Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | ঐতিহাসিক জব্বারের বলী খেলার ১১০তম আসর আজ

ঐতিহাসিক জব্বারের বলী খেলার ১১০তম আসর আজ

sarif-911-800x456 (1)

নিউজ ডেক্স : বছর ঘুরে আবারো ফিরে এলো আবদুল জব্বারের বলী খেলা। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত শত বছরের ঐতিহ্যবাহী লোকক্রীড়া আবদুল জব্বারের বলী খেলার আজ বসবে ১১০তম আসর। লালদিঘি মাঠে বিকেল ৪টায় এবারের প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করবেন চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান এবং প্রধান অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম সিটি কর্র্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বদরপাতি এলাকার সম্ভ্রান্ত পরিবারের আবদুল জব্বার সওদাগর বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে বলীখেলা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলেন। সে ধারা অব্যাহত রেখেছেন তার

পরিবারের অপরাপর সদস্যরা। একটি বারের জন্যও বন্ধ না হওয়া এ প্রতিযোগিতা ওনার মৃত্যুর পর জব্বারের বলী খেলা নামে সারা দেশে এবং বর্তমানে সারা বিশে^ পরিচিতি লাভ করেছে। এবারেও বলী খেলাকে ঘিরে গতকাল থেকে বসেছে ৩ দিনের গ্রামীণ লোকজ মেলা। ইতিমধ্যেই বৃহত্তর চট্টগ্রাম ছাড়াও সারাদেশ থেকে রকমারি লোকজপণ্যের পসরা নিয়ে বিক্রেতারা মেলায় বসে গেছেন। সেখানে গৃহস্থালি থেকে শুরু করে ব্যবহারিক জীবনের সবকিছুই পাওয়া যাবে। লালদিঘির আশপাশতো বটেই, তার পাশাপাশি জেল রোড, আন্দরকিল্লা, কোতোয়ালী মোড়, শহীদ মিনার পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে এ বিকিকিনি’র পরিধি। মেলায় হাত পাখা, ফুলের ঝাড়–, দা, বটি, ছুরি, পিঠা তৈরির পিঁড়ি, বেলচা, কারুকার্যখচিত আকর্ষণীয় মাটির ব্যাংক, ফুলের টব, ফুলদানি, শোপিচ, শীতল পাটি, গাছের চারা, বাঁশ ও বেতের তৈরি মোড়া, বাচ্চাদের খেলনা, বাঁশি, মুড়ি-মুড়কি, ফলমূল আর গহনা পাওয়া যাচ্ছে। আরো আছে চুড়ি-ফিতা, রঙিন সুতা, হাতের কাঁকন, নাকের নোলক, ঢোল, কাঠের তৈরি পুতুল, নকশী কাঁথা, খাঁচার পাখি ও মাটির কলস। ইতোমধ্যে ফুল ও ফলজ গাছ নিয়ে এসেছে অনেক নার্সারি, সঙ্গে রয়েছে মাটির টব, গাছের সার ও বীজ। সারাবছর মহানগরসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের মানুষ অপেক্ষার প্রহর গুণে এই মেলার জন্য। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শওকত আনোয়ার বাদল বলেন, বলী খেলার সকল প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে। গত ২/৪ দিন ধরে কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। লালদিঘির পূর্বকোণে তৈরি করা হয়েছে প্রায় ২০ ফুট বাই ২০ ফুট চতুর্ভুজ আকৃতির প্রতিযোগিতার মঞ্চ। মাটি থেকে প্রায় ৫ ফুট উপরে বালি দিয়ে মঞ্চটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে, যাতে করে দুর থেকেও এ প্রতিযোগিতা নির্বিঘেœ উপভোগ করা যায়। মঞ্চের চারিদিকে রশি দিয়ে ঘিরে দেয়া হবে। সেখানে শক্তি মত্তার লড়াইয়ে নামবেন কুস্তিগীররা। তিনি আরো বলেন, এখন পর্যন্ত বিভিন্ন জেলার দেড় শতাধিক বলী নাম তালিকাভুক্তি করেছে। গতবারের চ্যাম্পিয়ন চকরিয়ার জীবন বলী এবং রানার্স আপ কুমিল্লার শাহাজালাল বলীর সাথে ফোনে যোগাযোগ হয়েছে। এ দুজন এবারের শিরোপা লড়াইয়ে অংশ নেবেন। তবে নাম এন্ট্রি যতই হোক না কেন, মূল পর্বের জন্য ৫০ জনকে বাছাই করা হবে। এবারের চ্যাম্পিয়নকে ট্রফিসহ প্রাইজমানি ২০ হাজার টাকা এবং রানার্স আপ ১৫ হাজার টাকা ও ট্রফি প্রদান করা হবে। এছাড়া প্রথম রাউন্ডের বিজয়ী ৪০ জন বলীর প্রত্যেকে এক হাজার টাকা ও ট্রফি পাবেন। বলী খেলায় মুল রেফারির দায়িত্ব পালন করবেন সাবেক ফুটবলার ও সাবেক কাউন্সিলর এম এ মালেক। তিনি গত ৩২ বছর ধরে এই জব্বার আলীর বলী খেলায় মুল রেফারির ভুমিকা পালন করে আসছেন। তার নিখুঁত ও নিরপেক্ষ পরিচালনায় ইতিমধ্যে সকলের কাছে প্রশংসিত হয়েছে।

সূত্র : দৈনিক পূর্বকোণ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!