নিউজ ডেক্স : শৈত্যপ্রবাহের মধ্যে দেখা দিয়েছে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার প্রকোপ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েকদিনে চট্টগ্রামে ডায়রিয়ায় ৪৩৮ জন, শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণে ১৪৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এখন তিনগুণ বেশি রোগী ভর্তি আছে। এসব রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। এ অবস্থায় রোগী সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসকরা। -বাংলানিউজ

হাসপাতালের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগে শয্যা সংখ্যা ৬৬টি। এর বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে ৩৬০ জন। বিভাগীয় প্রধান ডা. প্রনব কুমার চৌধুরী জানান, শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয় হাসপাতালে। এতে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা না থাকায় সদ্যোজাত শিশুরা বেশি নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হয়। এসময় শিশুদের ঘন ঘন বুকের দুধ খাওয়ানো এবং সার্বক্ষণিক গরম কাপড়ে ঢেকে রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতালেও ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বহির্বিভাগে বেড়েছে রোগীর চাপ। ২৫০ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে চলছে দ্বিগুণ শিশু রোগীর চিকিৎসা।
নগরের বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকেও গত দুইদিনে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পরিচালিত হাসপাতালের বহির্বিভাগে দৈনিক ৪০-৫০ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জিষ্ণু মজুমদার বলেন, যদি কোনো শিশুর সর্দি, জ্বরের সঙ্গে কাশি, বুকে ঘ্যাঁড় ঘ্যাঁড় শব্দ হয় এবং সেই সঙ্গে শিশুর নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হলে অবশ্যই তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। কারণ ঠাণ্ডা জ্বরের সঙ্গে বুকে ঘ্যাঁড় ঘ্যাঁড় শব্দ ও শ্বাসকষ্ট হওয়াটা নিউমোনিয়ার লক্ষণ।
তিনি বলেন, মায়ের দুধ শিশুর পুষ্টি বাড়ায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ফলে সর্দি কাশি শিশুকে সহজে আক্রান্ত করতে পারে না এবং নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করা সহজ হয়। তাই শিশুকে মায়ের দুধ পান করাতে হবে। এছাড়া শিশুকে সময়মত সব টিকা দিতে হবে। টিকা দেওয়া হলে শ্বাসতন্ত্রের রোগ থেকে শিশুকে অনেকটাই নিরাপদ রাখা সম্ভব।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়ার কারণে পরিবেশ দূষণ, রাস্তার ধুলা-বালিসহ বাতাসে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বেড়েছে। তাতেই শ্বাসকষ্টজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। এছাড়া এ সময় পানি কম পান করা হয় বলে শরীরে পানিশূন্যতা থাকে। ফলে জীবাণু বের হতে পারে না এবং সহজেই বিস্তার লাভ করে।