নিউজ ডেক্স : লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, সংসদ নির্বাচনের আগে দেশের ১৮ কোটি মানুষ নির্যাতিত হয়েছে। তাদের অসম্মান করে সংসদে যাওয়াটা মানবিক, সামাজিক, রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে গ্রহণযোগ্য নয়। যে বা যারা যাবেন, তারা জাতীয় বেইমান হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবেন।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর ডিওএইচএসের নিজ বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।
অলি বলেন, ২০১৪ সালের পর থেকে দেশ একদলীয় শাসনের দিকে অগ্রসর হয়েছে। ২০১৮ সালের ইলেকশনের মাধ্যমে একদলীয় শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে আমার নিজের চোখে দেখা ও অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, ২৯ ডিসেম্বর রাতে শতকরা ৬০-৭০ ভাগ ভোট পুলিশ, বিজিবি, ছাত্রলীগের অস্ত্রধারীরা এক হয়ে ব্যালট বাক্স ভর্তি করেছে।
তিনি বলেন, আশ্চর্যজনকভাবে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের ৮ জনকে বিপুল ভোটে জয়লাভের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। অন্য যেখানে বিরোধীদলের প্রার্থীরা নির্বাচিত হওয়ার কথা সেখানে নির্বাচিত না হয়ে জামানত হারিয়েছেন। অনেক কেন্দ্রে যেখানে বিরোধী প্রার্থীদের ৮০ ভাগ ভোট পাওয়ার কথা সেখানে শূন্য ভোট পেয়েছে। এ অবস্থায় ড. কামালের দুইজনসহ বিএনপির ছয়জনের বিজয় লাভ করা একটি অষ্টম আশ্চর্য ও বিস্ময়কর ঘটনা।
খালেদা জিয়ার মুক্তির বিনিময়ে বিএনপির এমপিদের সংসদে যাওয়ার একটা কথাবার্তা হচ্ছে এ বিষয়ে কর্নেল অলি বলেন, যদি এটা সত্য হয়ে থাকে, তাহলে আমি মনে করি কেউ লোভের বশীভূত হয়ে বেগম জিয়াকে ব্লাকমেইল করছে এবং বিএনপিকে বিপদগামী করছে।
খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, বেগম জিয়াকে যতদূর জানি বা চিনি, আমার থেকে তাকে বেশি কেউ ঘনিষ্ঠভাবে জানে না। রাজনৈতিক, পারিবারিক ও সামাজিকভাবে আমি তার সঙ্গে যেভাবে সংশ্লিষ্ট ছিলাম এভাবে বিএনপির আর কেউ ছিল না। আমি যতদূর জানি, তিনি কখনও নিজের সুবিধার জন্য কারও সঙ্গে আপস করবেন না।
নির্বাচিত আট এমপি শপথ নিলে এলডিপির অবস্থান কী হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে কর্নেল অলি বলেন, লোভ ও জাতির সঙ্গে বেইমানি করা কোনো কাজে এলডিপি কখনও সমর্থন করবে না। ১৮ কোটি ভোটারের সঙ্গে বেইমানি করে যদি সংসদে যায় সেটা আমি সমর্থন করব না।
সোনাগাজীতে পুড়িয়ে মারা নুসরাতের বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে একাধিক জায়গায় প্রতিনিয়ত রেপ (ধর্ষণ) করা হচ্ছে। এই প্রথমবার সোনাগাজীর ঘটনা নিয়ে সারাদেশ উত্তপ্ত হয়েছে। এখানে বোধগম্য নয়, এই রেপটাকে এত গুরুত্ব কেন দিল। আগের রেপগুলো যেখানে হয়েছে সেগুলো কেন গুরুত্ব পেল না।
তিনি আরও বলেন, সোনাগাজীতে রেপ হওয়ার কারণে প্রধানমন্ত্রী ওই মেয়ের মা-বাবাকে ডেকে আর্থিক অনুদান দিয়েছেন। আগামীতেও তাদের আর্থিক অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে আমি শুনেছি। তাকে এজন্য আমি এলডিপির পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আমার মনে একটি প্রশ্ন, তিনি একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অন্যান্য যেসব রেপ হয়েছে, তাদের সুযোগসুবিধাগুলো কেন দিলেন না? এবার যেভাবে রেপিস্টগুলোকে ধরে নিয়ে আসলো, অন্য জায়গারগুলো এখনও কেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এগুলোর বিচার হচ্ছে না। রেপের বিচার এদেশে নেই বললেই চলে। এই প্রথমবার দেখলাম সোনাগাজীর ঘটনায় দ্রুত ধরা পড়েছে।