নিউজ ডেক্স : চট্টগ্রামের বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালের নিবন্ধনে ‘ত্রুটি’ আছে বলে জানিয়েছে ভুল চিকিৎসায় শিশু মৃত্যুর অভিযোগ তদন্তে গঠিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কমিটি।
ম্যাক্স হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে রোববার রাতে কমিটির প্রধান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) কাজী মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এ তথ্য জানান।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “ম্যাক্স হাসপাতালের লাইসেন্স ‘ক্রুটিপূর্ণ’। আমি কর্মস্থলে গিয়েই বিধি মোতাবেক নোটিস করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
দৈনিক সমকালের চট্টগ্রাম ব্যুরোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রুবেল খানের আড়াই বছর বয়সী মেয়ে রাইফা খান শুক্রবার রাতে ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। রাইফার মৃত্যুর পর তার পরিবার ও সাংবাদিকরা চিকিৎসকের ‘ভূল চিকিৎসায়’ মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
ভুল চিকিৎসার জন্য দায়ী চিকিৎসকদের বিচারের দাবিতে সাংবাদিকদের চলমান আন্দোলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল কাজ শুরু করেছে রোববার সন্ধ্যায়।
নগরীর মেহেদীবাগে ম্যাক্স হাসপাতালে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
কাজী জাহাঙ্গীর বলেন, “ম্যাক্স হাসপাতাল ভিজিট করে বিভিন্ন কাগজপত্র সগ্রহ করেছি। উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে যাচাই করছি। আমাদের সাথে এক্সপার্ট আছে। কোনো ত্রুটি হয়েছে কিনা হলে তা কতটুকু তা দেখে রিপোর্ট দেব।”
সন্ধ্যায় তদন্ত কমিটি ম্যাক্স হাসপাতালে গিয়ে বিএমএ প্রতিনিধি ও সাংবাদিক প্রতিনিধিদের কথা বলেন। এই সময় বিএমএ নেতাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে সাংবাদিকরা হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যান।
হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ করে তারা মিছিল নিয়ে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে চলে আসেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে প্রেসক্লাবে আসেন জাহঙ্গীরসহ তদন্ত কমিটির দুই সদস্য।
এসময় সাংবাদিকরা নগরীর মেহেদীবাগে আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠা ম্যাক্স হাসপাতালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন এবং রুবেল খানের মেয়ের হাসপাতালে ভর্তির সময়কার পরিস্থিতি জানান।
পাশাপাশি চট্টগ্রাম বিএমএর সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবালের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরে রাইফার মৃত্যুর পর চকবাজার থানায় পুলিশ ও সাংবাদিকদের সাথে ঔদ্ধ্যত্যপূর্ণ আচরণেরও অভিযোগ দেন সাংবাদিকরা।
সাংবাদিকদের সাথে কথা বলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিম উদ্দিন শ্যামল, সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ, সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী আবুল মনসুর, সহ-সভাপতি মঞ্জুর কাদের মঞ্জু, যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, সিইউজে’র যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ, বিএফইউজের সহ-সভাপতি শহীদ উল আলম, সিইউজের সাবেক সভাপতি মোস্তাক আহমেদ, রিয়াজ হায়দারসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।