এলনিউজ২৪ডটকম : লোহাগাড়ায় জায়গা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে আপন ভাই-ভাতিজার আক্রমণে আহত শফিকুর রহমান (৩৭) নামে এক যুবক মৃত্যুবরণ করেছেন। রোববার (২৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টায় চট্টগ্রাম নগরীর এক বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।
নিহত শফিকুর রহমান উপজেলার পূর্ব কলাউজান হাজির পাড়ার মৃত ইছহাক মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় একজন কৃষক ও ৩ সন্তানের জনক।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নিহতের স্ত্রী কোহিনুর আক্তার (২৮)। তিনি বর্তমানে লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। ঘটনার সাথে জড়িত নিহতের ভাই মৌলভী মো. রফিক (৫৫) ও তার দুই ছেলে মো. জাহেদ (২৪) ও মো. শাহেদ (২২) পলাতক রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, গত ২৫ মার্চ বিকেলে বাড়ির পাশে বিরোধীয় জায়গায় কাজ করছিল রফিক আহমদ ও তার ২ ছেলে। নিহত শফিকুর রহমান তাদের কাছ থেকে ওই জায়গায় কিসের কাজ করছিল জানতে চান। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে কোদাল দিয়ে মাথায় ও শরীরের বিভিন্নস্থানে শফিকুরকে আঘাত করেন। তার চিৎকারে স্ত্রী কহিনুর আক্তার এগিয়ে আসলে তাকেও আঘাত করেন তারা। পরে স্থানীয়রা আহতদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আশংকাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে সেখান থেকে নগরীর এক বেসরকারী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রাণ হারান শফিকুর রহমান।
অপরদিকে, নিহতের স্ত্রী কহিনুর আক্তার চমেক হাসপাতালের চিকিৎসায় একটু সুস্থ হয়ে উঠলে শনিবার লোহাগাড়ায় চলে আসেন। পরদিন আবারো শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
নিহতের স্ত্রী আহত কহিনুর আক্তার জানান, জায়গা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে তার স্বামী ও তাকে আঘাত করে ভাসুর মৌলভী রফিক ও তার দুই ছেলে। ঘটনাস্থলে স্বামীকে রক্ষা করতে গিয়ে তিনিও গুরতর আহত হন।
কলাউজান ইউপি চেয়ারম্যান এম. এ. ওয়াহেদ জানান, জায়গা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই ভাইয়ের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে শফিকুর রহমান ঘটনাস্থলে গুরতর আহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনা তদন্তপূর্বক প্রকৃত দোষীকে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানান।
লোহাগাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জাকের হোসাইন মাহমুদ জানান, পূর্ব কলাউজানে ভাই ও ভাতিজার আক্রমণে শফিকুর রহমান নামে এক যুবক নিহত হওয়ার খবর শুনে পুলিশ ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছেন। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি।
এদিকে, নিহত শফিকুর রহমানের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে একইদিন সন্ধ্যায় কলাউজানের নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। রাতেই নিহতের লাশ দাফন করা হয়েছে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।