Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | সাতকানিয়ায় পাওনা টাকা না পেয়ে ভাইয়ের শিশুপুত্রকে হত্যা

সাতকানিয়ায় পাওনা টাকা না পেয়ে ভাইয়ের শিশুপুত্রকে হত্যা

P-1-1-13

নিউজ ডেক্স : বড় ভাইয়ের কাছে পাওনা টাকা না পেয়ে তার শিশুপুত্রকে হত্যা করে লাশ গুমের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে আপন চাচা-চাচির বিরুদ্ধে। তবে ৪ ঘণ্টা পর লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত শিশুর চাচা ও চাচিকে গ্রেপ্তার করেছে সাতকানিয়া থানা পুলিশ। গত বুধবার বিকালে উপজেলার চরতি ইউনিয়নের সুইপুরা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ইমরান হাসান ছামিম (১) ওই এলাকার মোহাম্মদ মামুনের ছেলে। গ্রেপ্তার নুরুল আবছার মানিক (২৫) ও মারুফা আক্তার (২০) শিশুটির আপন চাচা-চাচি। এর মধ্যে মারুফা আক্তার গতকাল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, চরতি ৯নং ওয়ার্ডের সুইপুরা এলাকার মৃত আবু তাহেরের পুত্র নুরুল আবছার মানিক সৌদি আরবে থাকতেন। ওই সময় তিনি সেখান থেকে দেশে বড় ভাই মোহাম্মদ মামুনের কাছে টাকা পাঠাতেন। পরে নুরুল আবছার দেশে ফিরে বড় ভাইয়ের কাছে টাকা ফেরত চাইলে তিনি দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এতে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয় এবং এটি নিয়ে তাদের মধ্যে অনেকবার ঝগড়া হয়। এর মধ্যে গত ৪ মাস আগে মামুন স্ত্রী-সন্তানকে রেখে দুবাই চলে যান। এরপর তার স্ত্রী রিমা আক্তারের কাছে দেবর মানিক একাধিকবার টাকা দাবি করেন। এটি নিয়ে তাদের মধ্যে বেশ কয়েকবার ঝগড়া হয়। ঘটনার দিন সকালেও পাওনা টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া বাঁধে।

পরে বিকালে মামুনের স্ত্রী রিমা আকতার তার শিশু ছামিমকে দাদির কাছে রেখে গরুর জন্য বাড়ির পাশে ঘাস কাটতে যান। অন্যদিকে দাদিও নাতিকে খেলনা দিয়ে আসরের নামাজ পড়তে যান। এরই মধ্যে শিশু ছামিম পার্শ্ববর্তী চাচা মানিকের ঘরে চলে যায়। এসময় চাচা-চাচি তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর ব্যাগে ভরে লাশটি পার্শ্ববর্তী নলকূপের কাছে গর্ত করে মাটি চাপা দেন।

এদিকে নামাজ শেষে দাদি ছামিমকে খুঁজতে থাকেন। ঘরের ভেতর না পেয়ে বাইরে আশপাশে খোঁজ নেন। এসময় শিশুটির মা রিমা আক্তার বাড়িতে আসলে তিনিও খুঁজতে থাকেন। এক পর্যায়ে রাত ৯টার দিকে তারা নুরুল আবছার মানিকের ঘরের কাছে নলকূপের পাশে মাটি খোঁড়ার চিহ্ন দেখতে পান। পরে ওই স্থানে মাটি খুঁড়ে ব্যাগে মোড়ানো অবস্থায় লাশটি দেখতে পান। এসময় স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে রাতেই পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ এবং চাচা নুরুল আবছার মানিক ও তার স্ত্রী মারুফা আক্তারকে গ্রেপ্তার করে।

নিহত শিশু ছামিমের মা রিমা আকতার বলেন, মানিক আমার স্বামীর কাছে টাকা পাওনা ছিলেন। দেশে থাকা অবস্থায় তাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে অনেকবার ঝগড়া হয়েছে। আমার স্বামী বিদেশে চলে যাওয়ার পর মানিক আমার কাছেও একাধিকবার টাকা ফেরত চেয়েছে। কিন্তু আমি দিতে পারিনি। তাই বলে আমার নিষ্পাপ সন্তানকে হত্যা করতে হবে? প্রশ্ন করেন তিনি। তিনি সন্তান হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

সাতকানিয়া থানার ওসি মো. সফিউর কবীর জানান, ঘটনায় জড়িত চাচা-চাচিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শিশুটির মা বাদি হয়ে সাতকানিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সাতকানিয়ার ঢেমশা তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক মো. মজনু মিয়া জানান, ছামিমকে হত্যার ঘটনায় তার চাচি মারুফা আক্তার জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে আদালত গ্রেপ্তার দুজনকেই কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!