি বিলুপ্ত করে গঠিত হয় আহ্বায়ক কমিটি। তারাও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অপূর্ণাঙ্গ কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার উদ্যোগ নেন। কিন্তু গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যান আহ্বায়ক। ফলে ভেস্তে যায় সে উদ্যোগও। এ অবস্থায় ১৫ থানার প্রতিটিতেই আহ্বায়ক কমিটি গঠন করতে যাচ্ছে নগর বিএনপি। এ লক্ষ্যে প্রতিটি থানায় পৃথক কর্মী সমাবেশ কর্মসূচি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। আজ শনিবার থেকে শুরু হয়ে এ কর্মসূচি চলবে আগামী ৯ অক্টোবর পর্যন্ত। সমাবেশ শেষে প্রতিটি থানার বিদ্যমান কমিটি বিলুপ্ত করে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হবে। ওই আহ্বায়ক কমিটি পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করবেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নগর বিএনপি’র আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, একদিন অন্তর অন্তর থানাগুলোতে কর্মী সমাবেশ করব। এরপর আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করব। গত ফেব্রুয়ারিতে সার্চ কমিটির মাধ্যমে প্রতিটি থানার সাংগঠনিক চিত্র আমরা সংগ্রহ করেছি। সেগুলো এনালাইসিস করে যোগ্যদের আহ্বায়ক কমিটিতে স্থান দেয়া হবে। বিদ্যমান থানা কমিটির অনেকে ভালো কাজ করেছেন। তাদের বিষয়টিও আমলে নেয়া হবে। আবার একই থানায় যদি একাধিক প্রার্থী থাকে সেক্ষত্রে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা দায়িত্ব নেয়ার পর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে থানা ও ওয়ার্ড কমিটি পুনর্গঠনের উদ্যোগও নেয়া হয়। মাঝখানে ‘মিথ্যা’ মামলায় আমাকে জেলে যেতে হলো। ফলে সম্ভব হয়নি। এখন আমরা যে উদ্যোগ নিয়েছি তা আশা করি বাস্তবায়িত হবে। থানা কমিটির নেতৃবৃন্দ ৪৩ সাংগঠনিক ওয়ার্ড কমিটি করে দেবেন। পরবর্তীতে কাউন্সিলের মাধ্যমে নগর কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে।

এ বিষয়ে নগর বিএনপি’র সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, সংগঠনকে গতিশীল করতে কর্মী সমাবেশ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে থানা ও ওয়ার্ড কমিটি পুনর্গঠনের পরিকল্পনা তো আছেই। মাঝখানে করোনা পরিস্থতির কারণে সবকিছু বন্ধ ছিল। এ বিষয়ে কেন্দ্র থেকেও নিষেধ করা হয়েছিল। এখন তো স্বাভাবিক হয়েছে। তাই কার্যক্রম শুরু করছি।

মাত্র পাঁচ থানায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি : নগর বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৬ আগস্ট কেন্দ্রীয় নির্দেশে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে নগরের দপ্তরে জমা দেয়ার জন্য বিদ্যমান আংশিক কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে চিঠি দেন নগর বিএনপি’র তৎকালীন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। এরপ্রেক্ষিতে জমাকৃত তিনটি থানার পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেন তারা। থানাগুলো হচ্ছে – পাঁচলাইশ, বায়েজিদ ও চকবাজার।

এর আগে ২০১৯ সালের ৭ আগস্ট ১০১ সদস্যের কোতোয়ালী থানা এবং ২০১৮ সালের ১২ আগস্ট ১৫৮ সদসেদ্যর আকবর শাহ থানা কমিটি অনুমোদন দেন নগর বিএনপি’র তৎকালীন সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর। ওই হিসেবে নগরের পাঁচটি থানায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি আছে।

১০ থানায় আংশিক কমিটি আছে : ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি চার থানায় আংশিক কমিটির অনুমোদন দেয় নগর বিএনপি। থানাগুলো হচ্ছে- পতেঙ্গা, বন্দর, ইপিজেড ও সদরঘাট। এর মধ্যে পতেঙ্গা থানা কমিটির সদস্য সংখ্যা ৫৬ জন, ইপিজেড থানা কমিটির সদস্য সংখ্যা ৩৪ জন, বন্দর থানা কমিটির সদস্য সংখ্যা ২৫ জন এবং ইপিজেড থানা কমিটির সদস্য সংখ্যা ১৯ জন।

এর আগে ২০১৭ সালের ১১ জুলাইও সাত থানায় আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে চার সদস্যের বাকলিয়া, ছয় সদস্যের চকবাজার (বর্তমানে পূর্ণাঙ্গ), দুই সদস্যের পাহাড়তলী, সাত সদস্যের চান্দগাঁও, দুই সদস্যের ডবলমুরিং, দুই সদস্যের বায়েজিদ (বর্তমানে পূর্ণাঙ্গ), ও দুই সদস্যের পাঁচলাইশ (বর্তমানে পূর্ণাঙ্গ) থানা। একই বছরের ১৮ জুলাই ছয় সদস্যের হালিশহর থানার আংশিক কমিটি গঠন করা হয়েছিল।

এছাড়া খুলশী থানা বিএনপি’র বিদ্যমান কমিটির সদস্য সংখ্যা পাঁচজন। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী নগর বিএনপি’র সভাপতি থাকাকালীন সময়ে এ খুলশী থানা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়েছিল।

জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর ডা. শাহাদত হোসেনকে আহ্বায়ক ও আবুল হাশেম বক্করকে সদস্য সচিব করে ৩৯ সদস্যের নগর কমিটি করা হয়। গত ২ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর নয়াপল্টনস্থ বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে লন্ডনে অবস্থানরত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নগরের আওতাধীন থানা ও সাংগঠনিক ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন। একইসঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে সাংগঠনিক কমিটিগুলো গঠনের নির্দেশনা দেন তিনি। এর প্রেক্ষিতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি নগরের আহ্বায়ক, সদস্য সচিব এবং ১৩ জন যুগ্ম আহ্বায়কের সমন্বয়ে পৃথক ১৫টি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা হয়েছিল। প্রতিবেদনও জমা দেয় পর্যালোচনা কমিটি। পরবর্তীতে গত ২৯ মার্চ নগরের নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে মিছিল ও সমাবেশ করার সময় পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে গ্রেপ্তার হন আহ্বায়ক। করোনার জন্য উচ্চ আদালত বন্ধ থাকায় জামিন নিতে পারেননি সদস্য সচিবসহ অন্য নেতৃবৃন্দ। গত ১ সেপ্টেম্বর জামিন পান তিনি। এরইমধ্যে বিধিনিষেধও ওঠে গেছে। এ সুযোগে কমিটি পুনর্গঠন প্রক্রিয়া করতে চায় বিএনপি। প্রসঙ্গত, বর্তমানে আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ সবগুলো থানা কমিটিই মেয়াদোর্ত্তীণ। তাই নতুন করে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে নগর বিএনপি’র এক নেতা জানান। দৈনিক আজাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!