ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | দেদারছে কাটা হচ্ছে ফসলি জমির টপ সয়েল

দেদারছে কাটা হচ্ছে ফসলি জমির টপ সয়েল

image-21056-1547913055

নিউজ ডেক্স : সাতকানিয়ায় দেদারছে কাটা হচ্ছে ফসলি জমির টপ সয়েল। ফলে একদিকে দিন দিন কমে যাচ্ছে কৃষি জমিগুলোর উর্বরাশক্তি অপরদিকে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। অভিজ্ঞদের মতে, জমিতে ফসল উত্পাদনের উপযোগী মাটি হলো জমির উপরের অংশ। আর একবার টপ সয়েল কেটে নিলে তা পূরণ হতে সময় লাগে ১৫-২০ বছর।

এলাকাবাসী জানায়, প্রতিবছর শীতের শুরুতে আমন ধান কাটার পর থেকে বর্ষাকাল শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত একশ্রেণির মাটি ব্যবসায়ী গরিব কৃষক ও জমির মালিকদের টাকার লোভ দেখিয়ে আবাদি জমির মাটি কিনে নেয়। জমির মালিকরা টপ সয়েল বিক্রির কুফল সম্পর্কে না জানার কারণে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা না করে নামেমাত্র মূল্যে মাটি বিক্রি করে দেয়।

সরেজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা যায়, সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া, কেওঁচিয়া, ঢেমশা, ছদাহা, নলুয়া, খাগরিয়া, মাদার্শা, চরতি, সাতকানিয়া সদর, পশ্চিম ঢেমশা, এওচিয়া, মাদার্শা, ধর্মপুর এলাকার আবাদযোগ্য কৃষি জমিগুলো থেকে এক্সকাভেটর দিয়ে মাটি কেটে প্রতিদিন প্রায় একশ ট্রাক ভর্তি করে উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায় নিয়ে যাচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় অর্ধ শতাধিকের বেশি ইটভাটা থাকায় এখানে ওইসব মাটির চাহিদাও বেশি। কয়েকজন জমির মালিক জানান, মাটি ব্যবসায়ীরা অনেক সময় তাদের না জানিয়ে জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে যায়।

অন্যদিকে জমির মালিক কেওঁচিয়ার লিয়াকত আলী, ঢেমশার মো. ছালাম, সোনাকানিয়ার আবু তাহেরসহ আরও অনেকে জানান, তাদের জমির পাশের অনেক জমির মালিক মাটি বিক্রি করে দিয়েছে। এতে মাটি ব্যবসায়ীরা জমিগুলো থেকে ১০-১৫ ফুট এবং অনেক ক্ষেত্রে ২০-২৫ ফুট পর্যন্ত গভীর করে মাটি কাটার ফলে জমিগুলোতে কোনো রকমের চাষাবাদ হয় না। ফলে বাধ্য হয়ে তাদের জমির মাটিও বিক্রি করে দিতে হয়।

সাতকানিয়া উপজেলার কেওচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনির আহমদ ও কেরানিহাট এলাইট হাসপাতালের পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম জানান, কেরানিহাটের উত্তরপাশে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পশ্চিমপাশে টপ সয়েল কাটতে কাটতে বড় আকারের ডোবায় পরিণত হয়েছে। কিছুদিন পর লোকজন জানবে না যে ওই জমিতে ধান চাষ হতো। অভিজ্ঞদের মতে এভাবে প্রতিবছর ফসলি জমির মাটি কেটে ফেলার ফলে এই অঞ্চলে এক সময় খাদ্য উত্পাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা হারাতে পারে এবং এর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে এখানকার গ্রামীণ অর্থনীতি ও অসহায় খেটে খাওয়া মানুষগুলোর ওপর।

সাতকানিয়া উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এস, এম, জহির জানান, ফসলি জমির টপ সয়েল হলো জমির প্রাণ। ফসলি জমি থেকে টপ সয়েল কেটে নেওয়ার ফলে আবাদি জমিগুলোর উর্বরতাশক্তি দিন দিন হ্রাস পায়। ফসল উত্পাদনের জন্য মাটির যে গুণাগুণ থাকা দরকার তার সবটুকুই থাকে উপরের অংশে। আর একবার টপ সয়েল কেটে নিলে তা পূরণ হতে সময় লাগে অনেক বছর।

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোবারক হোসেন বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অনেক গভীর করে ফসলি জমির টপ সয়েল কাটার অভিযোগ আমি পেয়েছি। তদন্ত করে শীঘ্রই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সূত্র : দৈনিক ইত্তেফাক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!