ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | রাঙামাটিতে ভারী বর্ষণে ফের বড় ধসের শংকা

রাঙামাটিতে ভারী বর্ষণে ফের বড় ধসের শংকা

Shimultali-1

নিউজ ডেক্স : বৃষ্টি আর পাহাড় ধসের কবল থেকে যেন রেহাই পাচ্ছেনা রাঙামাটিবাসী। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে একটানা প্রবল ভারী বর্ষণে রাঙ্গামাটি চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাউখালীর ঘাগড়ায় আবারো পাহাড় ধসে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। দুপুরে ঘাগড়ার চম্পাতলী এলাকায় সড়কের উপর পাহাড় ধ্বসে পড়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে কয়েক ঘন্টা বন্ধ থাকার পর স্থানীয় লোকজন রাস্তা থেকে মাটি সরিয়ে নিলে হালকা যানবাহন চলাচল শুরু হয়। এছাড়া কাউখালী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নি¤œাঞ্চল প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়িঢলে প্লাবিত হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে ঘাগড়া বাজার এলাকার একাংশ,ঘাগড়া উচ্চ বিদ্যালয়,বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও ঘাগড়া কলেজ এলাকায়। অপরদিকে কাপ্তাই হ্রৃদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাঙ্গামাটি শহরের হ্রৃদের পাড়ে থাকা অনেক বসতবাড়ি প্লাবিত হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে ভারী বর্ষণ শুরু হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে আবারো বড় ধরনের পাহাড় ধসের আতংক দেখা দিয়েছে। গত দুই মাস পূর্বে রাঙ্গামাটি জেলায় ঘটে যাওয়া ভয়াবহ পাহাড়ধসের দু’দিন পূর্ব থেকে এ ধরনের বৃষ্টিপাত শুরু হয় এবং তৃতীয়দিন ভোর রাত থেকে শুরু হয় ভয়াবহ পাহাড় ধস। এই পাহাড় ধসের কারনে রাঙ্গামাটির ইতিহাসে ঘটে ভয়াবহ ঘটনা। রাঙ্গামাটি জেলায় অন্তত ১২০ জন লোক প্রাণ হারায় এবং আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে কয়েক হাজার পরিবার। ভয়াবহ এই পাহাড় ধসের কারণে এখনো প্রায় সাত শতাধিক পরিবার তাদের বসতবাড়ি হারিয়ে রাঙ্গামাটি জেলা শহরের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে এখনো অবস্থান করছে। এই পাহাড় ধসের ভয়াবহ স্মৃতি কাটিয়ে উঠার আগেই আবারো শুরু হয়েছে প্রবল বর্ষণ। রাঙ্গামাটি সড়ক জনপথ বিভাগের উপ–সহকারী প্রকৌশলী মো মুছা জানান, ভারী বৃষ্টির কারণে কিছু কিছু স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটলেও রাঙ্গামাটি–চট্টগ্রাম সড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন দুপুর থেকে কাউখালী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করা হচ্ছে। ঝুঁকিপুর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয় মাইকিং এ। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হলে দুপুরে রাঙ্গামাটি চট্টগ্রাম মহাসড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। ঘাগড়ায় পাহাড়ের মাটি ধসে রাস্তায় নেমে আসায় ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় রাঙ্গামাটি চট্টগ্রাম সড়কের বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধস বেড়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল হুমকির মধ্যে পড়েছে। ঘাগড়ার কলাবাগান এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সকাল থেকে টানা বর্ষণের ফলে ঘাগড়ার কলাবাগান এলাকায় পাহাড় থেকে আবারো মাটি ধসে পড়ে। বৃষ্টির সাথে সাথে পাহাড়ের মাটি রাস্তায় এসে পড়ে। তবে ভাগ্য ভালো এ সময় কোন গাড়ি এই এলাকায় ছিলো না। গাড়ি থাকলে হয়তো বিপদ হতে পারতো। পরে এলাকার লোকজন এবং সিএনজি চালকরা নিজেদের উদ্যোগে রাস্তার মাটি সরিয়ে ছোট যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করে দেয়। সকাল থেকে টানা বর্ষণের ফলে রাঙ্গামাটি শহরের পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থানকারী লোকজন নিরাপদ আশ্রয় সরে যেতে শুরু করেছে। টানা বৃষ্টির কারণে মানুষের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। সাধারণ জনগণ বলেন, রাতেও যদি এরকম বৃষ্টি হয় তাহলে আবারো গত ১৩ জুনের ঘটনার পুর্নরাবৃত্তি ঘটার আশংকা রয়েছে। রাঙ্গামাটি জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা বিশ্বনাথ মজুমদার জানান, আকাশের অবস্থা খুবই খারাপ। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে দুপুর থেকে রাঙ্গামাটি শহরের বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করা হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয় মাইকিং এ। রাঙ্গামাটি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক প্রকাশ কান্তি চৌধুরী জানান, সকাল থেকে ভারী বর্ষণের ফলে রাঙ্গামাটির পাহাড় গুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিকাল সাড়ে ৪ টায় থেকে রাঙ্গামাটি শহরে মাইকিং শুরু করা হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত বড় ধরনের কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি। গতকাল রাত আটটায় এ রির্পোট লেখার সময় রাঙ্গামাটি জেলা শহর,কাউখালী,কাপ্তাইসহ আশে পাশের এলাকা গুলোতে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল।

-পূর্বকোণ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!