Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার ঘোষণা

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার ঘোষণা

12-2 (1)

নিউজ ডেক্স : জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম। এক সঙ্গে কাজ করে চট্টগ্রামের সবক’টি আসন দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে চান তারা। নগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত এক সভায় এ ঘোষণা দেন তারা। গতকাল সকালে নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় নগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

নাছির–ছালাম শুধু দুই সেবা সংস্থার প্রধান নন। একজন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং অন্যজন কোষাধ্যক্ষ। একই দলের দায়িত্বশীল পদে থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে এই দুই নেতার মধ্যে ‘দূরত’্ব ছিল অনেকটা প্রকাশ্যে। তবে গতকাল এ দুই নেতাসহ মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা একসঙ্গে বসে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন।

সিটি মেয়রের বক্তব্য :

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘মহানগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ বর্ধিত সভায় আলোচনা হয়েছিল, কিভাবে আমরা নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে শক্তিশালী করতে পারি। সেই সভায় আলোচনা হয়েছে, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নগরীতে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করেছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবার মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ। স্বাভাবিকভাবেই ওই কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় উনারও উপস্থিত থাকার কথা ছিল। কাজ থাকায় তিনি উপস্থিত হতে পারেন নি। সেখান থেকে আমাদের সহ–সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন সিডিএ চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন এবং সেদিনের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতেই আজকে আমরা বসেছি।

মেয়র বলেন, নগরীতে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হচ্ছে। সেখানে সমন্বয়ের একটি বিষয় থাকে। আবার এসব উন্নয়নের সুফল পাচ্ছেন এই নগরীতে বসবাসকারীরা। যাদের একটি বড় অংশ চট্টগ্রাম মহানগরীর নির্বাচনী আসনের ভোটার। বা আশেপাশের এলাকার ভোটার। যে উন্নয়ন হচ্ছে, সেগুলোর সুফল নগরবাসী পাচ্ছেন বা পাবেন। এসব প্রকল্প নিয়ে কোন সময় বিতর্ক হয়েছে বা সমালোচনা হয়েছে। সামনে নির্বাচন, আমাদের যারা প্রতিপক্ষ আছেন তারা আমাদের ছোটখাট কিছু বিষয় নিয়ে বা চলমান প্রকল্প নিয়ে সম্মানিত ভোটারদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন। যেহেতু আমি বা সিডিএ চেয়ারম্যান নগর আওয়ামী লীগের দায়িত্বে আছি। এ ধরনের বিভ্রান্তি অতীতেও তারা করেছে। তাই তারা যেন এ সুযোগটি না পায়। সেটাই হবে আমাদের চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের আলোচনার বিষয় এবং সেকারণে আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছি। মেয়র বলেন, অনেক সময় বুঝে, আবার অনেক সময় না বুঝে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। এ ধরনের সুযোগ যেন কেউ না পায়। বিশেষ করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা। তাই এখন থেকেই সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে বিষয়টাকে প্রাধান্য দিচ্ছি। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করবো এবং সে ধরনের একটি পরিকল্পনা থেকেই আজকে আমরা বসছি। এটাকে অন্যভাবে দেখার কোন সুযোগ নেই।

তিনি আরো বলেন, ‘সমন্বয়হীনতার কারণে জনদুর্ভোগ হচ্ছে এই বক্তব্য সঠিক নয়। তবে জনদুর্ভোগ হচ্ছে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। আমি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র। আবার আমি মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। সিডিএ চেয়ারম্যান ছালাম সাহেব মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ। সিডিএ এই শহরে অনেক মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। আমরাও সিটি করপোরেশনের যতটুকু দায়িত্ব আছে তার আলোকে নগরবাসীকে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। এসময় তিনি বলেন, কেউ কেউ ধারণা করতে পারেন, মেয়র এবং সিডিএ চেয়ারম্যানের কর্মকাণ্ড যদি প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়, কান টানলে মাথা আসে, তাহলে সরকারকেও প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে। সামনে নির্বাচন। সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা কোন কোন মহলের থাকতে পারে।

সিটি মেয়র বলেন, আমরা (সিডিএ–চসিক) আলাদা আলাদা মন্ত্রণালয়ের অধীন। নির্দিষ্ট কাঠামোর মধ্যে আমরা দায়িত্ব পালন করছি। স্বাভাবিকভাবে আমাদের দায়বদ্ধতা থাকে মন্ত্রণালয় যেভাবে চায় সেভাবে করা। যার কারণে অনেক সময় সমন্বয়হীনতা হিসেবে চিহ্নিত করি। অনেকে হয়তো গ্রুপিং হিসেবে চিহ্নিত করে। যেটার কোনটাই সঠিক না। যেহেতু আমাদের আলাদা দায়িত্ব, প্রকল্প। বাস্তবায়নেরও আলাদা প্রক্রিয়া আছে ।

আ জ ম নাছির বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীর সব ক’টি আসন যেন প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিয়ে সরকার পুনর্গঠন করতে পারি সেটাই হবে আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যে মহানগর আওয়ামী লীগ কাজ করে চলছে এবং আগামীতে আরো ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের কার্যক্রমকে বেগবান করবো। এজন্য আমরা ইতোমধ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি এবং সেভাবেই কাজ শুরু করেছি। তিনি বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। চট্টগ্রামের প্রতিটা আসন প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে হবে।

আ জ ম নাছির উদ্দীন আরো বলেন, ‘সামনে নির্বাচন। একটা কঠিন পরীক্ষা। কারণ, ২০০৮ সালে সরকার গঠনের পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালের মানবতা বিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। সরকার গঠন করে উনি ওনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছেন। এই মানবতা বিরোধী অপরাধীরা ৭১ সালের পরাজয়ের শোধ নিতে ৭৫ সালে নিষ্ঠুরভাবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিলেন। এরাই এখন আবার ষড়যন্ত্র করছে। তাদের সুযোগ দেয়া যাবে না।

মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল পুনরুদ্ধার করতে হবে। আরএস অনুযায়ী খুঁজতে গেলে দেখা যাবে, সেখানে ঘর উঠে গেছে। এখন এগুলো ভাঙা কঠিন। উন্নত দেশে এসব চ্যালেঞ্জ নেই। সেখানে শহর গড়ে তোলার পর মানুষ আসে। তিনি বলেন, জলাবদ্ধতার জন্য জনগণও দায়ী। খালে ময়লা ফেলে খাল সংকূচিত করে ফেলেছে।

সিডিএ চেয়ারম্যান যা বললেন :

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, ‘পরিষ্কার একটা বার্তা দিতে আজকে এখানে এসেছি। সেটা হচ্ছে– আমরা সদা সর্বদা ঐক্যবদ্ধভাবে যে কোন ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় প্রস্তুত। এখানে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই।’ তিনি বলেন, ‘সিডিএ চেয়ারম্যান হওয়ার পিছনে আমার একটা মাত্র ‘কোয়ালিফিকেশন’ (যোগ্যতা) কাজ করেছে। সেটা হচ্ছে, আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী। আমি ইন্টারভিউ দিয়ে, পরীক্ষায় পাস করে, বিসিএস ক্যাডার হয়ে সিডিএ চেয়ারম্যান হইনি। এখন একজন রাজনৈতিক কর্মীর দায়িত্ব–কর্তব্য কি সেটা মনেপ্রাণে অনুধাবন করতে হবে। সেটা আমি করছি।’

এসময় তিনি বলেন, আমি সিডিএ চেয়ারম্যান হওয়ার আগেই আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ‘চট্টগ্রামের যাবতীয় উন্নয়নের ভার উনি নিজ হাতে নিয়েছেন।’ কারো অনুরোধে নয়, স্ব–উদ্যোগে এ ঘোষণা দেন তিনি।’ আমরা যখন আমার নেত্রীর সেই ওয়াদা পূরণের দায়িত্ব পেলাম তখন চট্টগ্রামের মানুষের আকাঙ্খা কি সেটা অনুধাবনের চেষ্টা করলাম। অনুধাবন করতে গিয়ে দেখলাম,চট্টগ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের আকাঙ্খা হচ্ছে, জলাবদ্ধতামুক্ত যানজটমুক্ত পরিবেশবান্ধব বিশ্বমানের পর্যটন নগরী এবং বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম। এসময় তিনি বলেন, চট্টগ্রামের মানুষের আকাঙ্খা অনুধাবন করে ২০০৯ সাল থেকে কাজ শুরু করেছি। সিডিএ চেয়ারম্যান নগরবাসীর প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেন, ‘যে ওয়াদা আমরা করেছিলাম তার কোনটা পূরণ করিনি? কোন ওয়াদাটা পূরণ করার জন্য চেষ্টা করিনি? চ্যালেঞ্জ দিতে চাই, চট্টগ্রামের মানুষের কাছে। কোন কোন ওয়াদা আমরা পূরণ করিনি। এটা জানার জন্য আমি পাড়া–মহল্লায় গিয়েছি। কেউ কিছু বলতে পারে নি, ‘এই কাজটা আমরা করতে পারি নি।’ আমরা প্রমাণ করেছি, আমাদের সরকার যেটা বলে সেটা করে। আমরা জনকল্যাণের জন্য কাজ করি এবং জনকল্যাণ ছাড়া আমাদের কোন এজেন্ডা নাই।’

আবদুচ ছালাম আরো বলেন, ‘পুরো শহর ভেঙ্গে তো নতুন শহর গড়ার সুযোগ নেই। তাই কাজ করতে গিয়ে জনগণের কিছু ভোগান্তি হয়। তবে আমাদের চেষ্টা আছে জনগণের দুর্ভোগ কমানোর। কাজও করছি, মানুষের কষ্ট কিভাবে লাঘব করা যায় সেই চেষ্টাও করছি। এসময় তিনি বলেন, উন্নয়ন কঠিন কাজ। আজ যে কাজ হচ্ছে সেটা ৫০ বছর আগে হওয়ার কথা, কিন্তু কঠিন বলে ভয়ে কেউ হাত দেয় নি। আমরা কঠিনকে ভয় পাই নি। যত কঠিন হোক, আমরা ঝুঁকি নিয়েছি। সফল হয়েছি কি না চট্টগ্রামের মানুষ বলবে। তিনি বলেন, শুধু সিডিএ’র মাধ্যমে ২০ হাজার কোটি টাকার কাজ হচ্ছে। ওয়াসা, সিটি কর্পোরেশন, বন্দরসহ বিভিন্ন সংস্থা মিলিয়ে এবং টানেলসহ শুধু মহানগরীতে ৫০ হাজার কোটি টাকার কাজ চলমান আছে। এটা কোন জোকস না, এটাই বাস্তবতা।’ জনগণের জনই এসব কাজ করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের কমিটমেন্ট আছে। কারণ আমরা জনগণের সাহায্য ছাড়া, জনগণের জনগণের সমর্থন ছাড়া,জনগণের ভোট ছাড়া অন্য কিছু চিনি না। অন্যপথে আমরা যেতে পারি না। আমরা একটি মাত্র পথ চিনি, সেটা হচ্ছে জনগণ। জনগণের আশা–আকাঙ্খা পূরণ করে জনগণের সমর্থন আদায় করা ছাড়া অন্যপথে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যায়নি।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান, চট্টগ্রামের উন্নয়ন দৃশ্যমান।’ এটা অস্বীকার করার সাধ্য কারো নেই। চট্টগ্রামের মানুষ এত উন্নয়ন জীবনে দেখেনি। তাই তারা ভীষণ খুশি। তারা (জনগণ) বলছে, গত ৫০ বছরে এমন উন্নয়ন তারা চোখে দেখেনি। ৪১ ওয়ার্ডের এমন কোন জায়গা নেই, যেখানে উন্নয়নের ছোঁয়া পড়েনি। প্রাথমিক কাজগুলো শেষ হয়েছে, বড় কাজগুলো শুরু হয়েছে। আমরা প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করি না, আমরা বাস্তবায়নে বিশ্বাস করি। র‌্যাডিসনের উদ্বোধনের পরে একদিনে চট্টগ্রাম আপগ্রেড হয়ে গেছে। টানেলের কারণে পুরো বাংলাদেশ একদিনে আপগ্রেড হয়ে যাবে।

সিডিএ চেয়ারম্যান বলেন, আমরা সবাই জনগণের সাথে সম্পৃক্ত, আমরা সহযোদ্ধা। কোথায় কোথায় জনগণ কষ্ট পাচ্ছে , এই কষ্ট আমরা লাঘব করতে পারি কি না এবং লাঘবের জন্য কি কি উদ্যোগ গ্রহণ করলে জনগণ খুশি হবে , জনগণের কষ্ট একটু কমবে সেটার জন্যই আজকে বসেছি।’ উন্নয়নে ভোগান্তিকে ‘প্রসবকালীন বেদনা বলা হয়। কিন্তু ঘরে বসে থাকলে হবে না। আমাদের চেষ্টা করতে হবে, সেই বেদনা কিভাবে কমানো যায়।’ তিনি বলেন, এমন প্রকল্প নাই, যেটা আমার নলেজে নাই। ‘এভরিথিং’ ঠোটস্থ। কারণ, নেত্রী আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে চট্টগ্রামের উন্নয়নের।

জলাবদ্ধতা নিরসনে গৃহীত প্রকল্প সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘জলাবদ্ধতা বিশাল সমস্যা। এই সমস্য নিরসনে ‘লেস দ্যান ওয়ান পার্সেন্ট কাজ আমরা শুরু করেছি মাত্র। এটা কোন কাজই না। তারপরও জনগণ বলছে, এই কাজ তারা অতীতে চোখে দেখে নাই। এটাই শেখ হাসিনার অর্জন। আমরা কর্মী। আমাদের দায়িত্ব দিয়েছেন, আমরা পালন করছি। পাহারা দিয়ে দায়িত্ব পালন করা আমি বিশ্বাস করি না। আমি মনে করি, আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে আমি পালন করবো এবং যা অর্জন হবে সেটা আমার দলের ও সরকারের।

তিনি বলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের কর্মী না হলে আমার সিডিএ চেয়ারম্যান হওয়ার সুযোগ ছিল না। অস্বীকার করার সুযোগ আছে?সেই মহানগর আওয়ামী লীগের সাথে আমার দূরত্ব হবে, এটা কল্পনার বাইরে। ‘নো চান্স’। আমি মুনাফিক হতে পারবো না। হলে(দূরত্ব) বিশ্বাসঘাতকে হবে আমার নাম। এটা আমি করতে পারি না। মহানগর আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হওয়ার কারণে আমি সিডিএ চেয়ারম্যান। ‘নো আদার কোয়ালিফিকেশন। অনলি দ্যা কোয়ালিফিকেশন, আমি মহানগর আওয়ামী লীগের একজন কর্মী। এ কারণে আজকে আমার এ সুযোগ।’

তিনি বলেন, আমরা আজকে বসেছি, ষড়যন্ত্রকারীদের কোন অবস্থাতেই সুযোগ দিব না। যারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, বিভিন্ন রকমের প্রপাগাণ্ডা করে, মানুষকে বিভ্রান্ত করে তাদের বার্তা দেয়ার জন্য এখানে বসেছি। তাদের কোন চান্স নাই। ‘উই আর স্ট্রংলি ইউনাইটেড’।

তিনি বলেন, ‘সমস্ত উন্নয়নকে আমরা এক জায়গায় নিয়ে আসব। সেটার চুলচেরা বিশ্লেষণ করবো। সেটা সিডিএ, রেলওয়ে, ওয়াসা,বন্দর, কর্পোরেশন, এলজিইডি, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিদ্যুৎ, গ্যাস হলেও। আমরা যারা রাজনৈতিক নেতা–কর্মী, আমাদের কাজ হচ্ছে,উন্নয়নের সমস্ত তথ্য এক জায়গায় নিয়ে আসা। এক জায়গায় নিয়ে এসে আমরা চুলচেরা বিশ্লেষণ করবো। সেই বিশ্লেষণে আমাদের যদি কোন ভুল হয়ে থাকে আমরা আমরা অভিযোগ করবো। কাউকে দোষারোপ, কাউকে চার্জ, কাউকে অপমান করার জন্য নয় এবং ভয় দেখানোর জন্য নয়। এতগুলো উন্নয়ন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের বাস্কেটে থাকবে না? এর চেয়ে লজ্জ্বার বিষয় আর কি হতে পারে। সমস্ত কিছু আমাদের বাস্কেটে নিয়ে আসতে হবে। বাস্কেটে এনে বসতে হবে। কোথাও গলদ আছে কি না দেখতে হবে। আমাদের দায়িত্ব সরকারকে সাহায্য করা। যাতে জনগণের কষ্ট লাঘব হয়।’ এসময় তিনি বলেন, ‘আজকে আমাদের শুরু। সময় কম। এই কম সময়ের মধ্যে ক্রাশ প্রোগ্রাম করে সমস্ত উন্নযনকে একটি বাস্কেটে এনে বিশ্লেষণ করতে হবে। ওই বিশ্লেষণ থেকে জনগণকে বার্তা দেয়া শুরু করবো। এই সরকারের অর্জন কি।

সভাপতির হুঁশিয়ারি :

গতকালকের সভায় মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী নাছির–ছালামের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তাদের জন্য জনগণ যাতে কষ্ট না পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে বলেন। তিনি বলেন, আমরা জনগণের সরকার। কাজ ছাড়া অন্য কিছুকে বিশ্বাস করি না। নগরে মেয়র ও সিডিএ চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। উন্নয়ন করতে গিয়ে জনগণের যদি কষ্ট হয়, সেক্ষেত্রে আপনাদের দায়বদ্ধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। আপনাদের হুঁশিয়ার করছি, জনগণের উন্নয়নে জনগণ যেন কষ্ট না পায়। আপনাদের দু‘জনকে হাত ও পায়ে ধরে বলছি, যদি কোনো সমন্বয়ের অভাব থাকে আমাদের বলুন। যে কোনো সহযোগিতা করতে রাজি আছি। তবে জনগণের যাতে কষ্ট না হয় সে বিষয়টি আপনাদের দেখতে হবে।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ–সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বলেন, সিটি কর্পোরেশন ও সিডিএ ছাড়া অন্য সংস্থাও কাজ করছে। তাদের বিষয়গুলো জনগণকে জানাতে হবে। তিনি মেয়রকে উন্নয়ন কাজের জন্য সাময়িক বন্ধ থাকা আগ্রাবাদ এঙেস রোডের এক পাশ সাধারণ জনগণের চলাচলের সুবিধার্থে খুলে দেয়ার আহবান জানান।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ–সভাপতি আলতাফ হোসেন বাচ্চু এঙেস রোড উঁচু করণের জন্য এলাকার জলাবদ্ধতা নিত্য সমস্যা বলে উল্লেখ করেন। তিনি সংশ্লিষ্ট এলাকার জলবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ সিস্টেম ব্যবস্থা উন্নয়নের ব্যাপারে মত প্রকাশ করেছেন।

গতকালকের সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ–সভাপতি সুনীল সরকার, যুগ্ম সম্পাদক আবদুল রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান, তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক চন্দন ধর, দপ্তর সম্পাদক হাসান মাহমুদ চৌধুরী শমসের, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক দিদারুল আলম, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আবদুল আহাদ, চসিকের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্ণেল মহিউদ্দিন আহমেদ, চউকের প্রধান প্রকৌশলী জসীম উদ্দীন ও জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী কাদের নেওয়াজ।

সূত্র : দৈনিক আজাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!