এলনিউজ২৪ডটকম : লোহাগাড়ার আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কলাউজান ইউনিয়ন পরিষদ সড়কের কাজ নির্দিষ্ট সময়ে শেষ না হওয়ায় দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি অজুহাত দেখিয়ে কাজ বন্ধ রেখেছেন ঠিকাদার। আমিরাবাদ পুরাতন বিওসি এলাকা থেকে সড়কের এক কিলোমিটার কার্পেটিং প্রকল্প হাতে নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, আমিরাবাদ ইউপি থেকে কলাউজান ইউপি সড়কটির দৈর্ঘ্য ৮.৩৩ কিলোমিটার। এরমধ্যে আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের পুরাতন বিওসি এলাকা থেকে সড়কের এক কিলোমিটার অংশে কার্পেটিংয়ের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। কাজ পান আনোয়ারার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স রিদুয়ানুল হক এন্ড ব্রাদার্স। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৯ লাখ টাকা। ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি সড়কের উক্ত অংশে কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু হয়। একই সনের ২৩ আগস্ট প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় চলতি সনের ১০ মে পর্যন্ত দুই দফায় মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। ইতোমধ্যে শেষে হয়েছে প্রকল্পের ৭০ ভাগ কাজ। কিন্তু ঠিকাদার নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে প্রায় দেড় বছর যাবত কাজ বন্ধ রেখেছেন বলে জানা গেছে ।

জানা যায়, আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কলাউজন ইউনিয়ন পরিষদ সড়কটি খুবই জনগুরুত্বপূর্ণ। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাফেরা করেন। বিশেষ করে আমিরাবাদ ইউপি অংশের রহমানিয়া পাড়া, সিকদার পাড়া, পাতিলা পাড়া, মৌলভী পাড়া, হিন্দু পাড়া, বাইন্যা পাড়া, রোয়াই পাড়া ও হাছির পাড়ার লোকজন প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন। এছাড়া সুখছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়, সুখছড়ি রহমানিয়া মাদ্রাসা, সুখছড়ি রহমানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মৌলভী পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই সড়ক দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসা করে। দীর্ঘদিন সড়কের সংস্কার অংশে কাজ বন্ধ থাকায় স্থানীয়দের যাতায়াত ও কৃষকের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে নানা সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের এক কিলোমিটার অংশে কার্পেটিংয়ের জন্য বিছানো হয়েছিল পাথর ও বালু। দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকায় পাথর ও বালুর আস্তরের উপর মাটি পড়ে কাঁচা সড়কের মতো পরিণত হয়েছে। এছাড়া বৃষ্টি ও ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে সড়কের একাধিক স্থানে ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের সংস্কারাধীন অংশে যানবাহন চলে হেলেদুলে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন এলাকাবাসী।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স রিদুয়ানুল হক এন্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী রিদুয়ানুল হক জানান, করোনা ও নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় কাজ বন্ধ আছে। শীঘ্রই পুণরায় কাজ শুরু করা হবে।
আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম ইউনুচ জানান, সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে একাধিকবার অবহিত করা হয়েছে। পুণরায় কাজ আজ শুরু করবে, কাল শুরু করবে বলে কালক্ষেপন করে আসছেন। সড়কের কাজ শেষ না হওয়ায় এলাকাবাসী যাতায়াতে দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
লোহাগাড়া উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) ইফরাদ বিন মুনীর জানান, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবার আগে থেকেই কাজ করার আশ্বাস দিয়ে কালক্ষেপন করে আসছেন ঠিকাদার। মেয়াদ পার হবার পরও কাজ শেষ করতে না পারায় ঠিকাদারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ও পুণরায় টেন্ডারপূর্বক সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ করার জন্য লিখিতভাবে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এছাড়া উক্ত ঠিকাদার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে একাধিক সড়কের কাজ শেষ না করে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ রয়েছে বলে তিনি জানান।