নিউজ ডেক্স : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক বাসচালকের বিরুদ্ধে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শহরগামী দুপুর ১২টার ৯ নম্বর বাসে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত বাসচালকের নাম খোকা মিয়া (৪৩)। সে পরিবারসহ কুমিল্লার ধর্মপুর ডিগ্রি কলেজ এলাকায় থাকে।
ভুক্তভোগী ছাত্রী জানান, অসুস্থতার কারণে বেলা ১১টার দিকে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী পরিবহনের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিআরটিসির একটি বাসে ওঠে বসেন। এর আগে চালককে জিজ্ঞেস করেন বাসটি দুপুর ১২টায় ছাড়বে কি না। উত্তরে বাসচালক হ্যাঁ বললে তিনি বাসে উঠে ঘুমিয়ে পড়েন।
তিনি বলেন, ‘ঘুম ভাঙলে দেখি আমি একা, বাস বেলতলিতে। বাসে চালক, হেলপার আর আমি ছাড়া কেউ নেই। তখন আনুমানিক সাড়ে ১১টা বাজে। চালক জানায়, বাস নষ্ট হয়েছে, কিছু কাজ আছে আর গ্যাস নিতে হবে। পরে বিশ্বরোডের কাছাকাছি একটা ফিলিং স্টেশন গিয়ে বলে এখানে দেরি হবে, বাস আবার ক্যাম্পাসে গিয়ে ২টায় শহরে যাবে। তাই আমাকে সে বাসেই বসতে বলেন।’
তিনি (ছাত্রী) আরও বলেন, এরপর আমি বাসের সামনের সিটে গিয়ে বসি এবং অন্য বাস আসে কি না সে জন্য অপেক্ষা করতে থাকি। এ সময় চালক বিভিন্ন ব্যক্তিগত প্রশ্ন জিজ্ঞাসা শুরু করেন। বলেন, অনেক শিক্ষার্থী এই বন্ধে ট্যুরে কক্সবাজার যাচ্ছে, তো আমি যাব কিনা। আমি যাব না বললে সে বলে, ‘আমি কক্সবাজার ট্যুরে যাব, ২-৩ দিন থাকব। আপনার নম্বরটা দেবেন? যাওয়ার আগে আপনাকে কল দেব। আপনি যাবেন কিনা এটা জিজ্ঞেস করতে।’
ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, ‘আমি তাকে বলি, মোবাইল নম্বর আপনাকে কেন দেব? কিন্তু সে হেলপারকে ডাক দিয়ে নিজের টি-শার্ট বুকের ওপর উঠিয়ে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি শুরু করে। তখন আমি বাস থেকে নেমে যাই। এরপরও সে আমাকে অনুসরণ করছিল, আর বলছিল আমার ইচ্ছা করছে আপনাকে একা শহরে নিয়ে যাই।’
এদিকে অভিযুক্ত বাসচালক খোকা মিয়া যৌন হয়রানির কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি ওরকম কিছু বলিনি। পাম্পে থাকা অন্যান্য ড্রাইভার ও মেকানিকদের সঙ্গে দুষ্টুমি করে তাদের পেট দেখাইছি। এতে হয়তো ওই মামা (ছাত্রী) মাইন্ড করে থাকতে পারেন। উনি আমারে জিগাইছেন এর আগে আমি কোন রুটে গাড়ি চালাইছি? আমি বলছি সুনামগঞ্জ, জাফলং, কক্সবাজার। আপনারা তো সামনে ১০ দিনের বন্ধে অনেকে কক্সবাজার যাইবেন। উনি তখন যাবেন না বললে আমি বলেছি, অসুবিধা নাই। আমরা তো ওই রুটে গাড়ি চালাই, আপনাদের কখনও প্রয়োজন হলে বইলেন। এর বাইরে আর কিছু হয়নি। উনি তখন কতো ভালো কথা বললো, আর সারাদিন শেষে রাতে এসে শুনলাম আমার নামে বিচার দিছে।’
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ভুক্তভোগী ছাত্রী আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে। আমরা পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। তার বিরুদ্ধে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে বিআরটিসি থেকে তার নিয়োগপত্রও বাতিল করা হয়েছে।