Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | এটিএম বুথে বিশুদ্ধ পানি, প্রতি লিটার ৬০ পয়সা

এটিএম বুথে বিশুদ্ধ পানি, প্রতি লিটার ৬০ পয়সা

P-12-5-16

নিউজ ডেক্স : অটোম্যাটেড টেলার মেশিনে (এটিএম) টাকা মেলে। এটা সবার জানা। এ কারণে গ্রাম-শহর সবখানে বসেছে বিভিন্ন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এটিএম বুথ। যেখান থেকে চাইলেই টাকা নিতে পারেন গ্রাহকরা। শুধু প্রয়োজন হয় এটিএম কার্ডের। কিন্তু তাই বলে ওয়াটার (পানি) এটিএম বুথ! শুনতে নতুন মনে হলেও শহরবাসীর মধ্যে সুপেয় পানি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো নগরীতে স্থাপন করা হল ওয়াটার এটিএম বুথ। টাকা উত্তোলনের মতোই এ বুথ থেকে পানি উত্তোলন করা যাবে।

নগরীর খুলশী-১ নম্বর সড়কের মুখে খুব পরিপাটি করে ছোট্ট পরিসরে এ বুথ স্থাপন করা হয়েছে। ওয়াটার ইনোভেশন সাইয়েন্স এন্ড টেকনোলোজি নামে একটি আমেরিকান কোম্পানির অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ড্রিংকওয়েল কোম্পানি ওয়াটার বুথটি স্থাপন করে। গত ১৫ দিন আগে পরীক্ষামূলকভাবে স্থাপন করা এই বুথে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান ড্রিংকওয়েলের এরিয়া ম্যানেজার মোহাম্মদ মনজুরুল আলম।

জানুয়ারির শুরুতে চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি ইঞ্জিনিয়ার একেএম ফজলুল্লাহ এ বুথের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। নগরবাসীর পানির চাহিদা মেটাতে এবার এটিএম বুথের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের এ উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসা ও ড্রিংকওয়েল।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, এ পানি সংগ্রহ করতে গেলে প্রথমে গ্রাহকের লাগবে রেজিস্ট্রেশন। এরপর গ্রাহককে একটি এটিএম কার্ড সরবরাহ করা হবে। এতে খরচ হবে ২০০ টাকা। এ টাকার মধ্যে ১০০ রেজিস্ট্রেশন ফি। বাকী ১০০ টাকা দিয়ে রিচার্জ করে পানি সংগ্রহ করতে পারবেন গ্রাহক। এতে লাগবে ২ কপি ছবি ও ১ কপি ভোটার আইডি কার্ড। প্রতি লিটার পানির দাম ৬০ পয়সা। সর্বনিম্ন ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ইচ্ছেমতো রিচার্জ করতে পারবেন গ্রাহকরা। পানি সংগ্রহের জন্য পাত্র কাস্টমারকে নিয়ে আসতে হবে।

ড্রিংকওয়েল উল্লেখিত বুথ থেকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের পাশাপাশি আরো তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এ বুথ স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। স্থানগুলো হচ্ছে- হালিশহরস্থ নয়াবাজার, আগ্রাবাদ বাদামতলী মোড় ও সদরঘাট সাহেব বাজার এলাকা। এসব বুথ স্থাপনের কাজ চলছে বলে জানালেন মোহাম্মদ শফিকুর রহমান চৌধুরী। গ্রাহকদের সাড়ার উপর নির্ভর করে চট্টগ্রাম নগরীতে পর্যায়ক্রমে ১০০ বুথ করার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানটি।

তিনি আরো জানান, কোন ব্যক্তি ড্রিংকওয়েলের গ্রাহক হলে সংশ্লিষ্ট বুথের মধ্যেই রিচার্জ করতে পারবেন। এ কাজের জন্য একজন অপারেটর রাখা হয়েছে। চট্টগ্রামের একজন গ্রাহক তার রেজিস্ট্রেশন কার্ড দিয়ে ঢাকার বুথ থেকেও পানি উত্তোলন করতে পারবেন। পুরো ব্যবস্থাপনা কম্পিউটারাইজড জানিয়ে মোহাম্মদ মনজুরুল আলম বলেন, কার্ড রিচার্জ করলে কম্পিউটারের পর্দায় সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের (কার্ডের) ব্যালেঞ্চ ও পানি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য দেখা যাবে।

এদিকে খুলশী বুথে থাকা ড্রিংকওয়েলের সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ শফিকুর রহমান চৌধুরী জানান, এখানে দৈনিক গড়ে ৩৫০/৪০০ লিটার পানি বিক্রি হচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে এটা আরো বাড়বে নিঃসন্দেহে। চট্টগ্রাম ওয়াসার সাথে যৌথ উদ্যোগে ওয়াসার মূল লাইন থেকে পানি সংগ্রহ করা হচ্ছে। লাইনের সংযোগস্থলে মেশিন বসিয়ে তাৎক্ষণিক পানি বিশুদ্ধ করার পর বিক্রি করা হয়। এখানে ওয়াসার মিটার লাগানো আছে। সেই অনুযায়ী বিল পরিশোধ করা হয় বলেও জানান তিনি।
চট্টগ্রাম ওয়াসা থেকে জানা গেছে, ড্রিংকওয়েল ওয়াটার কোম্পানি আমেরিকা ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাফল্যের সঙ্গে এই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ঢাকায় ইতোমধ্যে ১৪৪টি ওয়াটার এটিএম বুথের মাধ্যমে গ্রাহকদের সেবা প্রদান করা হচ্ছে। আরো ২০০টি স্থাপনের কাজ শুরু করে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

এ বিষয়ে ওয়াটার এটিএম বুথ স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম জানান, ড্রিংকওয়েল ওয়াটার এটিএম বুথ নামের পাইলট সিস্টেমটি নগরবাসীর বিশুদ্ধ পানির চাহিদা মেটাতে অনেকখানি কাজে দেবে। এটি পুরোমাত্রায় বাস্তবায়ন হলে বুথ থেকে সারাক্ষণ পানি সংগ্রহ করতে পারবেন গ্রাহকরা। সবস্তরের মানুষ এখান থেকে পানি সংগ্রহ করতে পারবেন।

সূত্র : দৈনিক আজাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!