ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | ৭ নবজাতক হত্যাকারী নার্সের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

৭ নবজাতক হত্যাকারী নার্সের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সাত নবজাতককে হত্যা ও আরও ছয় শিশুকে হত্যা চেষ্টা অভিযোগে চেস্টার হাসপাতালের কাউন্টেসর নার্স লুসি লেটবিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের একটি আদালত। সোমবার (২১ আগস্ট) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানায়।

খবরে বলা হয়, রায় ঘোষণার সময় লুসি আদালতে ছিলেন না। কারণ তিনি সেখানে উপস্থিত হতে অস্বীকার করেছিলেন।

নার্স লুসি লেটবি আধুনিক যুগে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে প্রবল শিশু সিরিয়াল কিলার হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন। রায়ে বলা হয়েছে, তাকে তার বাকি জীবন কারাগারে কাটাতে হবে।

শিশু হত্যার ঘটনায় লুসি যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে এমন শাস্তি পাওয়া চতুর্থ নারী। যুক্তরাজ্যে আজীবন কারাবাসই হলো সবচেয়ে কঠিন শাস্তি। এটি দেওয়া হয় তাদের যারা ‘জঘন্য অপরাধ’ করে থাকেন।

রায় ঘোষণার সময় উত্তর ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার ক্রাউন আদালতের বিচারক গস বলেন, লুসির কর্মকাণ্ড চরম নিষ্ঠুরতা। এটি সত্যিই ভয়াবহ।

তিনি আরও বলেন, আপনার (লুসির) কর্মকাণ্ড শিশুদের লালন-পালন ও যত্ন নেওয়ার স্বাভাবিক মানবিক প্রবৃত্তির সম্পূর্ণ বিপরীত ছিল। চিকিৎসা ও যত্নশীল পেশায় যারা কাজ করেন তাদের প্রতি সমস্ত নাগরিকের যে বিশ্বাস রয়েছে তারও চরম লঙ্ঘন।

বিচারক গস আরও বলেন, আপনার ক্রিয়াকলাপে নৃশংসতা ছিল। শিশু হত্যার বিচার চলাকালীন আপনি ঠাণ্ডা মাথায় আপনার অন্যায়ের দায় অস্বীকার করেছেন। আপনার কোন অনুশোচনা নেই। কোনো প্রশমিত কারণ নেই।

লুসিকে জিজ্ঞাসাবাদের সময়কার অনুলিপি ও তার বাবা-মায়ের ব্যক্তিগত বিবৃতি আদালতে জমা দিতে বলেছেন বিচারক গস।

চেস্টার হাসপাতালের কাউন্টেস হাসপাতালের নবজাতক পরিচর্যা ইউনিটে দায়িত্ব পালন করতেন ৩৩ বছর বয়সী নার্স লুসি লেটবি। ২০১৫ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনি ওই হাসপাতালে কাজ করেন। সাধারণত রাতের শিফটে নবজাতক পরিচর্যা ইউনিটে দায়িত্ব পালন করতেন তিনি। তার দায়িত্ব ছিল নবজাতকদের দেখভাল।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের জুন থেকে অক্টোবরের মধ্যে পাঁচ নবজাতককে হত্যা করেন লুসি। বাকি দুই নবজাতককে খুন করেন ২০১৬ সালের জুনে।

২০১৫ সালের অক্টোবরে কাউন্টেস অব চেস্টার হসপিটালের এক চিকিৎসক লুসির ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করে। তবে এ নার্সের ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কঠোর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। কারণ, তিনি শিশুদের এমনভাবে হত্যা করেছিলেন, কোনো ক্লু রাখেননি। তাই বিষয়টি শনাক্ত করে পুলিশকে জানাতেও দেরি হয়ে যায়।

অভিযোগ আছে, যে নবজাতকগুলো হত্যার শিকার হয়েছে, তারা অসুস্থ বা প্রিম্যাচিউর ছিল। লুসি তাদের শরীরে ইনজেকশন দিয়ে বাতাস ঢুকিয়ে হত্যা করতেন। অনেককে অতিরিক্ত দুধ খাইয়ে আবার কাউকে ইনসুলিন দিয়ে হত্যা করেছেন।

এসব ঘটনা সামনে আসার পর গ্রেপ্তার হন লুসি। ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে তার বিচার শুরু হয়। উত্তর ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার ক্রাউন কোর্টে ২২ দিন ধরে আলোচনার পর তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত রায় দেওয়া হয়। পাঁচ ছেলে ও দুই মেয়েশিশুকে হত্যায় অভিযুক্ত হন তিনি। আরও কজনকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগেও তাকে অভিযুক্ত করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!