ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক কবে ছয় লেইন হবে?

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক কবে ছয় লেইন হবে?

নিউজ ডেক্স : পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সাথে সারা দেশের পর্যটকের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক। মহাসড়কটির উন্নয়নে এখনো কোনো ধরনের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

সারা বছরই দেশ-বিদেশের লাখ লাখ পর্যটক সড়ক পথে কক্সবাজার যান। অথচ গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কটি এখনো দুই লাইনের সড়কই রয়ে গেল। বিদ্যমান মহাসড়কটি প্রশস্ত করে ৬ লাইনে উন্নীতকরণ এবং এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে বলা হলেও এখনো পর্যন্ত কার্যকর কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। কক্সবাজার মহাসড়কের যাত্রীদের এখন একটিই প্রশ্ন, কক্সবাজার মহাসড়ক ৬ লাইনের কবে হবে?

বিদ্যমান এই মহাসড়কে ভয়ঙ্কর ৮৪টি ব্ল্যাক স্পট (দুর্ঘটনার বিপজ্জনক বাঁক) রয়েছে বলে জানান এই সড়কের পরিবহন চালক ও শ্রমিকরা। সড়কটি প্রশস্ত না হলেও বেপরোয়া গতিতে প্রতিদিন হাজার হাজার গাড়িতে করে পর্যটকেরা কক্সবাজারে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় পড়ছেন। সড়কের তুলনায় গাড়ি ও যাত্রীর সংখ্যা ৪ গুণ বেশি। এতে করে এই সড়কে প্রতিদিনই বাড়ছে দুর্ঘটনা। সেই সাথে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই মহাসড়কে প্রতিদিন বৈধ বাস, ট্রাক (এসি-নন এসি বাস ও লোকাল ৫ শতাধিক, ট্রাকসহ অন্যান্য পিকআপ মিলে আরো ৫শ) চলে প্রায় ১ হাজারের মতো। অবৈধ গাড়ি চলে ২ হাজারের (অনুমোদনবিহীন নছিমন-করিমন, চার চাকার ট্রলি, ইজিবাইক, সিএনজি, চার চাকার খোলা পিকআপ) মতো। সব মিলিয়ে প্রতিদিন ৩ হাজার গাড়ি চলাচল করে বলে জানান আরকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক মো. ইয়াছিন।

তিনি বলেন, কক্সবাজার মহাসড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনায় প্রতিদিনই প্রাণ ঝরছে সড়কে। এর অন্যতম কারণ হলো, খোলা ট্রাকে করে লবণ পরিবহন। লবণের পানিতে রোড পিচ্ছিল হয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। অথচ খোলা লবণ পরিবহন সরকারিভাবে নিষিদ্ধ। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে রাত থেকে ভোর পর্যন্ত খোলা ট্রাকে করে লবণ পরিবহনের কারণে কক্সবাজার মহাসড়কে প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছে। তাছাড়া এই মহাসড়কে সরকারিভাবে সড়ক ও জনপথ এবং হাইওয়ে পুলিশ কর্তৃক নির্ধারিত ৮৪টি বিপজ্জনক বাঁক রয়েছে। রয়েছে সরু ব্রিজ। বিভিন্ন এলাকায় বসছে হাট-বাজার। এগুলোর কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে, বাড়ছে মৃত্যুও।

তিনি জানান, প্রতি বছর এই মহাসড়কে দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৫শ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। গত তিন মাসে এই সংখ্যা ৩ শতাধিক ছাড়িয়েছে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে এই সড়কে।

সড়ক ও জনপথের দোহাজারী বিভাগীর নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার বিদ্যমান মহাসড়কটি ৬ লাইনে উন্নীতকরণের জন্য জাইকা আগ্রহ প্রকাশ করে আমাদের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা বিস্তারিত আকারে প্রস্তাব দেওয়ার জন্য বলেছি। এছাড়া চট্টগ্রাম-কক্সবাজার এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ করছে বুয়েট। এক বছর আগে তারা কাজ শুরু করেছে। বুয়েটের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হলে মন্ত্রণালয় এই ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। তবে দুর্ঘটনা কমানোর জন্য সাময়িকভাবে বাঁকগুলো সোজা করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি।

তিনি জানান, প্রথমে বঙ্গবন্ধু টানেলের আনোয়ারা অংশ থেকে মইজ্জারটেক পর্যন্ত ৬ লাইনের সড়ক করছি। সেখান থেকে পটিয়া বাইপাস পর্যন্ত বাঁকগুলো সোজা করব। এরপর পটিয়া থেকে দোহাজারী পর্যন্ত বাঁক সোজা করব। এভাবে ধাপে ধাপে বাঁকগুলো সোজা করার উদ্যোগ নেব। এটা স্বল্পমেয়াদি উদ্যোগ। দীর্ঘমেয়াদি হিসেবে ৬ লাইনের সড়কের উদ্যোগও চলমান রয়েছে। -আজাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!