নিউজ ডেক্স : প্রতীক্ষিত কালুরঘাট রেল-কাম সড়ক সেতু হচ্ছে দ্বিতল বিশিষ্ট। উপরে দুই লেইনের সড়ক, নিচে রেললাইন। সেতুর নতুন ডিজাইন এভাবেই করা হচ্ছে। সেতুর প্রাথমিক সমীক্ষা রিপোর্ট মে মাসে রেল মন্ত্রণালয়ে উপস্থাপন করা হবে। তাতে কোনো ধরনের সংযোজন-বিয়োজন না থাকলে জুনে নতুন ডিজাইনের কাজ চূড়ান্ত হবে। এরপর একনেক সভায় উঠবে। একনেকে পাস হলে দ্রুত নির্মাণ কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।
সংসদ সদস্য ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ গতকাল রেল ভবনের সভা কক্ষে কালুরঘাট রেল-কাম সড়ক সেতুর অগ্রগতি নিয়ে রেল মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও কোরিয়ান প্রতিনিধির সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সভায় এই তথ্য জানানো হয়। এ সময় রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কোরিয়ান প্রতিনিধিবৃন্দ সেতুটির সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে মোছলেম উদ্দিনকে অবহিত করেন। মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ইউশিন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনের কান্ট্রি ম্যানেজার কোণ উক পার্ক, কালুরঘাট রেল-কাম সড়ক সেতুর প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. গোলাম মোস্তফা, ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালটেন্টস লি. এর সিনিয়র ইঞ্জিয়ার মো. আনোয়ারুল হক, ডেভেলপমেন্ট ডিজাইনের জেনারেল ম্যানেজার মো. রিয়াজুর রহমান ও দায়িত্বপ্রাপ্ত রেলওয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ।
সেতুর অগ্রগতি বিষয়ে সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদ জানান, কালুরঘাট সেতু হবে দ্বিতল বিশিষ্ট। উপরে যানবাহন চলাচলের জন্য দুই লেইনের সড়ক এবং নিচে হবে রেললাইন। আজকে (গতকাল) রেল ভবনে সেতুর সর্বশেষ অগ্রগতি নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কোরিয়ান প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমার বৈঠক হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, মে মাসে প্রাথমিক সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করবে। এরপর জুনে চূড়ান্ত করা হবে। জুনে নকশা চূড়ান্ত হলে একনেকে চলে যাবে। একনেকে অনুমোদনের পরপরই এই বছরের মধ্যে সেতুর কাজ শুরু হবে।
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ আমলে কর্ণফুলী নদীর উপর নির্মিত কালুরঘাট সেতুর ব্যবহার এখন অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। সেতুরে উভয় পাশের ডেক ও লোহার বেড়া প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে। সেতুতে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন হয়েক হাজার যানবাহন চলাফেরা করছে। প্রতি বছর কর্তৃপক্ষকে সেতুটি মেরামত করতে হয়। ১৯৩১ সালে নির্মিত এই সেতুটি ছিল রেল সেতু। ষাটের দশকে এটিকে রেল-কাম সড়ক সেতুতে রূপান্তর করা হয়।
কালুরঘাট সেতুটি এখন দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসীর প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সেতুর উভয় পাশের মানুষ এই সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু নানা কারণে সেতুর নির্মাণ কাজ পিছিয়ে গিয়েছিল। এখন কোরিয়ান দাতা সংস্থা নতুন কালুরঘাট সেতুর প্রি-ফিজিবিলিটি স্টাডি করছে। ফিজিবিলিটি স্টাডি, ডিজাইন ও বাজেট পুরোটাই তারা করছে।
এদিকে নতুন সেতু নির্মাণ কার্যক্রম বিলম্বিত হওয়ায় বিদ্যমান সেতু মেরামতের জন্য বুয়েটের দ্বারস্থ হয়েছে রেলওয়ে। পুরনো সেতুটি মেরামতের জন্য বুয়েটকে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ দিতে যাচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ। বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দলের পরামর্শ অনুয়ায়ী সেতুটি মেরামত করা হবে। -আজাদী