ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | প্রধানমন্ত্রীর নামে ফেইসবুক পেইজ খুলে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ৫

প্রধানমন্ত্রীর নামে ফেইসবুক পেইজ খুলে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ৫

fb-2-20190117131737

নিউজ ডেক্স : প্রধানমন্ত্রীর নামে ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলে গুজব-প্রতারণা ছড়ানোর অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

র‍্যাব জানায়, আসামিরা প্রধানমন্ত্রীর নামে ৬টি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে সেখান থেকে দেশের উন্নয়নের পোস্ট দিতেন। এ সুযোগে অনুসরণকারীদের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে সেগুলো থেকে প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড চালাতেন তারা।

বৃহস্পতিবার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।

গ্রেফতাররা হচ্ছেন মো. ওমর ফারুক (৩০), মো. সাব্বির হোসেন (২৪), মো. আল আমিন (২৭), মো. আমিনুল ইসলাম আমিন (২৫) এবং মো. মনির হোসেন (২৯)। তাদের রাজধানীর মগবাজার, ডেমরা, মোহাম্মদপুর, সাভার ও কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে তাদের ব্যক্তিগত ভিন্ন ভিন্ন মডেলের ১২টি মোবাইল ফোন ও ১টি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।

মুফতি মাহমুদ জানান, আসামিরা প্রধানমন্ত্রীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নামে ৩৬টি অ্যাকাউন্ট খুলে সেখানে ফোন নম্বর দিয়ে দিতেন। অনেকে আগ্রহী হয়ে সেসব নম্বরে ফোন দিতেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে। এরপর তারা বিভিন্ন কায়দায় প্রলোভন দেখিয়ে জনসাধারণের সঙ্গে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাৎ করতেন।

তিনি বলেন, ‘আসামিদের মধ্যে ওমর ফারুক অত্যন্ত চতুর। তিনি নিজেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নামে ৬টি ও তার কন্যা সালমা ওয়াজেদ পুতুলের নামে একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। এ ছাড়াও স্পিকারসহ বিভিন্ন নেতাদের নামে ৩৬টি অ্যাকাউন্ট খুলেছে তিনি।’

মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ‘আসামিরা প্রতারণাকে শিল্পতে পরিণত করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নামের অ্যাকাউন্টগুলোতে তারা শেখ হাসিনার নাম-ছবিসহ পোস্ট দিয়েছেন। গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের জন্য সরকারের বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নের ছবি পোস্ট করেছেন। তাদের পোস্টগুলোতে একটা করে মোবাইল নম্বর দেয়া থাকতো। এটা ছিল ওমর ফারুকের নিজের নম্বর। এই পোস্টগুলো দেখে অনেকেই অনেক সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলার ফোন করতেন। কেউ সমস্যা সমাধানে, কেউ অন্য কারণে কথা বলার জন্য ফোন দিতেন।’

‘সব ফোন ধরতেন এই চক্রের সদস্যরা। প্রধানমন্ত্রীর নম্বরে পুরুষ ফোন ধরল কেন? অনেকের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতারকরা বলতেন, ‘তারা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে কথা বলছেন। প্রধানমন্ত্রী তাদের দায়িত্ব দিয়েছেন ফেসবুকে অ্যাকাউন্টগুলো ম্যানেজ করার জন্য। তারা বলতেন, এসব অ্যাকাউন্ট থেকে বিভিন্ন রকমের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে সেগুলো প্রধানমন্ত্রীকে অবগত করা হয়।’

এরপর তারা আর কোনো কথা বলতেন না। সিকিউরিটির কারণে তারা বিস্তারিত কথা বলার জন্য ফেসবুক ইনবক্সে নক করতে বলতেন। ইনবক্সে কথোপকথনের মাধ্যমেই আসামিরা কাউকে চাকরির কাউকে অন্যান্য প্রলোভন দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করতেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

র‍্যাব জানায়, গ্রেফতার হওয়া সাব্বির পেশায় সাইবার যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ। সাব্বিরের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে ২টি ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে ৪টি মামলা রয়েছে। তিনি তারেক জিয়া সাইবার ফোর্স, দেশনেত্রী সাইবার ফোরাম পেজ এর অ্যাডমিন ছিলেন। সম্প্রতি তিনি অসৎ উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার লক্ষ্যে তারেক জিয়া সাইবার ফোর্স, দেশনেত্রী সাইবার ফোরাম জায়গায় শেখ হাসিনার পরামর্শ ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল নাম সংযোজন করে তাতে নিরাপদ সড়ক চাই ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের উস্কানিমূলক ভিডিও পোস্ট করে আসছেন।

গ্রেফতাকৃত মো. আল আমিন পেশায় বেসরকারি চাকুরিজীবী। তিনি সাইবার অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি পেজের অ্যাডমিন। তিনি প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য জাতীয় নেতাদের ছবি বিকৃত আকারে প্রকাশ, বিভিন্ন জাতীয় প্রতিষ্ঠান যেমন-বিচার বিভাগ, সেনাবাহিনী, পুলিশকে ঘিরে মিথ্যা তথ্য সন্নিবেশ করে তাতে ভুয়া ছবি সুপার অ্যানিমেশনের মাধ্যমে ফেসবুকে পোস্ট করে থাকেন।

উল্লেখ্য, গত ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ স্বাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে র‍্যাব এই প্রতারণাচক্রের বিষয়ে জানতে পারে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, কিছু কুচক্রী মহল বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা, বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকসহ বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্রী সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে কিছু ফেইক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট/পেজ থেকে নানা রকম বিভ্রান্তিমূলক, মিথ্যা, বানোয়াট তথ্য-সংবাদ প্রচার হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!