ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | শীতকালীন অসুখের প্রকোপ বেড়েছে

শীতকালীন অসুখের প্রকোপ বেড়েছে

P-1-1-3-696x426

নিউজ ডেক্স : ভোরের কুয়াশা আর অতিথি পাখির উড়ে বেড়ানো আগেভাগে জানিয়ে দিয়েছিল শীতের আগমনী বার্তা। ইদানীং তাপমাত্রাও কমতে শুরু করেছে। কয়েকদিন ধরে ভোরে ও সন্ধ্যায় কুয়াশা আর হিম হিম ঠান্ডা। হঠাৎ করে বেড়ে যায় শীতের প্রকোপ। এখন থেকে তাপমাত্রা এরকম ওঠানামা করবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।

এদিকে শীত বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে অসুখের মাত্রাও। বিশেষ করে শিশুদের মাঝে শীতকালীন অসুখের প্রকোপ বেড়েছে। শীত ও ধুলোবালির কারণে চলতি পথে ব্যস্ত মানুষও রক্ষা পাচ্ছে না নানারকম অসুখ–বিসুখ থেকে। তাই সবাইকে সচেতনতার মধ্য দিয়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। গতকাল সকাল থেকে কুয়াশা ছিল। তাপমাত্রাও অন্যান্য দিনের চেয়ে কম ছিল। সমুদ্রে মৌসুমী লঘুচাপ থাকার কারণে হঠাৎ করে তাপমাত্রার এই পরিবর্তন উল্লেখ করে চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান জানান, এখন থেকে প্রতিদিন ভোরবেলায় কুয়াশার মাত্রা বাড়তে থাকবে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়বে শীতের প্রকোপ। মৌসুমী লঘুচাপের কারণে আরো কয়েকদিন হঠাৎ করেই তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, মৌসুমী লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যার বর্ধিতাংশ উত্তর–পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। সেই সাথে শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও হাল্কা কুয়াশা পড়তে পারে। এছাড়া সারা দেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

গতকাল সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় তেঁতুলিয়ায়, ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে, ২৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া গতকাল নগরীতে সর্বন্নি তাপমাত্রা ছিল ১৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন সর্বন্নি তাপমাত্রা ছিল ১৮ ডিগ্রি এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২৬ নভেম্বর নগরীতে সর্বন্নি তাপমাত্রা ছিল ১৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২৫ নভেম্বর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রার কোনো পরিবর্তন হয়নি। তাপমাত্রা কমার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রোগের প্রকোপও।

অন্যান্য সময়ের তুলনায় শীতের শুরু থেকে ছোট–বড় সবার মাঝে রোগের প্রকোপ বেড়ে যায় উল্লেখ করে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. নুরুল হক বলেন, শীতে শিশুরা সর্দি–কাশি, গলা ব্যথা, জ্বর, নিউমোনিয়ায় বেশি আক্রান্ত হয়। মূলত শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ আশংকাজনক হারে বেড়ে যায়। শীতে আবহাওয়া শুষ্ক, দূষণ এবং ধুলোবালু থাকার কারণে মূলত শিশুরা এসব রোগে আক্রান্ত হয়। এ সময় অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে। শিশুদের পাশাপাশি বড়দেরও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। শিশুদের ঠান্ডা বাতাস এবং ধুলোবালু থেকে দূরে রাখতে হবে। যেহেতু শীতে এ রোগগুলো সংক্রামিত হয়, তাই যতটা সম্ভব শিশুদের জনসমাগমপূর্ণ জায়গা থেকে দূরে রাখা প্রয়োজন। শিশুদের সব ধরনের কাপড় পরিষ্কার ও আলাদা হওয়া উচিত। আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি–কাশির সময় শিশুদের দূরে রাখা উচিত।

তিনি বলেন, শীতকালীন রোগগুলো বড়দের কাছ থেকে শিশুদের মধ্যে সংক্রমিত হয়। ধোঁয়া ও ধূমপান থেকেও শিশুদের সমস্যা হচ্ছে। তাই দূষণ এলাকা থেকে তাদের দূরে রাখা উচিতর। আর শীতকালীন ডায়রিয়া থেকে বাঁচতে হলে ছোট–বড় সবার নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস করতে হবে। সেই সাথে রাস্তার পাশের খোলা খাবার পরিহার করা এবং নিরাপদ পানি পান উচিত। বড়দেরও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতি আরো সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। –আজাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!