নিউজ ডেক্স: চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ২৮ নম্বর নিউরো ওয়ার্ডে কাতরাচ্ছে ছয় বছরের আরাধ্য বিশ্বাস। সে শুধু নিজের নাম আর বাবার নাম বলতে পারে। আরাধ্য বলছে, তার বাবার নাম দীলিপ বিশ্বাস। এর বেশি কিছু তার মনে নেই। মনে নেই ঠিকানাও।
বুধবার (২ এপ্রিল) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত আরাধ্যকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মাথায় আঘাত পাওয়া আরাধ্য হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাঁদছে অঝোরে। চমেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, আরাধ্যর দুই পা ভেঙে গেছে, মুখেও আঘাত লেগেছে। আরও কিছু পরীক্ষা করা হবে।
জানা যায়, ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাচ্ছিলেন ঝিনাইদহের দিলীপ বিশ্বাস। বুধবার সকালে চট্টগ্রামের মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তিনি ও তার স্ত্রী। তবে সঙ্গে থাকা তাদের ৬ বছর বয়সি মেয়ে আরাধ্য বিশ্বাস বেঁচে গেছে অলৌকিকভাবে। তারা ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
নিহত দিলীপ বিশ্বাসের এক প্রতিবেশী গণমাধ্যমকে জানান, দিলীপ বিশ্বাস স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঢাকায় বসবাস করতেন এবং একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। ঈদের ছুটিতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কক্সবাজারে ঘুরতে যাচ্ছিলেন।
বুধবার (২ এপ্রিল) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যাত্রীবাহী পরিবহনের সঙ্গে মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এতে এখন পর্যন্ত ১০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে তিনজন নারী, দুজন শিশু ও পাঁচজন পুরুষ।
এদিকে গণমাধ্যমে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনার খবর প্রকাশের পরই নিহত দিলীপ বিশ্বাসের গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে চলছে শোকের মাতম। স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে বাড়ির পরিবেশ।
শৈলকূপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম খান বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর শুনেছি। তবে চট্টগ্রাম থেকে এখনও অফিশিয়ালি আমরা কোনো তথ্য পাইনি। যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। আপডেট তথ্য পেলেই গণমাধ্যমকে আমরা বিস্তারিত জানাতে পারব।’
