Home | ব্রেকিং নিউজ | লোহাগাড়ায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, ধানি জমিতে ইটভাটা স্থাপন

লোহাগাড়ায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, ধানি জমিতে ইটভাটা স্থাপন

293

এলনিউজ২৪ডটকম : লোহাগাড়ায় এ বছর আমন আবাদে লক্ষ্যমাত্রার বেশী অর্জিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীম হোসেন। তিনি আরো জানান, এলাকার কৃষাণ-কৃষাণীরা নতুন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ বছর আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ হাজার ৮শ হেক্টর। অর্জিত হয়েছে ১০ হাজার ৮১০ হেক্টর। অনুকুল পরিবেশ ও যথাসময়ে সার, বীজ ও কীটনাশক প্রয়োগ করায় এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অন্যতম কারণ বলে তিনি দাবী করছেন। লোহাগাড়ার ৯ ইউনিয়নে সর্বমোট ৩৩ হাজার ১৮০টি কৃষক পরিবার রয়েছে। প্রতিটি পরিবারে এখন আমনকে বরণ করার উৎসব বিরাজ করছে। কৃষক পরিবাররা নতুন ধান উঠার সাথে সাথে তাদের বাৎসরিক প্রয়োজন মিটানোর জন্য নতুন ধান ঘোলায় ভরার পাশাপাশি হাটবাজারে বিক্রি লাভবান হবেন। মাঠে মাঠে এখন দলে দলে কৃষকরা সোনালী ধান কাটতে ব্যস্ত রয়েছেন। সূর্য উঠার সাথে সাথে কুয়াশার ছাদর ভেদ করে তারা মাঠে নামেন। আর ঘরের বৌ-ঝিরা উঠানে কাটা ধান স্তুপ করে মাড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা গোবর-মাটি মিশিয়ে উঠান লেপার কাজে ব্যস্ত রয়েছে। অনেকে নতুন ধানের পিঠা তৈরী ও নবান্ন উৎসব পালন করেছেন ইতোমধ্যে। লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া, চুনতি, চরম্বা, পুটিবিলা, পদুয়া প্রভৃতি এলাকা পাহাড়ি অঞ্চল বেষ্টিত। প্রতি বৎসর ধানে তোড় আসার সাথে সাথেই হাতির পাল নেমে আসে মাঠে। এ বছর তেমন কোন অঘটন ঘটেনি। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মূলতঃ আমন চাষের উপযোগী বলে এ অঞ্চলের কৃষকরা শতকরা শতভাগ আমন চাষ করে থাকেন

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরো জানান, সভ্যতার ক্রমঃবিকাশে দিন দিন ফসলী জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। যত্রতত্র ইটভাটা স্থাপন, অপরিকল্পিত নগরায়ন, দালান-কোটা নির্মাণ লাগামহীনভাবে বেড়ে গেছে, যাচ্ছে। তিনি বার বার উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভায় এ প্রবণতা বন্ধ করার প্রস্তাব করেছেন। ইটভাটার মালিকরা রাজনৈতিক পৃষ্টপোষকতায় তা গ্রাহ্য করছেন না। তবে দু’বছর যাবৎ ধানী জমিতে কোন ইটভাটা নির্মাণের ছাড়পত্র তিনি দেননি। তবে, এলাকাবাসীরা চোখে আঙ্গুল দিয়ে প্রশাসনকে দেখিয়ে দিয়েছেন আমিরাবাদের বার আউলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ সংলগ্ন ও পদুয়ার তেওয়ারীখিল এলাকায় নতুনভাবে ইটভাটা নির্মিত হয়েছে। যার বয়স এক বছরেরও কম। এছাড়াও পদুয়ার ধলিবিলিা, পুটিবিলা হামিদিয়া মাদ্রাসার উত্তর পার্শ্বে ও আবদুল খালেক শাহ মাজারের দক্ষিণ পার্শ্বে ও পূর্ব পার্শ্বে ধানি জমিতে ইটভাটা রয়েছে। লোহাগাড়া দরবেশহাটের পূর্ব পার্শ্বেও ধানি জমিতে ইটভাটার অবস্থান। পশ্চিম কলাউজানের বলিপাড়া সংলগ্ন স্থানে নতুনভাবে ধানি জমিতে ইটভাটা নির্মিত হচ্ছে।

এছাড়া পাহাড়ের ঢালুতে অবস্থিত কৃষি জমিতে, চরম্বায় অনধিক ১৮টি ইটভাটার অবস্থান। বার বার লেখালেখি হয়, প্রতিবাদ হয়, বিভিন্নস্থানে দরখাস্ত দেয়া হয়। এ প্রবণতা বন্ধ করা যায়নি, যাচ্ছেনা। কৃষি কর্মকর্তা আশংকা প্রকাশ করছেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে লোহাগাড়ার ফসলী জমি শুন্যের কোটায় নেমে আসবে। লোহাগাড়া থানার সামনে ফসলী জমিতে দালাল কোটা তৈরি হচ্ছে, হয়েছে। নীতিমালা না থাকায় তা রোধ করা যাচ্ছে না। টংকাবতী রাবারড্যম এলাকাটি ফসলী জমির জন্য বিখ্যাত। শরনাতীতকাল থেকে টংকাবতীর চরে বিপুল পরিমাণে আমন চাষের পাশাপাশি রবি শষ্যের চাষ হয়। রাবারড্যম সংলগ্ন স্থানে কৃষি ও রবি শষ্যের জমিতে ইটভাটা রয়েছে।

এ ব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন, প্রশাসনিক কোন ক্ষমতা তার হাতে না থাকায় কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছেন না। তিনি এলাকাবাসীকে এ ব্যাপারে সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!