ব্রেকিং নিউজ
Home | ব্রেকিং নিউজ | লোহাগাড়ায় আসামির দায়ের কোপে পুলিশ কনস্টেবলের হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন

লোহাগাড়ায় আসামির দায়ের কোপে পুলিশ কনস্টেবলের হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন

এলনিউজ২৪ডটকম : লোহাগাড়ার পদুয়ায় আসামির দায়ের কোপে পুলিশ কনস্টেবল মো. জনি খানের (২৮) বাম হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এ ঘটনায় অপর কনস্টেবল শাহাদাত হোসেন (২৭) ও মামলার বাদী আবুল হোসেন কালু (৪০) আহত হয়েছেন। রোববার (১৫ মে) সকাল ১০টার দিকে ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের আঁধার মানিক লালারখিল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, গত ২৪ মার্চ অনধিকার প্রবেশ ও মারামারির অভিযোগে পদুয়া লালারখিল এলাকার আবুল হোসেন কালু বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় একই এলাকার মৃত আলী হোসেনের পুত্র কবির আহমদকে (৩৫) আসামি করা হয়। রোববার সকালে থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) ভক্ত চন্দ্র দত্তের নেতৃত্বে এএসআই মজিবুর রহমান, কনস্টেবল মো. জনি খান ও কনস্টেবল শাহাদাত হোসেন আসামি কবির আহমদকে গ্রেপ্তার করতে তার বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় আসামি কবির আহমদ গ্রেপ্তার এড়াতে ধারালো দা দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করেন। এতে দায়ের কোপে কনস্টেবল মো. জনি খানের বাম হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এছাড়া পুলিশের আরেক কনস্টেবল শাহাদাত হোসেন ও মামলার বাদী আবুল হোসেন আহত হন। তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। ঘটনার পর পরই আসামি কবির আহমদ পালিয়ে যায়।

সরেজমিনে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঘটনাস্থলে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। টিনের দেওয়াল ও ছাউনীযুক্ত বসতঘরে আসামি কবির আহমদের বসবাস। তবে তিনি সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন না। মাঝে মধ্যে বাড়িতে আসেন। কিছুক্ষণ অবস্থান করে চলে যান। ঘটনার পর থেকে ঘটনাস্থলের আশপাশের কয়েকটি বাড়িতে জনশূণ্য দেখা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানায়, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কবির আহমদ তার বাহিনীকে খবর দেয়। তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে ধারালো অস্ত্র নিয়ে পুলিশের উপর আক্রমণ করে। মামলার বাদী আবুল হোসেন কালু ও আসামি কবির আহমদের সাথে দীর্ঘদিন যাবত জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এছাড়া তারা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করেন। আসামি পক্ষের লোকজনের ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ধারালো দাসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেন।

লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ সোহেল জানান, ধারালো দায়ের কোপে আহত দুই কনস্টেবলসহ ৩ জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তার মধ্যে এক কনস্টেবলের বাম হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অন্য দুই জনের হাতেও ধারালো দায়ের আঘাত ছিল। আহত কনস্টেবল মো. জনি খান ও মো. আবুল হোসেন কালুকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আহত অপর কনস্টেবল শাহাদাত হোসেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার জানান, বিকেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাম হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন কনস্টেবল মো. জনি খানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টার যোগে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। সেখানে তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী নোমান জানান, পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় জতিদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন। ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার পূর্বক আইনের আওতায় আনতে পুলিশী তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!