ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | তুমব্রু-ঘুমধুম সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ কমলেও কাটেনি আতঙ্ক

তুমব্রু-ঘুমধুম সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ কমলেও কাটেনি আতঙ্ক

নিউজ ডেক্স: মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যে ব্যাপক সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। তবে, সীমান্তের বান্দরবান এলাকায় গুলির শব্দ কমে এসেছে। দুদিন ধরে নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু-ঘুমধুম সীমান্ত শান্ত থাকায় আতঙ্ক কমেছে স্থানীয়দের মধ্যে। ফলে ঘরে ফিরেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা লোকজন। যদিও বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঘুমধুম মধ্যমপাড়া এলাকা থেকে অবিস্ফোরিত অবস্থায় একটি মর্টার শেল উদ্ধার করেছে বিজিবি।

ঘুমধুম সীমান্ত গোলাগুলির শব্দ কমে এলেও থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের রহমতেরবিল সীমান্তে।

অন্যদিকে বান্দরবানের ঘুমধুমে আশ্রয় নেওয়া ১০১ জন বিজিপি সদস্যকে টেকনাফের হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। বিকেলে ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাদের হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে।

এদিকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষে অনেক অপরাধী পালিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এ অবস্থায় সীমান্ত এবং ক্যাম্প উভয় এলাকায় আতঙ্ক বেড়েছে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের বাসিন্দাদের মনে।

থাইংখালীর স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল জলিল বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে গুলির বিকট শব্দে ঘুমাতে পারিনি। এখন থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। ভয়ে থাকি কখন জানি বাড়ির উঠানে গোলা এসে পড়ে।’

খলিলুর রহমান নামের আরেকজন বলেন, গতরাতে আমি যখন নামাজ পড়ছিলাম তখন গুলির বিকট শব্দ শুনতে পাই। আতঙ্ক কাটছে না।

স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে। মাঝে মধ্যে কয়েকটি গুলির শব্দ শোনা গেলেও ভারী গোলাবর্ষণের আওয়াজ ছিল না। কিন্তু বুধবার রাতে আবারও গুলির শব্দে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

পালংখালীর রহমতেরবিল এলাকার গিয়াস উদ্দিন (৬৫) বলেন, ‘২৪ ঘণ্টার বেশি সময় মানুষ স্বস্তিতে ছিল। রাতে গুলির শব্দে আবারও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এসময় কেউ কেউ ঘর থেকে বের হয়ে এদিক ওদিক যেতে থাকেন। তবে রাত ২টার পর আর কোনো গোলযোগের খবর আসেনি।’

এদিকে বুধবার রাতের গোলাগুলি আরাকান আর্মির সঙ্গে বিজিপির হয়নি নলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, সীমান্তের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) ও মংডুর সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী নবী হোছাইনের আরাকান রোহিঙ্গা আর্মির (এআরএ) মধ্যে হয়েছে। আরাকান আর্মির পক্ষে নেওয়াকে কেন্দ্র করে আরএসও এবং এআরএ নতুন করে বিবাদে জড়িয়েছে।

পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘১০-১২টা গুলির শব্দ ও ২-৩টি মর্টার শেলের আওয়াজ শোনা গেছে। এতে নতুন করে কিছুটা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তবে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে সেদেশের বিজিপির সংঘর্ষ পালংখালী সীমান্ত অংশে থেমে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে।’

অন্যদিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে আর কেউ নেই বলে জানা গেছে। পরিস্থিত শান্ত হয়ে আসায় লোকজন আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে চলে গেছেন।

এরআগে মঙ্গলবার দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু-ঘুমধুম সীমান্তঘেঁষা ঘুমধুম ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের লোকজনকে সরিয়ে নেয় বান্দরবান জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন তুমব্রু-ঘুমধুম সীমান্ত পরিদর্শন শেষে সীমান্তঘেঁষা লোকজনকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন।

ঘুমধুমের ইউনিয়নের মেম্বার দিল মোহাম্মদ ভুট্টো বলেন, সীমান্ত এলাকার ২৭ পরিবারের ১৩৭ জন আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েছিলেন। সীমান্ত পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসায় তারা বুধবার চলে যান।

পশ্চিমকুলের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম তুহীন বলেন, লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে চায় না। তাই পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হওয়ায় সবাই নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন।

ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ঘুমধুম সীমান্ত এখন শান্ত। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক অনেকটা কমে এসেছে। -জাগো নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!