Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | ভোট দিতে জনগণ দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ, বিজয় অর্জিত হবেই : রিজভী

ভোট দিতে জনগণ দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ, বিজয় অর্জিত হবেই : রিজভী

news_picture_92030ruhul-kabir-rizvi

নিউজ ডেক্স : এতো মামলা, হামলা, গ্রেফতারের পরেও জনগণ দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ, তারা এবর ভোট দেবেই বলে দাবি করেছেন সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘সরকারের সকল নির্যাতন উপেক্ষা করে বর্তমান ভয়াবহ দুঃশাসনের কবল থেকে মুক্তি পেতে জনগণকে সাথে নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা আগামী জাতীয় নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেছে। জনগণ ভোট দিতে না পারলে দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী বিপদে পড়বে। তবে এবার জনগণ ভোট দেবেই, ভোট দিতে জনগণ দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ, জনগণের বিজয় অর্জিত হবেই। কারণ বিগত ১০ বছরের আওয়ামী দুর্বিনীত দুঃশাসনের জন্য জনগণ তাদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে, দেশে বর্তমানে আওয়ামী লীগের ভোট শতকরা ১০ থেকে ১৫ ভাগ। বাকি ভোট বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের। বিশ্বস্ত মিডিয়াগুলোতে এধরনের পরিসংখ্যানই উঠে আসছে, আর সেজন্যই সরকার এতো বেপরোয়া। পরিষ্কার বলে রাখি-৩০ ডিসেম্বর হবে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন।’

বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সারা দেশে ধানের শীষের প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণায় নেতাকর্মী-সমর্থকদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মদদে ও ছত্রছায়ায় আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা চালাচ্ছে, নেতাকর্মীদের আহত করছে, বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশীর নামে পুলিশী তাণ্ডব ও গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে, নির্বাচনী গণসংযোগে হামলা করে নেতাকর্মীদেরকে আটক করা হচ্ছে অথবা নির্বাচনী সমাবেশ থেকে ফেরার পথে সাদা পোশাকধারীরা ধানের শীষের কর্মী-সমর্থকদেরকে তুলে নিয়ে গিয়ে গুম করে রাখছে, তাদের সন্ধান দিচ্ছে না।

‘প্রচারের মাইক ভেঙে ফেলছে, লম্বা বাঁশের ওপরে কাঁচি লাগিয়ে ধানের শীষের পোস্টার  ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে, ধানের শীষের নির্বাচনী ক্যাম্পগুলো ভাংচুর করছে, এমনকি পোস্টার কিংবা প্রচারপত্র যে প্রেস থেকে ছাপানো হচ্ছে সেই প্রেসে গিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা করছে। এখন প্রেস মালিকরা ধানের শীষের পোস্টার ছাপাতেও ভয় পাচ্ছে। জীবনের নিরাপত্তা চেয়েও পাচ্ছেন না ধানের শীষের প্রার্থী ও প্রার্থীর সমর্থকরা। দেশের কোটি কোটি মানুষ ও বিএনপি নেতাকর্মী চরম উৎকন্ঠার মধ্যে জীবন-যাপন করছে। ধানের শীষের নির্বাচনী প্রচারণার সময় শুধু আওয়ামী সন্ত্রাসীরাই নয়, যৌথভাবে পুলিশও গুলি চালাচ্ছে, পুলিশের গুলিতে আহত হচ্ছেন বিএনপির হেভিওয়েট নেতারা। গ্রেফতার করা হচ্ছে প্রার্থীদেরকে। প্রায় ১০ জনের মতো ধানের শীষের প্রার্থী এখন কারাগারে। জনগণ নয়, পুলিশই নৌকা মার্কার প্রার্থীদের আস্থাকেন্দ্র।’

রিজভী বলেন, ‘দুদিন আগে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার সময় শেখ হাসিনা অতীত কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন ঠিক সেই দিনই মুন্সীগঞ্জে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন তিন জন, সেদিনই বিএনপির বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থী হামলায় আক্রান্ত হয়েছেন, এর মধ্যে নারী প্রার্থীরাও রয়েছেন। হামলার শিকার হয়েছে শত শত বিএনপি নেতাকর্মী, সেদিনই গ্রেফতার করা হয়েছে কয়েকশ বিএনপি নেতাকর্মীকে। কারাগারগুলোতে যেন ‘ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই’ অবস্থা। কারাগারে স্থান সংকুলান না হওয়ায় বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে আটক করে এখন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অজানা জায়গায়। অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি বরখেলাপ করাটাই আওয়ামী লীগের ট্রেডমার্ক। যুগ যুগ ধরে জনগণ সেটাই প্রত্যক্ষ করেছে। আওয়ামী লীগের ইশতেহারে আওয়ামী সভানেত্রীর বক্তব্যের পেছনে যে অসুস্থ মানসিকতা কাজ করছে তা কোনো যুক্তির তোয়াক্কা করে না।’

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘সকল বাধা উপেক্ষ করে বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী সভায় জনগণের ঢল নামছে। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন গণতন্ত্র মুক্তির নির্বাচন, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার নির্বাচন, আওয়ামী সরকারের প্রতিহিংসায় কারারুদ্ধ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন।’

রিজভী আরও বলেন, ‘সিইসি নির্বচন নিয়ে দেশব্যাপী সহিংসতা ও ব্যাপক নৈরাজ্য ঢাকতে এখন বকধার্মিক সেজেছেন। তিনি বলেছেন-নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় আছে, এধরনের কথা বলে তিনি হামলাকারী সন্ত্রাসীদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে স্বাধীন নির্বাচন কমিশনকে বিতর্কিত করে ফেলেছেন। শুধু বিরোধী দলই নয়, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম, নির্বাচন বিশ্লেষকরা দৃশ্যমান সহিংসতা নিয়ে যখন সমালোচনামূখর, দাতা সংস্থাসহ বিভিন্ন দেশের কুটনীতিকরা যখন উদ্বিগ্ন তখন তিনি হামলাকারিদের পক্ষ নিয়ে মূলত: আওয়ামী চেহারাটাই জনগণের সামনে উন্মোচিত করেছেন। দেশের নির্বাচনী পরিস্থিতি নিয়ে কমিশনের ভেতর থেকেও যখন সত্য কথাটি বেরিয়ে আসছে, সেটিকেও তিনি সহ্য করতে পারছেন না। তিনি প্রভুদের সন্তুষ্ট করতে নির্বাচন কমিশনারদের অস্তিত্বেও আঘাত করছেন।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জিয়াউল হক, অধ্যাপক সুকোমল বড়ূয়া, সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!