নিউজ ডেক্স : ঈদ আনন্দ নেই সাতকানিয়ার আমিলাইষের খান মোহাম্মদ সিকদার পাড়ার বাসিন্দাদের মাঝে। এই এলাকার বাসিন্দাদের বাড়িঘর প্রতিনিয়ত নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। টানা চারদিনের ভারি বর্ষনে পানির স্রোতে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সহস্রাধিক বাড়ি-ঘর নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে। ভাঙ্গনকবলিত এলাকায় নেই কোনো প্রতিরোধ ব্যবস্থা। ফলে নদী ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গত মঙ্গলবার ও বুধবার দু’দিনে সিকদার পাড়ার ৭টি বাড়ি সম্পূর্ণ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া ভাঙনের মুখে রয়েছে আরো ৮টি বাড়ি। এসব বাড়ি যেকোনো সময় বিলীন হয়ে যেতে পারে।
বৃহস্পতিবার সিকদার পাড়ায় সরেজমিনে ঘরে দেখা যায়, শঙ্খ নদীর টার্নি পয়েন্ট হওয়ায় পাহাড়ি ঢলের স্রোতে এই এলাকাটি নদীতে ভেঙ্গে যাচ্ছে। ভাঙনের মুখে যারা রয়েছেন, তারা বাড়ির জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এ সময় ক্ষতিগ্রস্থ জামাল হোসেন বলেন, নদীর মাঝ খানে ছিল আমার বাড়ি। দুই বছর আগে সেই বাড়ি ভিটাই নদীতে বিলীন হয়ে গেলে এখানে এসে অনেক টাকা খরচ করে নতুন করে ঘর করি। এখন সেই বাড়িটিও গ্রাস করেছে নদী। পরিবার পরিজন নিয়ে প্রতিবেশীদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। পরবর্তীতে কোথায় থাকবো সে দুশ্চিন্তাই দিন কাটাচ্ছি।
সাবেক ইউপি সদস্য আহমদ হোসেন বলেন, গত বর্ষায় আমার নিজ বাড়ি ভিটাও নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। তখন থেকে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে আছি। পাহাড়ি ঢলে খান মোহাম্মদ সিকদার পাড়া এলাকায় নদী ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
দু’দিনে সিএনজি চালক মোঃ শাহজাহান, আব্দুল করিম, আব্দুর রহমান, জামাল হোসেন, নুরুল আলম, নুর-ই-জান্নাত ও আবুল কালামের বাড়ি নদীতে ভেঙে গেছে।
আমিলাইষের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোস্তাক আহমদ বলেন, খান মোহাম্মদ সিকদার পাড়ায় ভয়াবহ নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেকের বাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
আমিলাইষ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এইচএম হানিফ জানান, এ অঞ্চলে আমিলাইষেই সবচেয়ে বেশি নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে অনেক বাড়ি নদী গর্ভে হারিয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আপতকালিন বরাদ্দ থেকে ১০০ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়েছে। সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোবারক হোসেন বলেন, খান মোহাম্মদ সিকদার পাড়ায় আমি বৃহস্পতিবার বিকালে নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি। ওই এলাকার বাসিন্দারাই বেশি নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করেছি। নদী ভাঙনের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।