ফিরোজা সামাদ : পরদিন প্রথম প্রহর গড়িয়ে দ্বিপ্রহরে লঞ্চ ঢাকার সদরঘাট পৌঁছলো । শুভ্রতার বড়ো তিন ভাই, শাহিন, তুহিন ও মাহিন বহুবার ঢাকায় এলেও ছোট্ট ভাই দুই ভাই শাফিন ও রাকিনের এই প্রথম ঢাকায় আসা । তাই ওরা অানন্দে অাত্মহারা। সদরঘাট থেকে তিনটে বেবিট্যাক্সি নিয়ে ওরা মোহাম্মদপুর চাচা অামিনুল হকের তাজমহল রোডের বাসায় যখন অাসে তখন দুপুর গড়িয়ে । বাসায় ফিরে শুভ্রতার বড়োভাই শাহীন চাচার কাছে গিয়ে বলে…..
—- চাচা,অামরা যে পৌঁছেছি তা অাব্বাকে
জানানো দরকার।
—- যাও অামার শোবারঘরে টেলিফোন
থেকে ফোন করে জানাও।
সেইমতে ঢাকা থেকে এক্সচেঞ্জ হয়ে বাসায় বাবা এনামূল হক সাহেবকে ঢাকায় ঠিকঠাক মতো পৌঁছেছে বলে জানিয়ে দেয়।
শুভ্রতা ঢাকায় দু’দিন থেকে অবশেষে সেই দিনটি হাজির হয় অারব অামিরাতে যাওয়ার। ওরা তরিঘরি করে বিমানবন্দরে রওয়ানা দেয়। এবারেও শুভ্রতা যে বেবিট্যাক্সিতে উঠে সেটাতেই ওর মামা জলফুকে উঠতে অনুরোধ করে। জলফুও অনেক স্নেহে ভাগনীর পাশে বসেই বিমান বন্দর পর্যন্ত পৌঁছে যায়। বিমান বন্দরের
সমস্ত ঝামেলা চুকিয়ে যখন ভেতরে যাবে ঠিক সেই মুহুর্তে শুভ্রতা পিছন ফিরে মামা জলফুকে কাছে ডাকে। জলফু এগিয়ে এলেই শুভ্রতা ভ্যানিটিব্যাগ থেকে একটি খাম বের করে মামা জলফুর হাতে দিয়ে বলে….
—- মামা এটা লাবনীকে দিও। কাউকে
বলবে কি বলবেনা সেটা তোমার
উপর ছেড়ে দিলাম।
জলফু শুভ্রতার দু’হাত জড়িয়ে কেঁদে ফেলে….
—- মা, তুই অামার উপর অাস্হা রাখিস।
অামাকে ফোন করতে ভুলিস না মা!
ছোট্ট ভাই দু’টোকে কাছে টেনে অাদর দিয়ে কপালে ঠোঁট ছুয়ে দেয়। শুভ্রতার অশ্রুজল দু’ভাইয়ের কপাল ভিজে যায়। ভাই দু’টি কাঁদতে থাকে। বড়ো ভাই তিনটি
পৌঁছে ঢাকায় চাচার বাসায় ফোন করতে শুভ্রতাকে অনুরোধ করলে শুভ্রতা শুধু ঘার কাঁত করে সম্মতি জানায়।
তবে অাশ্চর্য শুভ্রতা কোনো কান্নাকাটি করলো না। বিষয়টি চাচা চাচি ও ভাইদের অবাক করে দেয়। শুভ্রতা কাঁচের দেয়াল পেরিয়ে গেলে ওকে অার দেখা যাচ্ছেনা। তাই ওরা ছয়জন অপেক্ষায় থাকে শুভ্রতাকে নিয়ে বিমান কখন অাকাশে উড়বে…… ( চলবে)