ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | মিনুর রহস্যজনক মৃত্যুর পর নিখোঁজ বড় ছেলে

মিনুর রহস্যজনক মৃত্যুর পর নিখোঁজ বড় ছেলে

নিউজ ডেক্স : হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামির পরিবর্তে কারাগারে ৩ বছর বন্দী থাকার পর মুক্তি পাওয়া সেই মিনুর রহস্যজনক মৃত্যুর পর থেকে নিখোঁজ তার বড় ছেলে ইয়াছিন (১২)। গত কয়েকবছর যাবত নগরের ষোলশহর রেলওয়ে ষ্টেশনে একটি দোকানে চাকরি করতেন ছেলেটি।

গত কয়েকদিন মিনুর ভাই মো. রুবেল ভাগনে ইয়াছিনকে খোঁজাখুজি করেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার (৬ জুলাই) সকালে ভাগনেকে খুঁজতে ষোলশহরে ওই দোকানে যান। কিন্তু দোকানটি ভেঙে ফেলায় খোঁজ পাননি কারও।

এর আগে গত ২৮ জুন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পর ‘অজ্ঞাত’ হিসেবে মিনুর মরদেহ দাফন করা হয়। ট্রাকচাপায় মিনু আক্তারের মৃত্যুকে অস্বাভাবিক দাবি করেন মিনুর আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ।

মিনু ভাই মো. রুবেল বলেন, মিনু আপা মৃত্যুর খবর জানার পর থেকে তার বড় ছেলে ইয়াছিনেরও খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। প্রথমে শুনেছিলাম দোকানের মালিকের সঙ্গে বাঁশখালী গিয়েছিল। কিন্তু ইয়াছিন যে দোকানে চাকরি করতেন সেটি এখন নেই। বিষয়টি পুলিশকে জানোনা হয়েছে।  

মিনুর বিষয়ে রুবেল বলেন, মিনু মৃত্যু রহস্যজনক থাকতে পারে। যারা মিনুকে কারাগারা নিয়ে গেছেন, তারা শক্তিশালী। কেউ যদি মিনুকে হত্যা করে থাকে তাকে বিচারের আওয়াতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।  

এদিকে, মিনুর মৃত্যুকে ঘিরে জন্ম নিয়েছে নানা প্রশ্নের। গত কয়েকদিন আগে মেরিন সিটি মেডিক্যাল কলেজ নামে একটি হাসপাতালে অজ্ঞাত রোগী রেখে যুবকের পালিয়ে যাওয়ার তথ্য গণমাধ্যামকে দেন বায়েজিদ থানা ও চমেক পুলিশ ফাঁড়ি। কিন্তু ভোরে সড়ক দুর্ঘটনায় মিনুর মৃত্যু হলেও এ ব্যাপারে গণমাধ্যমে কোনো তথ্য দেননি চমেক পুলিশ ফাঁড়ি ও বায়েজিদ থানা। এছাড়া অজ্ঞাত মরদেহের বিষয়ে সিএমপির জনসংযোগ বিভাগ থেকেও কোনা তথ্য দেওয়া হয়নি।  

বাংলানিউজে সংবাদ প্রকাশের পর মিনুর বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনা আইনজীবী মো. শিশির মনির বলেন, মিনুর মৃত্যুর বিষয়টি পর্যবেক্ষণ ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি। অতিদ্রুত বিষয়টি উচ্চ আদালতের নজরে আনা হবে। মিনুর বিষয়টি যাতে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সুরাহা হয়, আমি তা আদালতের কাছে উপস্থাপন করবো।  

মিনুর আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ বলেন, মিনুর মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। মাত্র ১৩ দিন আগে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন তিনি। তিন বছর পর জেল থেকে মুক্তি পেয়ে পরিবারের সঙ্গেই ছিলেন। জেল থেকে বের হওয়ার পর তিনি কিছুটা মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। মিনুর জেলে যাওয়ার বিষয়ে অনেক কিছুই হয়ে গেল। বাসা থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে রাস্তায় মিনু আসলেই সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন, নাকি অন্য কেউ মিনুকে মেরে ফেলেছে? মিনুর মৃত্যু ঘটনাটির তদন্ত চলছে। যদি বিচার বিভাগীয় তদন্ত হয়, তাহলে ভাল হবে।  

তিনি আরও বলেন, মিনুর মৃত্যুর পর দিনই বেওয়ারিশ মরদেহ হিসেবে দাফন করেছে পুলিশ। মিনু বিনা অপরাধে জেল খাটায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের কারণে বেশ পরিচিত মুখ ছিলেন। মিনুর মরদেহ কিভাবে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন কা হয়? 

বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, মিনুর মৃত্যুর ঘটনায় থানায় সড়ক দুর্ঘটনা আইনে মামলা হয়েছে। এটি সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু নিশ্চিত। তবুও সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু বা অন্য কোনো কারণে মৃত্যু বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি।  

মিনুর মৃত্যুর ঘটনায় সড়ক দুর্ঘটনা আইনে দায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. খোরশেদ আলম বলেন, সড়কের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সিনিয়র স্যারদেরকেও দেখানো হচ্ছে। গাড়িটি শনাক্তের চেষ্টা চলছে। দুর্ঘটনাটি রাতের বেলায় হওয়ায় একটু সময় লাগছে। বাংলানিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!