Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | জনবহুল শাহ আমানত বিমানবন্দর এখন জনশূন্য বিরানভূমিতে পরিণত

জনবহুল শাহ আমানত বিমানবন্দর এখন জনশূন্য বিরানভূমিতে পরিণত

নিউজ ডেক্স : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় চালু হওয়া দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবহুল শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করোনাযুদ্ধে এসে জনশূন্য বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছে।

বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গত মার্চের চতুর্থ সপ্তাহে দেশে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে মাঝেমধ্যে বিমানবাহিনী, সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান, হেলিকপ্টারগুলো ওঠানামা করলেও চীন থেকে আসা একটি ফ্লাইট শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে পেরে শাহ আমানতে এসেছিলো।

স্বাভাবিক সময়ে যে বিমানবন্দরে হাজারো যাত্রী, স্বাগত ও বিদায় জানাতে স্বজন, চালকদের প্রাণের মেলা বসতো সেখানে এখন রাজ্যের নীরবতা। নেই গাড়ির হর্ন, কোলাহল, হাঁকডাক, আনসারের বাঁশির শব্দ কিংবা ঘরের ছেলে ফিরে আসায় মা-বাবার আনন্দোচ্ছ্বাস। শুধু প্রাণ ফিরেছে বিমানবন্দর এলাকার প্রকৃতিতে। কচি সবুজ পাতায় ভরেছে গাছগুলো। কর্ণফুলীর বাতাস ঢেউ তুলছে সবুজ গালিচায়।

সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে শাহ আমানত বিমানবন্দর দিয়ে ৯টি আন্তর্জাতিক রুটসহ ১৭ লাখ ৭৮ হাজার যাত্রী গমনাগম করেন। রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, দেশের বেসরকারি উড়োজাহাজ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের বাইরে তিনটি বিদেশি উড়োজাহাজ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের সপ্তাহে ৫৬০টি, দৈনিক ৪০টি ফ্লাইট ওঠানামা করতো যাত্রী ও কার্গো নিয়ে। ২০১৯ সালে ২ হাজার ৬৯৩ টন কার্গো রফতানি ও ৬ হাজার ৮৮১ টন কার্গো আমদানি হয়েছিলো এ বিমানবন্দর দিয়ে। গত ১০ বছরে ফ্লাইট সংখ্যা বেড়েছে ১ দশমিক ৮ গুণ, যাত্রী বেড়েছে ৩ দশমিক ১২ গুণ এবং কার্গো শিপমেন্ট বেড়েছে ৮ দশমিক ৯ গুণ। 

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার সারওয়ার-ই-জামান বলেন, আমাদের রানওয়ে, কনট্রোল টাওয়ার ওপেন রয়েছে। টার্মিনাল ভবন সীমিত পরিসরে খোলা রাখা হচ্ছে ইমিগ্রেশন, কাস্টমসসহ বিভিন্ন সংস্থার জরুরি প্রয়োজনে। প্রতিদিন জীবাণুনাশক দিয়ে বিমানবন্দরের ভেতরে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিমানবাহিনী বিমানবন্দর এলাকায় পানিবাহী গাড়ি দিয়ে জীবাণুনাশক ছিটিয়েছে।

তিনি জানান, সপ্তাহখানেক আগে চীন থেকে আসা একটি ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করতে না পেরে শাহ আমানতে এসেছিলো। আসলে শাহ আমানত ইমার্জেন্সি অলটারনেট হিসেবে প্রস্তুত রয়েছে। এ ছাড়া সেনা, নৌ, বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ উড়োজাহাজগুলো নিয়মিত উড্ডয়ন ও অবতরণ করছে।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. ফখরুল আলম জানান, যাত্রীবাহী ফ্লাইট বন্ধ থাকলেও জরুরি কোনো ফ্লাইট অবতরণ করতে পারে তাই নিয়ম অনুযায়ী কাস্টম হাউসের কর্মকর্তাদের প্রতি শিফটে বিমানবন্দরে উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে।

বন্দর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোতাহার হোসেন বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে বলেন, শাহ আমানত বিমানবন্দরে ফ্লাইট ও যাত্রী না এলেও করোনা স্ক্রিনিংয়ের জন্য মেডিক্যাল টিমের সদস্যরা দুই শিফটে উপস্থিত থাকছেন। করোনাভাইরাস প্রতিরোধমূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে শাহ আমানত বিমানবন্দরে এ পর্যন্ত ৫২ হাজার ১১৩ জন যাত্রীকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে ১০ হাজার ৫৬ জন নাবিককে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। বাংলানিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!