Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | চবির শাটল ট্রেন ক্রমেই অনিরাপদ হয়ে পড়ছে

চবির শাটল ট্রেন ক্রমেই অনিরাপদ হয়ে পড়ছে

CU-Train-20170714105853

নিউজ ডেক্স : ছিনতাইয়ের ফলে ক্রমেই অনিরাপদ হয়ে পড়ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাটল ট্রেন চলাচল। মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে ফের বৃহস্পতিবার চলন্ত ট্রেনে ছিনতাইয়ের শিকার হলেন চবির দুই ছাত্র। দৃশ্যপটে আবারো সেই শাটল ট্রেনের দরজা ও ক্যান্টনমেন্ট এলাকা।

তবে এবার অল্পতেই বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পেলেন ছিনতাইয়ের শিকার ভাষা তত্ত্ব বিভাগে বিভাগের আরাফাত কবির ও অর্থনীতি বিভাগের মাহমুদুল হাসান। তারা দুজনেই ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। তবে খোয়াতে হয়েছে প্রিয় মোবাইল ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র।

ছিনতাইয়ের শিকার আরাফাত কবির জাগো নিউজকে বলেন, ক্লাস শেষে তাড়াহুড়ো করে বিকেলের ট্রেনে উঠি। এসময় ভিড়ের কারণে জায়গা না পেয়ে বাধ্য হয়ে ট্রেনের দরজার সামনে বসি।  আমার পাশে অর্থনীতি বিভাগের মাহমুদুল হাসান ছিল।

ট্রেনটি ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে অল্প কিছু দূর এলে কিছু বুঝে উঠার আগেই হাতে থাকা ব্যাগ ও মোবাইল টান মারে এক ছিনতাইকারি। এসময় ট্রেনের হাতল ধরে থাকায় অল্পের জন্য চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে যায়নি।

সম্প্রতি গত  সোমবার (১০জুলাই) একই স্থানেই শাটল ট্রেনে ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে মারাত্মকভাবে আহত হন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী নওরীন আহমেদ। এসব ঘটনায় শিক্ষার্থীরা মনে করছেন ছিনতাইকারীদের ‘নিরাপদ’ স্পটে পরিণত হয়েছে সংরক্ষিত সামরিক এলাকাটি।

শুধু দিনে নয় রাতেও ঘটছে এ ধরনের ঘটনা। ফলে ছিনতাইকারীদের নিয়মিত শিকারে পরিণত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এতে কারো হারাতে হচ্ছে মূল্যবান জিনিসপত্র। কেউ হচ্ছেন আহত।

বারবার এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলেও আইন শৃঙ্গলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছে না কার্যকর কোনো উদ্যোগ। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় শাটল ট্রেন ও ক্যান্টনমেন্ট এলাকাটি ক্রমেই ভয়ংকর ও অনিরাপদ হয়ে উঠছে।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ছিনতাই প্রবণতা বৃদ্ধির পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অসচেতনতাও এর জন্য অনেকাংশে দায়ী। সতর্ক ও নিষেধ করা সত্ত্বেও ট্রেনের দরজার পাশে বসেই যাতায়াত করছে শিক্ষার্থীরা। এতে করে নিজেদেরকেই ছিনতাইয়ের শিকারে পরিণত করছে তারা।

এ বিষয়ে ষোলশহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাকির হোসেন বলেন, দরজায় না বসার নির্দেশনা দেয়ার পরও তা মানছে শিক্ষার্থীরা। রেলওয়ে পুলিশ থেকে এ ব্যাপারে সচেতন করে মাইকিংও করা হয়েছে। তবে ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় আমরাও তৎপরতা বাড়িয়েছি।

জানা গেছে, প্রতিদিন চবিতে দুটি শাটল ট্রেন চলাচল করে। প্রতিটিতে ৯টি করে ১৮টি বগি আছে। প্রতি বগিতে ১৪৪টি করে মোট আসন আছে ২ হাজার ৫৯২টি। এছাড়া একটি ডেমু ট্রেন রয়েছে যাতে আসন সংখ্যা মাত্র ১৫০টি আসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২৪ হাজার শিক্ষার্থীর ৮০ ভাগই ট্রেনে যাতায়াত করে। যা মোট আসনের ৭ গুণ।

ফলে পর্যাপ্ত বগির অভাবে শিক্ষার্থীরা অনেকটা বাধ্য হয়েই দরজায় দাঁড়িয়ে, বসে ও ছাদে যাতায়াত করছে। যার কারণে ‘শিক্ষার্থীদের অসচেতনতা’ এ অভিযোগ টি মানতে একেবারেই নারাজ তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাংবাদিকতা বিভাগের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, খালি আমাদের সচেতন হবার কথা বলেন, কিন্তু শাটল ট্রেন চলাচল নিরাপদ করতে প্রশাসন কতটা সচেতন? সবাই যাতে নিরাপদে যাতায়াত করতে পারে এজন্য বগি বৃদ্ধি করুক। আমরা কেউ ইচ্ছে করে দরজায় বসতে চাই না।

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববদ্যালয়ের প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুঠোফোনে কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি অফিস খুললে এ বিষয়ে কথা বলবেন বলে জানান।

-জাগো নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!