ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | হংকং ইস্যুতে মুখোমুখি চীন-যুক্তরাজ্য

হংকং ইস্যুতে মুখোমুখি চীন-যুক্তরাজ্য

আন্তর্জাতিক ডেক্স : নতুন নিরাপত্তা আইন জারির পর হংকং ইস্যুতে চীনের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এরমাঝেই সোমবার হংকংয়ের বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করতে ব্রিটেনকে সতর্ক করে দিয়েছে বেইজিং। সোমবার ব্রিটেনে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লিউ জিয়াওমিং এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাজ্যকে হংকং ইস্যুতে নাক না গলানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

চীনা এই রাষ্ট্রদূত বলেছেন, হংকংয়ের ৩০ লাখ বাসিন্দার সবাইকে নাগরিকত্ব দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাজ্য; যা মোটাদাগে হস্তক্ষেপের শামিল। চীন বিরোধীরা বলছেন, নতুন এই আইনের মাধ্যমে আধা-স্বায়ত্ত্বশাসিত অঞ্চল হিসেবে হংকং যে স্বাধীনতা ভোগ করতো সেটিকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে বেইজিং।

বেইজিং হংকংয়ে নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইন জারির পর দেশ দুটির মাঝে কথার লড়াই শুরু হয়েছে। ব্যাপক বিতর্কিত এই আইনের বিরোধিতায় সমাবেশ করে গ্রেফতার হয়েছেন হংকংয়ের শত শত গণতন্ত্রকামী আন্দোলনকারী। তবে নতুন আইনে আন্দোলনকারী জোশুয়া ওং-কে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

আন্দোলনকারী জোশুয়া ওং হংকংবাসীর আন্দোলনে বিশ্ব সম্প্রদায়ের আরও বেশি সমর্থন কামনা করেছেন। হংকংয়ের বাসিন্দাদের যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব দেয়ার প্রস্তাবের ব্যাপারে ব্রিটেনে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লিউ বলেন, তিনি আশা করছেন- ব্রিটেন এই প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করবে।

তিনি বলেন, হংকংয়ের বিষয়ে ব্রিটিশ সরকার দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য অব্যাহত রেখেছে। লিউ বলেন, ব্রিটেন হংকংয়ের নাগরিকদের যে প্রস্তাব দিয়েছে সেব্যাপারে বিস্তারিত জানার পর বেইজিং করণীয় নির্ধারণ করবে।

ব্রিটেন বলছে, ১৯৯৭ সালের হংকং হস্তান্তরের সময় চীনের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল; তা লঙ্ঘন করেছেন বেইজিং। ওই চুক্তিতে বলা হয়েছিল- বেইজিংয়ের কাছে ভূখণ্ডটি হস্তান্তরের পরবর্তী ৫০ বছরের মধ্যে সেখানকার নির্দিষ্ট কিছু গণতান্ত্রিক স্বাধীনতায় কোনও হস্তক্ষেপ করবে না চীন।

সোমবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের একজন মুখপাত্র বলেছেন, হংকংয়ের যেসব বাসিন্দার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব (ওভারসিস) রয়েছে; তারা ব্রিটেনে চলে আসতে চাইলে চীনের বাধা দেয়া উচিত হবে না। চীন আন্তর্জাতিক আইনের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি। বর্তমানে আমরা হংকংয়ের জাতীয় নিরাপত্তা আইনটি পর্যালোচনা করছি।

যা আছে হংকং নিরাপত্তা আইনে : ১৯৯৭ সালে যুক্তরাজ্য হংকংকে চীনের হাতে তুলে দেয়ার পর থেকেই জাতীয় নিরাপত্তা আইন পাসের দাবি ছিল বেইজিংয়ের। হংকংয়ের নেতারা সেই চেষ্টাও করেছিলেন, কিন্তু জনতার বাধার মুখে তা আর পাস করতে পারেননি।

শেষ পর্যন্ত গত ২২ মে আইন প্রণয়নের দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নেয় চীন সরকার। হংকংয়ের স্বাধীন আইন ব্যবস্থা থাকলেও তাদের ক্ষুদ্র-সংবিধানে এরকম একটি সুযোগ রাখা ছিল। ফলে বেইজিংয়ের হস্তক্ষেপে বেশি কিছু করার ছিল না হংকংয়ের নেতাদের।

নতুন আইনে বর্ণিত চারটি অপরাধ হল- বিচ্ছিন্নতা দাবি, কেন্দ্রীয় চীন সরকারের বিরোধিতা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং জাতীয় সুরক্ষা বিপন্ন করতে বিদেশিদের সঙ্গে জোট বাঁধা।

নতুন আইনের সাজা : আইনটি মূল ভূখণ্ডের চীনা কর্মকর্তাদের প্রথমবারের মতো হংকংয়ে কাজ করার অনুমতি দিয়েছে। হংকংয়ের স্থানীয় আইন ও সম্প্রদায়ের পাশাপাশি বিদেশি নাগরিকদের ওপরও প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতা পেয়েছে বেইজিং।

হংকংয়ের স্বাধীনতা দাবি এখন অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। বিক্ষোভের সময় সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হলে তা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বলে ধরা হবে। এসব অপরাধের জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে নতুন নিরাপত্তা আইনে। সূত্র : বিবিসি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!