নিউজ ডেক্স : একাদশ শ্রেণি ভর্তিতে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীন কলেজগুলোতে সাড়ে ৫ লাখেরও বেশি (৫ লাখ ৫৯ হাজার ৫৫৫টি) আবেদন জমা পড়েছে। অনলাইনে (ওয়েবসাইট ও এসএমএসের মাধ্যমে) মোট ১ লাখ ৭ হাজার ৬৩৮ জন শিক্ষার্থী এসব আবেদন করেছে। তবে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড থেকে উত্তীর্ণ ৮৪৭ জন শিক্ষার্থী এখনো আবেদনের বাইরে রয়েছে। তারা নির্ধারিত সময় ২৪ মের মধ্যে আবেদন করেনি। আন্তঃশিক্ষাবোর্ড সমন্বয়–সাব কমিটি সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। গত ১৩ মে থেকে ২৪ মে পর্যন্ত অনলাইনে (ওয়েবসাইট ও মুঠোফোনের এসএমএস–এর মাধ্যমে) এসব আবেদন করেছে ভর্তিচ্ছুরা।
আন্তঃশিক্ষাবোর্ড সমন্বয়–সাব কমিটি সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী– চট্টগ্রামের কলেজগুলোতে জমা পড়া মোট আবেদনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে মানবিক শাখায়। এ শাখায় মোট ২ লাখ ৩৬ হাজার ৯০৯টি আবেদন পড়েছে এবার। বিজ্ঞানে আবেদন পড়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৬১টি। আর ব্যবসায় শিক্ষায় ১ লাখ ৯৭ হাজার ৯৮৫টি আবেদন পড়েছে।
প্রাপ্ত তথ্য মতে– চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে মোট ১ লাখ ১ হাজার ১৯০ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান শাখা প্রথম পছন্দ দিয়েছে ২০ হাজার ১৩৮ জন, ব্যবসায় শিক্ষা শাখা প্রথম পছন্দ দিয়েছে ৩৫ হাজার ৯ জন এবং ৪৬ হাজার ৪৩ জন শিক্ষার্থী মানবিক শাখা প্রথম পছন্দ দিয়ে আবেদন করেছে।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের তথ্য মতে– এবার এসএসসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ২ হাজার ৩৭ জন। এর মধ্যে বিজ্ঞানে ২৭ হাজার ৭০৮ জন, ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ৪৮ হাজার ৭৩৭ জন এবং মানবিকের ২৫ হাজার ৫৯২ জন শিক্ষার্থী পাস করে। হিসেবে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড থেকে উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে আবেদনের বাইরে রয়েছে ৮৪৭ জন শিক্ষার্থী। আবেদনের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে আবেদন সম্পন্ন করেনি এসব শিক্ষার্থী। সামগ্রিকভাবে আসন সংকট হবেনা দাবি করে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জাহেদুল হক বলেন, চট্টগ্রামে বোর্ড অনুমোদিত ২৬০টি কলেজ রয়েছে। এসব কলেজে আসন সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার। আর এবার এসএসসি পাশ করেছে মোট ১ লাখ ২ হাজার ৩৭ জন। চট্টগ্রামের কলেজগুলোতে আবেদন করেছে ১ লাখ ৭ হাজার ৬৩৮ জন। মাদ্রাসা ও কারিগরির পাশাপাশি অন্যান্য বোর্ড থেকেও অনেক শিক্ষার্থী চট্টগ্রামের কলেজগুলোতে আবেদন করেছে। ফলে মোট উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর তুলনায় আবেদনকারীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। তবে সবমিলিয়ে আবেদনকারীর সংখ্যা আমাদের মোট আসন সংখ্যার তুলনায় কম। যার কারণে সামগ্রিক ভাবে চট্টগ্রামে আসন সংকট হবে না। সব শিক্ষার্থীই কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবে।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কলেজ শাখা সূত্রে জানা যায়, বোর্ড অনুমোদিত চট্টগ্রামে ২৬০টি কলেজের মধ্যে ২৫৮টি কলেজে (সরকারি–বেসরকারি) শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে এবার। ২৫৮ কলেজের মধ্যে সরকারি কলেজের সংখ্যা ২২টি। আর বাকি ২৩৬টি বেসরকারি (এমপিওভুক্ত, সিটিকর্পোরেশন অধিভূক্ত ও এমপিও বর্হিভূক্ত)। সব মিলিয়ে এসব কলেজে মোট আসন সংখ্যা ১ লাখ ৩৮ হাজারের কিছু কম–বেশি। এর মধ্যে বিজ্ঞানে প্রায় ৩১ হাজার, মানবিকে ৪৮ হাজারের কিছু কম–বেশি এবং ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় সর্বোচ্চ ৫৯ হাজারের কিছু কম–বেশি আসন রয়েছে।
সরকারি ২২টি কলেজের আসন সংখ্যা : চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে মহানগরসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামে মোট ২২টি সরকারি কলেজ রয়েছে। গতবছরের ২১টির সাথে এবার চট্টগ্রাম মডেল স্কুল এন্ড কলেজ যুক্ত হয়ে এ সংখ্যা ২২টিতে দাঁড়িয়েছে। এই ২২টি সরকারি কলেজে তিন বিভাগে (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা) মোট আসন রয়েছে ২০ হাজার ৫৫২টি। এর মধ্যে বিজ্ঞানে আসন সংখ্যা ৫ হাজার ৭৩০টি। ব্যবসায় শিক্ষায় ৮ হাজার ৭৬ এবং মানবিকে ৬ হাজার ৭৪৬টি।
মহানগরীর চিত্র : মহানগরীতে গতবার সরকারি কলেজ ৭টি থাকলেও এবার আরো একটি কলেজ (চট্টগ্রাম মডেল স্কুল এন্ড কলেজ) যুক্ত হয়েছে। এতে মহানগরে সরকারি কলেজের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮টিতে। ৮টি সরকারি কলেজে এবার মোট আসন সংখ্যা ৮ হাজার ৪৪২টি। এর মধ্যে বিজ্ঞানে ২ হাজার ৯১৭, ব্যবসায় শিক্ষায় ৩ হাজার ৪৫৫ ও মানবিকে ২ হাজার ৭০ জন শিক্ষার্থী মহানগরীর এসব সরকারি কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবে।
উল্লেখ্য, একাদশে ভর্তিতে গত ১৩ মে থেকে অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়। ২৪ মে এ আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। আগামী ৩১ মে পুনঃনিরীক্ষার ফল প্রকাশের কথা রয়েছে। পুনঃনিরীক্ষায় ফল পরিবর্তিত হওয়া শিক্ষার্থীরা আগামী ৫ ও ৬ জুন (দুই দিন) নতুন করে আবেদনের সুযোগ পাবে।
আবেদন প্রক্রিয়া ও যাচাই–বাছাই শেষে প্রথম দফায় মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করা হবে ১০ জুন। প্রথম তালিকায় ভর্তির জন্য মনোনীতদের ১১ জুন থেকে ১৮ জুন নিশ্চায়ন সম্পন্ন করতে হবে। নির্বাচিত শিক্ষার্থী এই সময়ের মধ্যে নিশ্চায়ন না করলে মনোনয়ন ও আবেদন বাতিল হিসেবে গন্য হবে। প্রথম দফায় মনোনীতদের নিশ্চায়ন প্রক্রিয়া শেষে দ্বিতীয় দফায় আবেদনের সুযোগ থাকছে ১৯ থেকে ২০ জুন। প্রথম দফায় মনোনয়ন বঞ্চিত এবং মনোনীত হয়েও নিশ্চায়ন করতে না পারা শিক্ষার্থীরা এ সময়ে আবেদন করতে পারবে। আবেদন গ্রহন শেষে ১ম দফায় মাইগ্রেশনের ফল ও দ্বিতীয় দফায় মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করা হবে ২১ জুন। মাইগ্রেশন হবে স্বয়ংক্রিয়।
দ্বিতীয় তালিকায় ভর্তির জন্য মনোনীতদের ২২ জুন থেকে ২৩ জুন নিশ্চায়ন সম্পন্ন করতে হবে। নির্বাচিত শিক্ষার্থী এই সময়ের মধ্যে নিশ্চায়ন না করলে মনোনয়ন ও আবেদন বাতিল হিসেবে গন্য হবে। ২য় দফায় মনোনীতদের নিশ্চায়ন প্রক্রিয়া শেষে ৩য় দফায় আবেদনের সুযোগ থাকছে ২৪ জুন। আবেদন গ্রহন শেষে ২য় দফায় মাইগ্রেশনের ফল ও ৩য় দফায় মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৫ জুন। ৩য় তালিকায় মনোনীতদের নিশ্চায়ন করতে হবে ২৬ জুনের মধ্যে। নিশ্চায়ন প্রক্রিয়া শেষে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে ২৭ জুন। ৩০ জুন পর্যন্ত এই ভর্তি কার্যক্রম চলবে। আর ক্লাস শুরু হবে ১ জুলাই।