কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া : আরার দেশত বউত গোলাগুলি চইল্লে, মানুষ মারি ফেলাইয়ে। এতদিন অপেক্ষা গরি চাইয়ি, হন পরিবর্তন নর। অতাল্লাই বাড়িঘর ফেলাই পরান নান লই বাংলাদেশত আইচ্ছিদে। কী অইব ন জানি। কথাগুলো বলছিলেন মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা রফিক উল্লাহ। মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের ডেকিবুনিয়া গ্রামে বাড়ি তার। তার বড় তিন ছেলেকে মিয়ানমার সেনারা ধরে নিয়ে গেছে অনেক আগে। ১৫ বছরের মেয়ে জুলেখা আক্তার তার মায়ের সাথে নানার বাড়ি বেড়াতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। রফিক উল্লাহ আরো বলেন, ‘মগ সেনারা আমার মেয়ে ও স্ত্রীকে ধর্ষণের পর গুলি করে হত্যা করে। আমার একমাত্র সম্পদ মাকে নিয়ে এপারে আসতে পেরে অনেক খুশি।‘ মাকে কাঁধে করে দুর্গম পথ পেরিয়ে আনতে কষ্ট হয়েছে কী না জানতে চাইলে তিনি জানান, স্ত্রী, পুত্র-কন্যা হারিয়ে জান্নাত (মাকে) কাঁধে নিয়ে আসতে পেরে মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাচ্ছি। মায়ের চেহারার দিকে যখন তাকাই তখন ওপারের সব কষ্ট ভুলে যাই। কথাগুলো বলতে বলতে চোখের পানি মুছতে থাকেন রফিক উল্লাহ। উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের আঞ্জুমানপাড়া সীমান্ত দিয়ে গত কয়েকদিন আগে বাংলাদেশে ঢুকে পড়া শত শত রোহিঙ্গার একজন রফিক উল্লাহ। তারা খাদ্য ও মানবিক সহায়তা পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের যারা খাবার দিয়েছেন তাদের চিনি না আমি। এদেশের মানুষ ও সরকারকে আমাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাই। মিয়ানমারের পরিস্থিতি ভালো হলে চলে যাবেন কি না এমন প্রশ্ন শুনে রফিক উল্লাহর কথা থেমে যায়। কিছুক্ষণ চুপ থেকে উত্তর দেন, আমাদের দেশের পরিস্থিতি দেখবো, যদি ভালো হয় চলে যাবো। তবে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে সেটি তার কথায় বেশ বোঝা যাচ্ছিল।