ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | স্বাধীনতার অপশক্তির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিএনপি: ড. হাছান মাহমুদ

স্বাধীনতার অপশক্তির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিএনপি: ড. হাছান মাহমুদ

নিউজ ডেক্স : তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি এখনো অস্ফালন করে। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি এখনো সক্রিয়, তারা দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিতে খুশি নয়।স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির রক্ষাকবচ এবং প্রধান পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে বিএনপি। এই অপশক্তির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। তারা নানাসময় দেশের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, করোনার সময় বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, পদ্মা সেতু নির্মাণের সময় বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, এখন তারা দেশের মানুষকে নিয়ে মশকরা শুরু করেছে।  

তিনি বলেন, করোনা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সমগ্র পৃথিবীতে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। আমাদের দেশেও আমদানি নির্ভর কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। কিন্তু সেটি অন্যান্য দেশের তুলনায় কম। এতে নিম্নআয়ের মানুষের কষ্ট যাতে না হয় সেজন্য প্রধানমন্ত্রী ১ কোটি পরিবারকে ফ্যামিলি কার্ড দিয়েছেন। যাতে কম মূল্যে তারা টিসিবির পণ্য কিনতে পারেন। এতে জনগণের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। কিন্তু জনগণের মধ্যে স্বস্তি আসাতে বিএনপি ও কিছু কিছু বুদ্ধিজীবী নামধারীর অস্বস্তি বেড়ে গেছে।

শুক্রবার (২৫ মার্চ) দুপুরে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এসব কথা বলেন। -বাংলানিউজ

নগরের ষোলশহরের এলজিইডি অডিটোরিয়ামে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ সালামের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক দেবাশীষ পালিতের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. আতাউর রহমান, সহ-সভাপতি অধ্যাপক মো. মঈন উদ্দিন, আবুল কালাম আজাদ, এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, আবুল কাশেম চিশতি, সদস্য ইফতেখার হোসেন বাবুল, বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার, মো. সেলিম, উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী দিলোয়ারা ইউসুফ, কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর হোসেন তপু প্রমুখ।  

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ২৫ মার্চ কালোরাতে গণহত্যা শুরু হয়েছিল, এটার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য আমরা দাবি জানিয়েছি, আমাদের সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। এটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি যৌক্তিক। কিন্তু যখন একটি দলের নেত্রী যিনি আবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি যখন বলেন আসলে ৩০ লাখ মানুষ মারা যায়নি, তখন এই গণহত্যার স্বীকৃতি পেতে তো সেই প্রশ্ন আন্তর্জাতিক মহল করে। বিএনপি এবং খালেদা জিয়ার এই ধরনের বক্তব্য এবং যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করার জন্য বিএনপির প্রচেষ্টা গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা। না হয় আমরা গণহত্যার স্বীকৃতি সহজে পেতাম।  

তিনি বলেন, কিছু কিছু বুদ্ধিজীবী আছে যারা রাত ১২টার পর সক্রিয় হয়। এমনিতে ফকিরকে ২ টাকা খয়রাত দেন না। দেখলাম যে, ভং ধরে প্রেস ক্লাবের সামনে থালা নিয়ে বসছে। তাদের কাছে জনগণতো দূরে থাক, তাদের আত্মীয় স্বজনরাও যেতে পারে না। সবার কথা বলছি না। তাদের কোনো কাজ নেই, ওদের কাজ হচ্ছে, আপনি কী কাজ করছেন, আমি কী কাজ করছি, সরকার কী কাজ করছে এসবের ভুল ধরা। আমি ওদের নাম দিয়েছি ভুল ধরা পার্টি। রাত ১২টার পরে ভুল ধরা পার্টি সক্রিয় হয়। জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য তারা অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ পৃথিবীর সামনে একটি মর্যাদাশীল রাষ্ট্র আজ। মানুষের মাথাপিছু আয় এখন ২ হাজার ৬০০ ডলারের কাছাকাছি, যেটি ভারতকেও ছাড়িয়ে গেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে পৃথিবীর মাত্র ২০টি দেশে পজিটিভ জিডিপি গ্রোথ হয়েছিল, তৎমধ্যে বাংলাদেশ একটি। আশপাশের সব দেশে নেগেটিভ জিডিপি গ্রোথ ছিল ২০২০-২১ অর্থবছরে। আমাদের উপরে মাত্র দুটি দেশ ছিল সাউথ সুদান ও গায়েনা। তাদের অর্থনীতি আমাদের চেয়ে অনেক ছোট অর্থনীতির দেশ, সেখানে জনসংখ্যাও অনেক কম। সেই বিবেচনায় ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল পৃথিবীতে এক নাম্বারে আমরা বলতে পারি।

তিনি বলেন, এতে দেশের মানুষ খুশি, সমস্ত পৃথিবী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। জাতিসংঘের মহাসচিব, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট, প্রধান অর্থনীতিবিদ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্টসহ সমস্ত পৃথিবী প্রশংসা করে। ভারতের রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী এসে প্রশংসা করে গেছেন, ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানরা প্রশংসা করে, কিন্তু একটি পক্ষ প্রশংসা করতে পারে না। সেটি হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত এবং আর কিছু কিছু নামধারী বুদ্ধিজীবী, তারা এই উন্নয়ন অগ্রগতির প্রশংসা করতে পারেন না।  

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, করোনা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সমগ্র পৃথিবীতে দ্রব্যের মূল্য বেড়েছে। ইউরোপের প্রধান খাদ্যপণ্য রুটির মূল্য ৭৯ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। সেখানে অন্যান্য ভোগ্য পণ্যের দাম গত কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃদ্ধি পেয়েছে। একইভাবে আমেরিকা, ভারত, পাকিস্তানেও বেড়েছে। শ্রীলঙ্কায় তেলের জন্য লাইন ধরতে গিয়ে লাইনের মধ্যে পিষ্ট হয়ে কয়েকজন মারা গেছেন।

তিনি বলেন, করোনার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঢেউয়ের মধ্যেও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্বের কারণে আমরা সফলভাবে মোকাবেলা করেছি। কিন্তু এইসময় বিএনপি এবং তাদের মিত্ররা আর কিছু কিছু বুদ্ধিজীবী নামধারী যারা রাত ১২টার পরে সক্রিয় হয় তারা এটার বিরুদ্ধে কত না অপপ্রচার চালিয়েছেন। যখন করোনার টিকা আমরা দেওয়া শুরু করলাম তখন নামধারী বুদ্ধিজীবীদের এই টিকার বিরুদ্ধে কত বিরূপ প্রচারণা। এই টিকা ভারতীয় টিকা, এটি নিলে শরীরের ক্ষতি হবে, নানা প্রচারণা। আবার নিজেরাই লজ্জা ভেঙে প্রকাশ্যে টিকা নিলেন, কেউবা আবার গোপনে নিলেন। টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে পৃথিবীর প্রথম কয়েকটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। আমরা যখন টিকা দেওয়া শুরু করলাম, আমেরিকা-ইউরোপ থেকে এসে পর্যন্ত টিকা নিয়েছে।  

তথ্যমন্ত্রী বলেন, হাজার বছরের ঘুমন্ত বাঙালিকে জাগ্রত করে পলে পলে আন্দোলিত করে যেই নেতা স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলনের পথ বেয়ে আমাদের দেশপ্রেম উজ্জীবিত করেছিল, স্লোগান শিখিয়েছিল, তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানিরা পোড়ামাটির নীতি অনুসরণ করে যেই বাংলাদেশকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে, গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছিল। এদেশকে ধ্বংসস্তূপ থেকে পুনর্গঠিত করে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে যদি হত্যা না করা হতো তাহলে সাড়ে ৯ শতাংশের বেশি যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বঙ্গবন্ধু অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন সেই হারে যদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন হতে থাকতো, তাহলে স্বাধীনতার ১৫-২০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ হতো একটি উন্নত রাষ্ট্র।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!