এলনিউজ২৪ডটকম : লোহাগাড়ার চরম্বায় তানজিনা নাছরিন কেমী (২০) নামে এক গৃহবধুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৬ এপ্রিল) বেলা ৩টার দিকে শ্বশুর বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত তানজিনা নাছরিন কেমী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ওয়াহেদের পাড়ার মো. এরশাদের স্ত্রী ও একই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের নাফারটিলা সিকদার পাড়ার প্রবাসী জয়নাল আবেদীনের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় দেড় বছর পূর্বে তারা সম্পর্ক করে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে তাদের দাম্পত্য জীবনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য দেখা দেয়। প্রায় ৮ মাস পূর্বে তাদের দাম্পত্য জীবনে এক পুত্র সন্তান জন্ম হয়। ঘটনারদিন বসতঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় এক গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহতের মা রুবি আক্তার জানান, বিয়ের পর থেকে স্বামী তার মেয়েকে বিভিন্নভাবে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছে। বাপের বাড়ি থেকে টাকাও নিয়ে আসতে বলতেন। বিয়ের পর থেকে তার মেয়েকে কোনদিন হাসিমুখে দেখেনি। ঘটনার কয়েকদিন আগে মেয়ের স্বামী সরাসরি তার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা দাবী করেন। সাধ্যমতো কিছু টাকাও দিয়েছেন। ঘটনারদিন মেয়ের স্বামী শ্বাশুড়িকে ফোন করে জানায়, কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তার মেয়েকে কয়েকটা থাপ্পর মারে। এরপর তিনি ঘর থেকে বের হয়ে যান। কিছুক্ষণ পরে এসে দেখতে পান তার স্ত্রী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ঘটনার পর থেকে স্বামী পলাতক রয়েছে। তার মেয়েকে স্বামী মেরে ঝুঁলে রেখেছেন বলে তিনি দাবী করছেন।
নিহতের স্বামীর ফুফু রাজিয়া বেগম জানান, শোরচিৎকার শুনে এসে দেখতে পান গৃহবধু তানজিনা নাছরিন কেমী অজ্ঞান অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছে। নিহতের স্বামীসহ স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় গৃহবধুকে সিএনজি অটোরিক্সায় তুলে দেন। সিএনজি যোগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথেই মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি মনে করছেন। গৃহবধুকে হাসপাতালে নেয়ার সময় তিনি ছাড়া সিএনজি অটোরিক্সায় আর কেউ ছিলেন না।
লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ইশতিয়াকুর রহমান জানান, নিহত এক গৃহবধুকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্বজনরা। তবে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। পরে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।
খবর পেয়ে লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, সন্ধ্যায় পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে নিহত গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করে। নিহতের গলা ছাড়া শরীরে কোথাও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হবে। ময়নাতদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।