Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | ধারাবাহিক গণতন্ত্র আছে বলেই দেশের উন্নতি হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

ধারাবাহিক গণতন্ত্র আছে বলেই দেশের উন্নতি হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেক্স : ধারাবাহিক গণতন্ত্র থাকার কারণেই বাংলাদেশের উন্নতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণমানুষের সমর্থন নিয়ে পদ্মা সেতুর নির্মাণ নিজেদের অর্থায়নে করা হয়েছে এভাবেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট তুলে ধরে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা হয়েছে এমন একটি সময়ে যখন পাকিস্তান নামের রাষ্ট্রটি হওয়ার পর মাত্র ৫ মাসের মধ্যেই তাদের একটি বৈরি মনোভাব আমাদের পূর্ব বাংলার মানুষের প্রতি দেখা যায়। বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রচেষ্টাসহ আর্থ-সামাজিভাবে আমাদের শোষণ, নির্যাতন-নীপিড়ন শুরু করে। তারই প্রতিবাদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৮ সাল থেকে ভাষা আন্দোলন শুরু করেছিলেন, ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগ সৃষ্টি হয় এবং সৃষ্টিলগ্ন থেকেই আওয়ামী লীগ এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের জনগণেরই সংগঠন। আওয়ামী লীগ সব সময়ই এদেশের শোষিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত মানুষের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। এই সংগ্রাম করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীকে জীবন দিতে হয়েছে। কত পরিবার কষ্ট পেয়েছে। কত মানুষ আত্মত্যাগ করেছে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সৃষ্টিলগ্ন থেকে সার্বিক উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। পাকিস্তান নামক দেশটি যেভাবে আমাদের শোষণ করে যাচ্ছিল। ২৩ বছরের সংগ্রাম ও জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। স্বাধীন জাতি হিসেবে মর্যাদা পেয়েছি। বাংলাদেশ নামটিও বঙ্গবন্ধুর দেওয়া। আওয়ামী লীগকে অসাম্প্রদায়িক চেনতায় গড়ে তোলার জন্য ১৯৫৫ সালের কাউন্সিলে মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে নাম দেওয়া হয় পূর্ববাংলা আওয়ামী লীগ। সব দলমত নির্বিশেষে সবার দ্বার উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। আর স্বাধীন বাংলাদেশে কাউন্সিল অধিবেশে আওয়ামী লীগের নাম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগের ভূমিকা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ নামের সঙ্গে যেমন স্বাধীনতা ও অধিকার জড়িত। মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার এবং একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত প্রদেশকে রাষ্ট্রে উন্নীত হয়ে সংবিধান দিয়েছিলেন জাতির পিতা। অতি অল্প সময়ের মধ্যে মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে জাতিসংঘ স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা দেওয়া হয়। ১৯৭৫ সালেই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা পায়। পচাত্তরের ১৫ আগস্ট আমরা কেবল জাতির পিতাকে হারাইনি। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনাকেও হারিয়েছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি হয়েছিল। জয় বাংলা স্লোগান নির্বাচিত হয়েছিল। ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুখে ফেলা হয়েছে। কিন্তু ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকারে আসে। পরবর্তীতে দ্বিতীয়বার সরকারে আসে। সরকারে আসার পর আজকে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটা মর্যাদা পেয়েছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। ইনশাল্লাহ জনগণের সেবা করার সুযোগ পেলে অবশ্যই আগামীতে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে।

আওয়ামী লীগের বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন ও ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আমি ২১০০ সালের ডেল্টাপ্ল্যান করে দিয়েছি। ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ যাতে হয় সেই পরিকল্পনাও তৈরি করে দিয়েছি। এই ধারাবাহিকতা নিয়ে দেশ চলতে থাকলে তাহলে এদেশের অগ্রযাত্রা আর কেউ থামাতে পারবে না। রুখতে পারবে না। মানুষের সেবা করা এটা আওয়ামী লীগের কর্তব্য ও দায়িত্ব। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ঝড়-বৃষ্টি, বন্যা-খরাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে সব সময় দেশের মানুষের পাশে আছে। সরকারে থাকি আর বিরোধীদলে থাকি- যখনই বাংলার মানুষ কোন সমস্যায় পড়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঝাঁপিয়ে পড়েছে। মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। সহযোগিতা করেছে। এবারের সিলেট সুনামগঞ্জের বন্যায়ও সবার আগে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী গেছে। তাদের সাহার্য্য করেছে। এটা আমাদের আদর্শ। এটাই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।

দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আত্মদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের অগণিত মানুষের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে জনগণের সেবা করার অধিকার পেয়েছি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। আজকে ধারাবাহিক গণতন্ত্র আছে বলেই বাংলাদেশের উন্নতি হচ্ছে। পদ্মা সেতুর নির্মাণ নিজেদের অর্থায়নে করতে পেরেছি। সেটাও গণমানুষের সমর্থন নিয়ে আমরা করেছি। ঠিক এভাবেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আর কখনো পরমুখাপেক্ষী হবে না। কারো কাছে হাত পেতে চলবে না। চলবে আত্মমর্যাদা নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচ করে। বাংলাদেশের জনগণকে আমি স্যালুট করি। আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই।

শেখ হাসিনা বলেন, বাবা-মা-ভাই সব হারিয়ে আমি ফিরে এসেছিলাম। আওয়ামী লীগ আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করেছিল। পাশাপাশি জনগণের আশ্রয়ই আমি এসেছিলাম। তাদের মাঝে আমি খুজে পেয়েছিলাম আমার হারানো বাবা মায়ের স্নেহ। হারানো ভায়ের স্নেহ। কাজেই এদেশের মানুষের জন্য যেকোনো আত্মত্যাগে আমি সবসময় প্রস্তুত। আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলাভাষায় কথা বলা, আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ। আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা। -বাংলানিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!