ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | জিয়াউর রহমান ভোটের রাজনীতি ধ্বংস করেছেন : প্রধানমন্ত্রী

জিয়াউর রহমান ভোটের রাজনীতি ধ্বংস করেছেন : প্রধানমন্ত্রী

231142KK_KB_1

নিউজ ডেক্স : আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা ২০২০ সাল থেকে ২০২১ সাল এ সময়টাকে আমরা মুজিববর্ষ ঘোষণা করেছি। আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদ্‌যাপন করব। এ জন্য কমিটি করেছি। আমি চাই, সারা বাংলাদেশে একেবারে ইউনিয়ন থেকে শুরু করে প্রতিটি এলাকায় এখন থেকে শুরু করে প্রস্তুতি নিতে হবে। জাতির পিতার এই জন্মদিন থেকেই আমাদের শুরু হবে জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের প্রস্তুতি।’

বঙ্গবন্ধুর ৯৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বঙ্গবন্ধুর বিষয়ে নানা তথ্য জানিয়ে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাঁর জন্মের পরপরই তাঁর নানা শেখ আব্দুল মজিদ কোলে তুলে নিয়ে নাম রেখেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। আর সঙ্গে সঙ্গে তাঁর মেয়ে সায়রা খাতুনকে বলেছিলেন, তোমার ছেলের নাম রেখে দিলাম, এমন এক নাম এই নামটা একদিন জগৎ জোড়া নাম হবে। অর্থাৎ বিশ্বব্যাপী এ নাম ছড়িয়ে যাবে। তাঁর নানার সেই কথাটি আজকে সারা বিশ্বে নামটা ছড়িয়ে পড়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাবা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দাদা-দাদির সম্পর্কের নানা বিষয় তুলে ধরে বলেন, ‘স্কুলজীবন থেকেই সাধারণ মানুষের কথা ভেবেছেন, সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করেছেন। আমার দাদা-দাদি সন্তানকে যে ভালোবাসা দিয়েছেন সেই ভালোবাসার কোনো তুলনা হয় না। বঙ্গবন্ধু এমন এক মা ও বাবা পেয়েছিলেন যাঁরা কোনো দিন তাঁর কোনো কাজে অনুযোগ করেননি, বরং প্রতিটি কাজে উৎসাহ দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যখন বড় হয়েছি তখনো দেখেছি, আমার বাবা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, তখনো তিনি যখন মা-বাবার কাছে গেছেন একেবারে ছোট শিশু খোকা হয়ে গেছেন। মায়ের কোলে শুয়ে পড়া, মাকে আদর করা, আমার দাদি ওই বয়সেও আমার বাবাকে ভাত মাখিয়ে মুখে তুলে দিতেন। আমার বাবা সেটা খেতেন, আমরা হাসতাম, ঠাট্টা করতাম, এটা ঠিক। এই যে এত গভীর ভালোবাসা, যখন যেটা তিনি করতে চেয়েছেন কোনো দিন বাধা দেননি।’

বাংলাদেশে ভোটের রাজনীতি ধ্বংসের পেছনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে দায়ী করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জিয়াউর রহমান এ দেশে ভোটের রাজনীতিটাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করল। তার হ্যাঁ-না ভোট, তার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, সেনাপ্রধান আবার রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে ঘোষণা দিয়ে সে অবস্থায় নির্বাচন করার অর্থ হলো, একদিকে সেনা আইন ভঙ্গ করা, সেনাবাহিনীর রুলস, রেগুলেশন ভঙ্গ করা অন্যদিকে সংবিধান লঙ্ঘন করা। এই যে একটা অনিয়মের যাত্রা শুরু—এই প্রক্রিয়াই চলতে থাকল বাংলাদেশে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিছু লোক খুব বাহাবা দিল। জিয়া বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছে। যদি সত্যিই বহুদলীয় গণতন্ত্র হয় তবে ক্ষমতায় থেকে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে সে যে একটি দল গঠন করল…আর সেই দল সৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে, যে দল ক্ষমতায় থেকে ক্যান্টনমেন্টে বসে সৃষ্ট সেই দল হাঁটতে শিখল না চলতে শিখল না দুই-তৃতীয়াংশ মেজরিটি পেয়ে গেল। এই দুই-তৃতীয়াংশ মেজরিটি পাওয়ার অর্থ হলো জিয়াউর রহমান চেয়েছিল—সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতায় এসেছে তাই সংবিধান সংশোধন করে অবৈধ ক্ষমতায় আসার বৈধতা পাওয়া।…কাজেই অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধ করার আকাঙ্ক্ষায় এই যে নির্বাচনটাকে ধ্বংস করা, জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলার যাত্রা শুরু।’

স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তুলে দেশটাকে যখন তিনি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন একটি অর্থনৈতিক মুক্তির দিকে। তিনি যখন দেখেছেন, বারবার ষড়যন্ত্র হচ্ছে, এই ষড়যন্ত্র করে দুর্ভিক্ষ ঘটানো হলো, নানাভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করে দিয়ে যখন একের পর এক নানা ধরনের সন্ত্রাসী কাজ জঙ্গিবাদ নানা কিছু সৃষ্টির চেষ্টা করা হলো তখন তিনি জাতীয় ঐক্যের ডাক দিলেন। সমস্ত জাতিকে তিনি ঐক্যবদ্ধ করে তিনি বললেন, আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করাটাই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। তাই দল-মত-নির্বিশেষে সবাইকে একসঙ্গে ডেকে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে তিনি নিয়ে আসলেন যেন অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের কাজ করতে পারেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে নির্বাচন নিয়ে অনেক কথা ওঠে। বিরোধী দল আমাদের বাকশাল বাকশাল বলে গালি দেয়। কিন্তু আজকে তারা যদি এটা চিন্তা করে, সেই দিন তিনি যে পদক্ষেপটা নিয়েছিলেন, তিনি বলেছিলেন, একটা বিপ্লবের পর যেকোনো দেশের সমাজে একটা বিবর্তন দেখা দেয়। সেই বিবর্তনের ফলে একটি অংশ ধনীক শ্রেণিতে পরিণত হয়। আবার অনেক ভালো উচ্চবিত্ত মানুষ অনেক সময় তাদের সেই ধনসম্পদ ধরে রাখতে পারে না। কাজেই এ সময়ে একটি গণতান্ত্রিক ধারাকে শক্তিশালী করা, মানুষের যে ভোটের অধিকার সেই ভোটের অধিকারকে একান্তভাবে নিশ্চিত করা প্রয়োজন, কারণ পাকিস্তান নামের রাষ্ট্রে গণতান্ত্রিক ধারা ছিল না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সে জন্য তিনি জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে নির্বাচনের একটি পদ্ধতি সৃষ্টি করেছিলেন যে সেখানে কেউ অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে পারবে না। ব্যক্তিগতভাবে কোনো প্রচার না। সরকারিভাবে যে কয়জন প্রার্থী হবে প্রত্যেক প্রার্থীর নাম একটা পোস্টারে দিয়ে সরকারের পক্ষে থেকে প্রচার করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!