ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | শাহ আমানতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলে গতি ফেরেনি

শাহ আমানতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলে গতি ফেরেনি

নিউজ ডেক্স : করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতির দ্বিতীয় ঢেউ কিছুটা সামলে ওঠার ফলে শিথিল হয়েছে সরকারঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ। এরই ধারাবাহিকতায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে চালু হয়েছে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল।

কিন্তু চালু হওয়ার ১৪ দিনে বন্দরে নেমেছে মাত্র তিনটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। এসব ফ্লাইট যাত্রী নিয়ে এলেও ফিরতি যাত্রায় একটি নিয়েছে সবজি, বাকি দুটি গেছে ফাঁকা। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পুরোপুরি চালু না হওয়ার পেছনে স্বাস্থ্যকর্মী সংকটকেই দায়ী করেছেন দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ বন্দরের কর্মকর্তারা। যদিও চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দাবি, বন্দরে স্বাস্থ্যকর্মীর কোনো সংকট নেই। অন্য কোনো কারণে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনায় অসুবিধা হয়ে থাকতে পারে।

তারা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক প্লেনগুলো বন্দরে অবতরণ থেকে উড্ডয়ন করতে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকে। এসময়ের মধ্যে বিদেশ থেকে আসা যাত্রী এবং বিদেশগামী যাত্রীদের একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। স্বাভাবিকের পাশাপাশি করোনা সংক্রমণের পর থেকে আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী যাত্রীদের সুরক্ষার জন্য এখন আরও কিছু বাড়তি স্বাস্থ্যগত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে বিদেশগামী ও বিদেশফেরত যাত্রীদের শুরুতে করোনা নেগেটিভ সনদ যাচাই-বাছাই করা। করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ হলে সনদে সিলমোহর দেওয়া হয়। এরপর তাদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হয়। এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী নেই চট্টগ্রাম বন্দরে। ফলে কাগজে-কলমে চালু হলেও এখনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পুরোপুরিভাবে চালু করতে পারছে না বিমানবন্দরটি।

আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হওয়ার পর থেকে তিনটি ফ্লাইট চট্টগ্রাম বন্দরে এলেও একটি সবজি ও বাকি দুটি ফাঁকা অবস্থায় ফেরত গেছে। বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পুরোপুরি চালু করতে একটিমাত্র সংকট রয়েছে। আর সেটি হচ্ছে, আমাদের বন্দরে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী নেই 

Amanat.jpg

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে গত ১৭ আগস্ট থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। এরপর ১৪ দিনে বন্দরটিতে অবতরণ করেছে তিনটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। এরমধ্যে দুটি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এবং একটি এয়ার এরাবিয়ার। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট দুটি দুবাই থেকে, আর এয়ার এরাবিয়ার ফ্লাইটটি আসে শারজাহ থেকে। যাত্রী নিয়ে এলেও তিনটি ফ্লাইটই ফেরত গেছে যাত্রী ছাড়া। বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইট দুটি যাত্রী নামিয়ে ফাঁকা অবস্থায় ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। আর এয়ার এরাবিয়ার প্লেনটি বন্দর থেকে ১০ টনের মতো সবজি নিয়ে ফেরত যায়।

বন্দর কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে বর্তমানে তিনজন ডাক্তার ও চারজন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পুরোপুরি চালুর জন্য তাদের প্রতি শিফটে ছয়জন করে তিন শিফটে মোট ১৮ জন স্বাস্থ্যকর্মী প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর ঘোষণার পরদিন গত ১৮ আগস্ট ১৬ জন স্বাস্থ্যকর্মী চেয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কাছে একটি আবেদন করেন বন্দর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ জাবেদ। তবে চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতর থেকে এখনো কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

Amanat.jpg

আমার জানা মতে, চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে এ ধরনের সংকট থাকার কথা না। আমি গতকালও (২৮ আগস্ট) ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে এসেছি। সেখানে আমি নিজে চারজন ডাক্তার দেখেছি। তাছাড়া বিমানবন্দরে সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নামে একটি পদ থাকে। তার বিপরীতে বিভিন্ন উপজেলা থেকে ১২ জনকে পদায়ন করেছি। তাদের অন্য কোনো সমস্যার কারণে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করতে অসুবিধা হতে পারে। স্বাস্থ্যকর্মীর কোনো সংকট নেই 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের পরিচালক উইং কমান্ডার ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হওয়ার পর থেকে তিনটি ফ্লাইট চট্টগ্রাম বন্দরে এলেও একটি সবজি ও বাকি দুটি ফাঁকা অবস্থায় ফেরত গেছে। বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পুরোপুরি চালু করতে একটিমাত্র সংকট রয়েছে। আর সেটি হচ্ছে, আমাদের বন্দরে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী নেই। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অবতরণ থেকে উড্ডয়ন পর্যন্ত একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকে। এ সময়ের মধ্যে বিদেশ থেকে আসা ও বিদেশগামী যাত্রীদের নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যগত পরীক্ষা করতে হয়। বাকি সব যাচাই-বাছাই যথাসময়ে সম্পন্ন করা সম্ভব হলেও কর্মী সংকটে স্বাস্থ্যগত পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করি, দ্রুত সমাধান হবে।’

চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘আমার জানা মতে, চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে এ ধরনের সংকট থাকার কথা না। আমি গতকালও (২৮ আগস্ট) ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে এসেছি। সেখানে আমি নিজে চারজন ডাক্তার দেখেছি। তাছাড়া বিমানবন্দরে সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নামে একটি পদ থাকে। তার বিপরীতে বিভিন্ন উপজেলা থেকে ১২ জনকে পদায়ন করেছি। তাদের অন্য কোনো সমস্যার কারণে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করতে অসুবিধা হতে পারে। স্বাস্থ্যকর্মীর কোনো সংকট নেই। তাছাড়া বন্দর থেকে যে চিঠি পাঠানোর কথা বলেছেন, সেটিও আমি হাতে পাইনি। তাদের কোনো সমস্যা থাকলে পরিচালককে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।’ জাগো নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!