Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | সার্ভেয়ার আতিকুরকে দিয়ে দুদক কক্সবাজার কার্যালয়ের মামলা শুরু

সার্ভেয়ার আতিকুরকে দিয়ে দুদক কক্সবাজার কার্যালয়ের মামলা শুরু

নিউজ ডেক্স : ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৩ লাখ টাকাসহ আটক কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখার সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ মামলার মধ্য দিয়ে দুদক কক্সবাজার কার্যালয়ের মামলার সূচনা হলো। সার্ভেয়ার আতিকুর এখন কক্সবাজার জেলা কারাগারে রয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক সমন্বিত কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম বলেন, রোববার (৩ জুলাই) বিকেলে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে সার্ভেয়ার আতিকুরের বিরুদ্ধে এ মামলাটি করেন। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ধারায় মামলাটি করা হয়। দুদক কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের এটিই প্রথম মামলা। তাই মামলাটিকে গুরুত্বসহকারে নিয়ে তদন্তসহ সবকিছু করা হবে।

সার্ভেয়ার আতিকুর রহমান (৪০) সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার মীরপুর দক্ষিণের মো. আবদুর রহমানের ছেলে। তিনি বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সার্ভেয়ার হিসেবে পদায়নে থেকে প্রেষণে (সংযুক্তিতে) কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সার্ভেয়ার হিসেবে দায়িত্বে আসেন।

গত ১ জুলাই ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটকের পর ২৩ লাখ ৬৩ হাজার ৯০০ টাকাসহ সার্ভেয়ার আতিককে কক্সবাজার সদর থানায় সোপর্দ করে জেলা প্রশাসন। সরকারি কর্মচারী বিধিমতে জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজের একটি অভিযোগ সাধারণ ডায়েরি হিসেবে নথিভুক্ত করে দুর্নীতি দমন কমিশনকে অনুলিপি পাঠানো হয়। নিয়মমতে, দুদকই সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানের ঘটনায় মামলা দায়ের করে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজ জানান, থানায় ফৌজদারি মামলার পাশাপাশি সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এরই মধ্যে তা শুরু হয়েছে। তিনি কীভাবে, কোথা থেকে এত টাকা পেলেন এবং তা ঢাকায় কেন নিয়ে গেছেন এসব বিষয় উদঘাটন করতে তদন্ত শুরু হয়েছে।

শুক্রবার (১ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ব্যাগভর্তি ২৩ লাখ ‘ঘুসের টাকা’ নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সার্ভেয়ার আতিকুর রহমান আটক হন। পরে বিমানবন্দর থেকেই তাকে কক্সবাজারে ফেরত পাঠালে শুক্রবার রাতে কক্সবাজার মডেল থানায় তাকে সোপর্দ করে জেলা প্রশাসন।

কক্সবাজার বিমানবন্দর সূত্র জানায়, আতিকুর রহমান শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন। তার ব্যাগ স্ক্যান করলে ব্যাগের ভেতর বিপুল পরিমাণ টাকার স্তূপ দেখা যায়। তাকে বিমানবন্দরে দায়িত্বরত এপিবিএন সদস্যরা ব্যাগসহ আটক করে বিশেষ কক্ষে বসিয়ে রাখেন। কিন্তু এর পাঁচ মিনিটের মাথায় রহস্যজনক কারণে সকাল পৌনে ১০টার বেসরকারি একটি বিমানের ফ্লাইটে চেপে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হন তিনি। ঘণ্টাখানেক পর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে সেখানে তল্লাশিতে ব্যাগে টাকা পাওয়া যায়। বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে আটক করেন। পরে আতিকুর রহমানের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে বিকেল সাড়ে চারটার আরেকটি ফ্লাইটে তাকে কক্সবাজারে ফেরত পাঠানো হয়। বিমানবন্দর থেকে আতিকুর রহমানকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

আতিকুর রহমানসহ তিনজন সার্ভেয়ার মহেশখালীতে সরকারের প্রায় ১৫টি প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন। ভূমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে জমির মালিকদের কাছ থেকে আতিকুর রহমান ওই অর্থ ঘুস নিয়েছেন বলে সন্দেহ করছেন সংশ্লিষ্টরা।

কক্সবাজারে সরকারের ৩ লাখ কোটি টাকার ৭২টি মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। এসব প্রকল্পের জন্য প্রচুর পরিমাণ জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। অধিগ্রহণ কাজে সহযোগিতা করা সার্ভেয়ারদের মাঝে এর আগেও বেশ কয়েকজন নগদ কোটি টাকাসহ দুদকের হাতে গ্রেফতার হন। -জাগো নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!