Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | টানা বর্ষণে বান্দরবানে সড়ক ধসে বিচ্ছিন্ন নাইক্ষ্যংছড়ি

টানা বর্ষণে বান্দরবানে সড়ক ধসে বিচ্ছিন্ন নাইক্ষ্যংছড়ি

নিউজ ডেক্স : টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। আজ বুধবারও (২৮ জুলাই) বন্যার পানিতে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী, ঘুমধুম, সোনাইছড়ি ইউনিয়নে পাহাড় ধস হয়েছে এবং সড়ক ধসে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে উপজেলাটির সাথে।

অপরদিকে, আলীকদম-চকরিয়া-লামা সড়কের শীলেরতোয়া সহ কয়েকটি স্থানে বন্যার পানিতে সড়ক ডুবে যাওয়ায় আলীকদম উপজেলার সাথেও দ্বিতীয়দিনের মতো সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

এদিকে, অব্যাহত ভারী বর্ষণে বান্দরবানে সাঙ্গু, মাতামুহুরী, বাকখালী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে লামা উপজেলার রুপসীপাড়া সহ আশপাশের এলাকা এবং বান্দরবান সদরের পুশ্চিম বালাঘাটা, ইসলামপুর’সহ আশপাশের বিভিন্ন স্থানে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

কোনাক খালের পানিতে ডুবে গেছে মিয়ানমার সীমান্তের শূন্যরেখায় আশ্রয় নেয়া ঘুমধুমের তুমব্রু কোনাপাড়া রোহিঙ্গা আশ্রয় কেন্দ্রও।

অপরদিকে, নদী ও খালের পানির স্রোতে ভেঙ্গে ভেসে গেছে নিম্ন আয়ের মানুষের বহু ঘরবাড়িও। নদী তীরবর্তী লোকজনেরা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে।

বাইশারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম ও সোনাইছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনিমং মারমা জানান, বৃষ্টিতে পাহাড় ধস এবং সড়কের বিভিন্ন স্থানে ধসে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সড়কের। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে উপজেলার সাথে। বাইশারী-ঈদগা সড়কের পানেরছড়া নামকস্থানে সড়কের বিশাল একটি অংশ ধসে গেছে বন্যার পানিতে।

অপরদিকে, অব্যাহত বৃষ্টিতে বান্দরবান জেলা সদর সহ আশপাশের এলাকাগুলোতে পাহাড় ধসে প্রাণহানির শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে বর্ষণে রুমা, থানচি, রোয়াংছড়ি এবং সদর উপজেলার অভ্যন্তরিন সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে পড়েছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মীরা পাহাড় ধসের মাটি সরিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। অন্যদিকে পাহাড় ধসের ঝুকিতে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে প্রশাসন এবং বান্দরবান ও লামা পৌরসভার পক্ষ থেকে।

বান্দরবান মৃত্তিকা ও পানি সংরক্ষণ কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহাবুবুল ইসলাম জানান, বৃষ্টিপাতের পরিমান বুধবার সকালের পর থেকে আরও বেড়েছে। বুধবার সকাল নয়টা পর্যন্ত গতচব্বিশ ঘন্টায় জেলা সদরে বৃষ্টিপাতের পনিমাণ ছিলো ৪৫ মিলি মিটার। তবে উপজেলা গুলোতে বৃষ্টিপাতের পরিমান বেশি হওয়ায় নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পাহাড় ধসে প্রাণহানির শঙ্কাও বাড়ছে।

এদিকে, বুধবার বান্দরবানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জরুরি ভিত্তিতে জেলা প্রশাসন সম্মেলনকক্ষে দুর্যোগ ও করোনা পরিস্থিতি নিয়ে জেলা সভা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। জেলার বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্তা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা সভায় অংশ নেয়।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, “দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন জরুরি সভা করেছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় স্থানীয় প্রশাসন এবং জেলা প্রশাসন সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। বৃষ্টিতে উপজেলাগুলোতে পাহাড় ধসে সড়ক, ঘরবাড়ি এবং বৃষ্টিতে সড়ক ধসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পেয়েছি। প্রাণহানি ঠেকাতে পাহাড় ধসের ঝুকিতে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্যোগকারীদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসাবে খুলে দেয়ার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।” -আজাদী অনলাইন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!